মানুষ

তারাকান্দা উপজেলার কালনীকান্দা ও চাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে কালিয়ান নদী। ওই নদীর দাইবাড়ী ঘাটে বাঁশের সাঁকো পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এতে দুই পাড়ের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ করায় বৃষ্টির পানি চাপে সড়ক ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে ১০ গ্রামের মানুষের।

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে ভোলায় তলিয়ে গেছে কমপক্ষে ২০টি গ্রাম। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পানি বাড়ার ফলে শাহজাদপুর ও চৌহালীতে আবারও শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ধসে গেছে রাউতারা বাঁধসহ অন্তত ১৫টি বসতভিটা। এ ছাড়া ডুবে গেছে বিস্তীর্ণ জমি।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁর মান্দায় হু হু করে বাড়ছে আত্রাই নদের পানি। বেড়িবাঁধের পুরোনো তিনটি ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে নদের পারের মানুষের মধ্যে।

এবারের বন্যাটা বিরাট আকারে আসবে এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনেক আগে থেকে সতর্ক করেছিলাম, আমাদের সরকারের যারা তাদের সবাইকে আমি বলেছিলাম এবারের বন্যাটা কিন্তু বিরাট আকারে আসবে...

ফের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি, রামপাশা খাজাঞ্চি, দৌলতপুর ও অলংকারি, দশঘর ও সদর ইউনিয়ন। সাতটি ইউনিয়নের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। খাজাঞ্চি রেলওয়ে স্টেশন, হাটবাজার ও সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শিশুয়া-বাঘমারা সেতুর সংযোগ সড়ক দেবে যাওয়ায় ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সড়ক রক্ষায় স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এ কারণে প্রতি বছর সেতুর সংযোগ সড়ক দেবে যাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরশহরের মৌসুমি সিনেমা হল থেকে বাজার হয়ে ভূমি অফিস পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কে অসংখ্য খানাখন্দ । সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব খানাখন্দে পানি জমে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর সদরে পর্যাপ্ত নালার অভাবে একটি সড়কে প্রায়ই পানি জমে থাকে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষকে। সামান্য বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জেলার সব কটি উপজেলার গ্রামের প্রায় ঘরেই এখন হাঁটু বা গলাপানি। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের আটকপালিয়া বাজার থেকে একরামনগর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়ক যেতে সময় লাগত প্রায় এক ঘণ্টা। সংস্কারের অভাবে উপজেলার পাঁচটি সড়কের একই অবস্থা ছিল। তবে সম্প্রতি এসব সড়কের উন্নয়নকাজ বেশিরভাগ সম্পন্ন হওয়ায় দ্রুত গন্তব্যে যেতে পারছেন চলাচলকারীরা। এতে সুফল পাচ্ছেন উপজেলার লাখো মানুষ।

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো অলিগলিতে গড়ে উঠেছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান। লাইসেন্সবিহীন এসব দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ। যেকোনো সময় বিস্ফোরণে ঘটতে পারে প্রাণহানি। এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি দেখা যাচ্ছে না।

গত বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ। টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ পৌরশহরসহ ছয় উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম। এতে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বেহাল হয়ে পড়েছে তিনটি সড়ক। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিক, স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ লাখো মানুষ। স্থানীয় সরকার বিভাগের গাফিলতির কারণেই সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে নগরীতে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। যানজটে দীর্ঘ সময় রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। একদিকে তীব্র যানজট আরেকদিকে অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষেরা।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের যে মানুষগুলো আমাদের আশপাশে বসবাস করে, তারাই আমাদের প্রতিবেশী। সুখে-দুঃখে, যেকোনো প্রয়োজনে প্রতিবেশীরাই সবার আগে এগিয়ে আসে। তাই সহমর্মিতা পাওয়ার অধিকারও তাদেরই বেশি। ইসলাম প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষায় গুরুত্বারোপ করেছে।