Ajker Patrika

মাইক্রোসফটে ১ কোটি রুপির চাকরি ছেড়ে সফল কৃষি স্টার্টআপ

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪, ১৩: ৫৫
মাইক্রোসফটে ১ কোটি রুপির চাকরি ছেড়ে সফল কৃষি স্টার্টআপ

ছয় বছর ধরে প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রোসফটের প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করছিলেন রুচিত গর্গ। বছরে ১ কোটি রুপি বেতন পেতেন তিনি। চাকরি আকর্ষণীয় হলেও এক সময় রুচিতকে একঘেয়েমি পেয়ে বসে। তখন তিনি উদ্যোক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে কৃষি স্টার্টআপ শুরু করেন গর্গ। হার্ভেস্টিং নামে প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ দূর করে ক্ষুদ্র কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করছেন তিনি। 

ভারতের লক্ষ্ণৌয়ের অধিবাসী রুচিত গর্গের চাকরি ছেড়ে স্টার্টআপটি শুরুর গল্প তুলে ধরেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে অর্থপূর্ণ কিছু করতে চাচ্ছিলেন রুচিত। এজন্য সর্বশেষ কর্মস্থল যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০১১ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ভারতে ফিরে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেন। মাইক্রোসফটে ছয় বছর ধরে কর্মজীবনের প্রথম তিন বছর হায়দরাবাদে এবং পরের তিন বছর ওয়াশিংটনের রেডমন্ড সদর দপ্তরে টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন। 

চাকরি ছাড়ারর বিষয়ে রুচিত গর্গ বলেন, ‘এই চাকরিতে আমার একঘেয়েমি লাগছিল; নিজেকে বেমানান মনে হচ্ছিল। আমি সব সময়ই ব্যবসা করতে চেয়েছিলাম।’ 

অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন গর্গ। তাঁর দাদা ছিলেন উত্তর প্রদেশের কৃষক। তার কাছে থেকে তিনি কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পান। কিন্তু সেই অনুপ্রেরণা বাস্তবে রূপ পেতে নানা ধরনের বই, বিশেষ করে হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ পড়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে মায়ের কর্মস্থল তাকে বড় সহায়তা দিয়েছে। তাঁর মা ছিলেন লক্ষ্ণৌ রেলওয়ের লাইব্রেরির কেরানি। সেই লাইব্রেরিতে বসে বসেই তিনি এসব পড়তেন। কারণ, বাবার মৃত্যুর পর আর্থিক সংকট ছিল, এতো বই কেনার সামর্থ্য ছিল না। 

তার কষ্ট ও পরিশ্রম বৃথা যায়নি। গর্গ এখন কৃষি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের একজন সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হয়েছেন। বিদেশেও তার নামডাক হয়েছে। ক্ষুদ্র কৃষকদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কথা বলতে ২০১৮ সালে গর্গকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের একটি কপি কেনার সামর্থ্য ছিল না তার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখলেও তা পূরণ হয়নি। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলেছে তিনি। অনেক সংগ্রামের পর পাওয়া জীবনের সাফল্য নিয়ে অনেক গর্বিত তিনি।

গর্গ বলেন, হার্ভেস্টিং প্ল্যাটফর্ম ক্ষুদ্র কৃষকদের উপার্জন বাড়াতে সহায়তা করে। এটিকে পরের প্রজন্মের আমুল (গুজরাট মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন নামে ভারতীয় বহুজাতিক সমবায় সমিতির সংক্ষিপ্ত রূপ) ভাবা যেতে পারে। কৃষকদের ফসল ফলানোর জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো সহায়তা দেয় এই প্ল্যাটফর্ম। সেই সঙ্গে তাদের উৎপাদিত পণ্য অনলাইন ও অফলাইনে বিক্রিতেও সাহায্য করে হার্ভেস্টিং। 

করপোরেট এক্সিকিউটিভ থেকে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার গর্গের এই যাত্রা সহনশীলতা ও সংকল্পের উদাহরণ হিসেবে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত