শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট

‘বাঁ হাতের খেল’-বাংলায় বহুল প্রচলিত এই প্রবাদ পাকিস্তান ক্রিকেট দলের না জানাটাই স্বাভাবিক। তা না-ই জানুক, এই প্রবাদের বাস্তবতা গত দুই বছরে পাকিস্তান টের পেয়েছে বেশ ভালোভাবেই। দুবাই থেকে মেলবোর্ন, মেলবোর্ন থেকে প্রেমাদাসা-বাঁহাতি ব্যাটাররাই

‘ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটায়’—বহু ক্লিশে এ কথা শোনেননি এমন মানুষ খুবই কম। কথাটা আবারও বলতে হচ্ছে এশিয়া কাপ প্রসঙ্গে। ২০১৮ থেকে ২০২৩—গত পাঁচ বছরে তিন এশিয়া কাপেই ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। ফিকশ্চারই যে

শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান-কলম্বোর প্রেমাদাসায় দুটো দলের কাছেই গতকাল সমীকরণ ছিল খুবই সহজ। যে জিতবে, সেই রোববার ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে। সেই সহজ সমীকরণের ম্যাচটাই না হয়েছে কত জটিল। বৃষ্টির বাধা উপেক্ষা করে প্রতি পরতে পরতে

রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্নায়ুর রোমাঞ্চকর পরীক্ষা। অভিষেক ওয়ানডেতে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা যেন পাকিস্তানের জামান খানকেই দিতে হলো। শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচটা জিইয়ে রেখেছিলেন এই পেসারই। কিন্তু ইনিংসের শেষ বলে স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে ২ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কা ১৩তম এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করলেন চরিত আসালাঙ্কা

আঁটসাঁট বোলিং আক্রমণে দ্রুত কয়েকটি উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে বেশ কিছুক্ষণ চাপেই রেখেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দাসুন শানাকাদের গলার কাঁটা হয়ে গেল মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের শতোর্ধ্ব রানের ষষ্ঠ জুটি। যার সৌজন্যে বাঁচা-মরার ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ৪২ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫২ রান সংগ্রহ করেছে পাকিস্তান।

বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হতে দেরি হওয়ায় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ প্রথম ধাপে কমেছিল ৫ ওভার। পাকিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসের ২৮ তম ওভারে আবার বৃষ্টি হলে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। বৃষ্টি থেমে আবার খেলা শুরু হলো ৩ ওভারে কমে। অর্থাৎ ৪২ ওভারে হচ্ছে ম্যাচটি।

বৃষ্টির কারণে ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর শুরু হচ্ছে সুপার ফোরে অলিখিত সেমিফাইনাল হয়ে ওঠা পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি। আজ কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম।

এশিয়া কাপের সুপার ফোরে আজ শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মধ্যে যে দল জিতবে সে দলই ফাইনালে উঠবে। সে অর্থে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের ম্যাচটি অলিখিত সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

হুটহাট অঝোর বৃষ্টি—চলতি এশিয়া কাপে খুব পরিচিত দৃশ্য হয়ে উঠেছে। তাই অলিখিত সেমিফাইনালে একটি নয়, পাকিস্তান দলের সামনে দুটি প্রতিপক্ষ! আগামী রোববার ফাইনালে খেলতে হলে আজ শ্রীলঙ্কাকে হারানোর আগে বৃষ্টির বিপক্ষেও জিততে হবে বাবর আজমদের।

ওয়ানডেতে তাওহীদ হৃদয়ের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। ৫০ ছুঁই ছুঁই গড় নিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যর্থতার মতো তেমন একটা হাসেনি তাঁর ব্যাটও। এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স যেমনই হোক, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তাঁকে (হৃদয়) স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে বলেছেন।

চোখেমুখে এখনো কৈশোরের ছাপ কাটেনি দুনিথ ওয়াল্লালাগের। উইকেট পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কান স্পিনারের উচ্ছ্বসিত হাসিতেও পাওয়া যায় কৈশরিক অভিব্যক্তি। কিন্তু তাতে এই উদীয়মান তারকার কী আসে যায়! নিজের কাজটা যদি ঠিকঠাক মতো করতে পারেন তাহলে তো কোনো কথাই নেই

মুত্তিয়া মুরালিধরন গতকাল এসেছিলেন কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। মূলত তাঁর জীবনী নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘৮০০’-এর প্রচারণার উদ্দেশ্যেই ধারাভাষ্যকক্ষে আসা। নিজের কাজ শেষে স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় লঙ্কান কিংবদন্তি কিছুটা সময় দিলেন বাংলাদেশের চার সাংবাদিককে। সেখানে ছিলেন আজকের পত্রিকার রানা আব্বাস

‘হাইব্রিড মডেলের’ এশিয়া কাপ সন্দেহ নেই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) উর্বর মস্তিষ্কেরই ফসল। পাকিস্তানে গিয়ে ভারত খেলবে না বলে মহাদেশীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টটিকে বাতিল হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতেই বেছে নেওয়া হয়েছে ‘হাইব্রিড মডেল’।

রেকর্ডটা হয়তো ভাঙতই। তবে সেটা আরও কয়টা ম্যাচ টেনে নেওয়ার ইচ্ছা নিশ্চয়ই ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু তা আর হলো না। আজ ভারতের কাছে হেরে টানা ১৩ ওয়ানডে জয়ের রেকর্ড থেমেছে স্বাগতিকদের। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ম্যাচটা ভারত জিতেছে ৪১ রানে।

এশিয়া কাপে প্রথমবার ১০ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের পেস বোলাররা। চলতি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে এই রেকর্ড হয়েছিল শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ ও নাসিম শাহের সৌজন্যে। সুপার ফোরে আজ ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেট নিলেন শ্রীলঙ্কার স্পিন বোলাররা। 

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে তুমুল আগ্রহ থাকে সবারই। বৃষ্টির বাধা পড়ুক বা খেলা গড়াক রিজার্ভ ডেতে, এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে আসেন অসংখ্য দর্শক। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে ঘটে অনেক মজার ঘটনাও

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা উত্তাপ না ছড়াক, তবু একটা মানসিক চাপ তো ছিলই। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য একদিনও সময় মেলেনি। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলকে দেখে অবশ্য এটা বোঝার উপায় ছিল না।