Ajker Patrika

ফটো ফিল্টারে লাগাম টানল নরওয়ে

অনলাইন ডেস্ক
ফটো ফিল্টারে লাগাম টানল নরওয়ে

ফটো এডিটিং অ্যাপের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই নিজেকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করেন। এসব অ্যাপ ব্যবহার করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ–প্রত্যঙ্গের আকার আকৃতি পরিবর্তন করে দেখান। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করেন মেদহীন পেট, পুরো ঠোঁট, কোমল পেলব ত্বক বিশিষ্ট ছবি। এসব দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হন। সত্যি ভেবে নেন। বিশেষ করে কমবয়সীদের মধ্যে এই বিভ্রান্তি দেখা দেয়। তারাও এমন হতে চায়। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। কখনো ডায়েট কন্ট্রোল, কখনো বা ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক সার্জারির পথ বেছে নেয় তারা। বেশির ভাগই ভোগে মানসিক সমস্যায়। এমন নানাবিধ কারণে ‘ছবি সম্পাদনা আইন’ করল স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ নরওয়ে।

মূলত নরওয়ের বিপণন আইনের সংশোধনীতে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। দেশটির রাজা সম্মতি দিলেই এটির প্রয়োগ শুরু হবে। 

নরওয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এ ধরনের আইনের উদ্দেশ্য অনুকরণীয় ব্যক্তিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যেন সমাজে মানসিক চাপ ছড়িয়ে না পড়ে। 

আইনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা পরিচিত মুখ তাঁরা এমন অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রেডিট উল্লেখ করে দেবেন। অর্থাৎ ছবি সম্পাদনা করা হলে অবশ্যই সেটি লিখে দিতে হবে। 

তবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ স্বাগত জানিয়েছেন। অনেকে আবার এমন আইন–কানুন না করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে মানুষকে আরও সচেতন করে তোলাই বেশি কার্যকর কৌশল হতে পারে বলে মত দিয়েছেন। 

ইনস্টাগ্রাম তারকা মেডেলিন পেডারসেন মনে করেন, আইনটি যৌক্তিক। অনেকেই এসব সম্পাদনা করা ছবি দেখে সত্যি মনে করে এবং নিজের মুখ ও শরীর নিয়ে হতাশায় ভোগে। আমিও আগে ইনস্টাগ্রামে এমন সম্পাদনা করা ছবি দেখে শরীর নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগতাম। আমি বুঝতেই পারতাম না এগুলো সম্পাদনা করা ছবি। তাই আমি মনে করি, এমন ছবিতে ‘এডিটেড ফটো’ অথবা কোন অ্যাপ দিয়ে এডিট করা সেটি উল্লেখ থাকা জরুরি। এই আইনের প্রয়োজন আছে। 

মেডেলিন পেডারসেন বলেন, আমিও যে ছবিতে একদম সম্পাদনা করি না এমন নয়। আলো, রং, মসৃণতা বৃদ্ধির জন্য সম্পাদনা করি, যেন ছবিটি ভালো দেখায়। তবে এমন কোনো অ্যাপ ব্যবহার করি না যা মুখ ও শরীরের আকৃতি পরিবর্তন করে দেয়। 

এই আইনের ফলে নরওয়ের তারকারা ছবি সম্পাদনার অ্যাপ খুবই কম ব্যবহার করবেন। কেননা তাঁরা যে ছবিটি সম্পাদনা করেছেন তা সাধারণত বলতে চাইবেন না। কিছু লাইকের জন্য এমনটি করা ঠিকও নয় বলে মনে করেন মেডেলিন। 

তবে নরওয়ের আরেক তারকা ইরিন ক্রিশ্চিয়েনস বলেন, নতুন এই আইনটি বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ নয়। সমস্যা সমাধানে এত সহজ পদক্ষেপ কাজে দেবে না। তিনি মনে করেন, ছবি সম্পাদনা ছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য আরও অনেক কারণ আছে। শুধু এটিকেই কারণ হিসেবে বলা ঠিক নয়। 

গত বছর যুক্তরাজ্যের এক জরিপে দেখা যায়, ১৮ বছরের কম বয়সীদের বেশির ভাগই সামাজিক মাধ্যমে সম্পাদনা করা ছবি দেখে অতিমাত্রায় প্রভাবিত হয়। মাত্র ৫ শতাংশ পাওয়া গেছে, যারা এসব ছবি দেখে প্রভাবিত হয় না।

ইরিন ক্রিশ্চিয়েনসের পরামর্শ, এসব আইন না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে আরও রুচিশীল হওয়া যায় সেই শিক্ষা দেওয়া উচিত। 
 
ব্রিটিশ সোশ্যাল মিডিয়া তারকা এম ক্লার্কসন অবশ্য আইনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। সপ্তাহে দুবার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি দেখেই নিজেকে তাঁদের সঙ্গে তুলনা করতাম। আর এখন তো কমবয়সীদের হাতে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বার উন্মুক্ত। তাঁরা দিনে ৫০-১০০ বার সম্পাদনা করা ছবি দেখছে। 

এই তারকা বলেন, নরওয়ের মতো যুক্তরাজ্যেরও উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। এগুলো মানসিক স্বাস্থ্য, দুশ্চিন্তা, অপরিকল্পিত ডায়েটিং এসবের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। 

এম ক্লার্কসন বলেন, আমরা কাউকে বলতে পারি না সম্পাদনা করা ছবি দেবেন না। এটা সম্ভব না। তবে এটা বলাই যায়, আপনারা যখন ছবি এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবেন তখন অবশ্যই সৎ থাকবেন। উল্লেখ করে দেবেন ছবিটি সম্পাদনা করা, যেন কেউ বিভ্রান্ত না হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চূড়ান্ত হচ্ছে সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, শিগগির ঘোষণা

প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ধরা পড়া সেই নেতাকে বহিষ্কার করল ছাত্রশিবির

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ফ্রিতে নৌকা না পেয়ে ভূমি অফিস সহকারীকে মারধর এসপির

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত