Ajker Patrika

ফেসবুকে নিয়োগ পেলেন আশফাক সালেহীন

খুবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ৪৯
ফেসবুকে নিয়োগ পেলেন আশফাক সালেহীন

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ‘পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সাবেক শিক্ষার্থী আশফাক সালেহীন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনের ২০০৮-০৯ সেশনের ছাত্র। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থী তাঁর চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

আশফাক জানান, তিনি ফেসবুকের প্রধান অফিস লন্ডনে পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড (এল–৪) রোলে অফার পেয়েছেন। আগামী ১ আগস্ট থেকে ফেসবুকের লন্ডন অফিসে চাকরি শুরু করবেন তিনি। 

ফেসবুকে চাকির পাওয়া প্রসঙ্গে আশফাক সালেহীন বলেন, ‘ক্যারিয়ারের একটা পর্যায়ে আমি উপলব্ধি করি, আমি যেরকম চাই আমার কাজের এক্সপোজার সেভাবে হচ্ছে না। সামাজিক অবস্থানগত দিক দিয়েও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে FAANG (ফেসবুক, আমাজন, অ্যাপল, নেটফ্লিক্স, গুগল) এ ঢোকা আমার জন্য অতি জরুরি। আমার লক্ষ্য ছিল—ফেসবুক, গুগল এবং আমাজন এই তিনটি কোম্পানির যে কোনো একটি থেকে অফার পাওয়া। কিন্তু আমার পথে বাধা ছিল আমার সিএসই’র একাডেমিক জ্ঞানের অভাব এবং কখনো কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং না করা। চাকরি করা অবস্থায় এইগুলো পড়াশোনা করে ঠিক করা সম্ভব ছিল না। তাই আমি আমার তৎকালীন চাকরি ছেড়ে দেই।’ 

আশফাক বলেন, ‘FAANG এর চাকরিগুলোতে প্রোগ্রামিং জ্ঞানকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইন্টারভিউতে আমাকে কিছু এলগরিদমিক সমস্যা সমাধান করতে দেওয়া হয়। মূলত সেগুলো সঠিকভাবে সমাধান করার ওপরই ইন্টারভিউয়ের ভাগ্য নির্ধারণ করে। আমি দীর্ঘ দেড় বছর ডেটা স্ট্রাকচার অ্যান্ড এলগরিদম, কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং এবং কম্পিউটার সায়েন্সের ফান্ডামেন্টাল বিষয়গুলো নিয়ে একান্তে পড়াশোনা করি। পড়াশোনার মাঝে ৩ / ৪ বার চেষ্টা চালিয়েছি এবং প্রত্যাখ্যাত হয়েছি।’ 

আশফাক আরও বলেন, ‘প্রথমবার ফেসবুক থেকে, তারপর ২ মাসের ব্যবধানে আমাজনে ২ বার, তারপর গুগল থেকে একবার এবং শেষে আমাজন থেকে আরও একবার প্রত্যাখ্যান হয়েছি। বারবার প্রত্যাখ্যান হওয়ার পরও আমি হাল ছেড়ে দিইনি। কিছুদিন আগে আমি আবার ফেসবুক এবং আমাজনে এপ্লাই করি। এইবার সব ইন্টারভিউ অসাধারণ হয় এবং ফেসবুক থেকে আমি খুব তাড়াতাড়ি অভিনন্দন ইমেইল পেয়ে যাই। আগামী ১ আগস্ট থেকে আমি ফেসবুকের লন্ডন অফিসে পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার, অ্যান্ড্রয়েড রোলে লেভেল ৪ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। এই সাফল্যের পেছনে আমার স্ত্রীর অবদান অনস্বীকার্য। কারণ তাঁর সমর্থন এবং অনুপ্রেরণা না থাকলে দীর্ঘ সময় লেগে থেকে আমার পক্ষে এই অর্জন কখনোই সম্ভব ছিল না।’ 

এমন সফলতার পর নিজের অনুভূতি জানতে চাইলে আশফাক বলেন, ‘আমার অনেক দিনের স্বপ্ন সত্যি হলো। আমার সাফল্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই খূব উৎফুল্ল এটা দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি আশা করি খুব তাড়াতাড়ি গুগল, ফেসবুক অথবা আমাজনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেধাবী তরুণ ঢুকতে পারবে।’ 

এদিকে, তাঁর এমন সফলতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ ইসমাত কাদির বলেন, ‘ছাত্রদের সাফল্য দেখলে আমাদেরও ভালো লাগে। নিজের ডিসিপ্লিনের ছাত্র সফলতা পেলে সেটা আরও বেশি আনন্দের। তাঁর এমন অর্জনে আমরাও আনন্দিত।’ 

উল্লেখ্য, আশফাক সালেহীন ২০১৩ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন থেকে স্নাতক শেষ করেন। এরপর অল্প কিছুদিন নেটওয়ার্কিং রিলেটেড চাকরি করার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং করার। দুই বছর আমেরিকাভিত্তিক কিছু ছোট কোম্পানির সঙ্গে ব্যাকএন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ফ্রীল্যানসিং করার পর তিনি থাইল্যান্ডের একটা কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত