Ajker Patrika

গিওর্গি হ্যাজি এখন ফুটবলার তৈরির কারিগর

ক্রীড়া ডেস্ক    
এখন বিশ্বমানের ফুটবলার তৈরি করছে গিওর্গি হ্যাজির ফুটবল একাডেমি। ছবি: এএফপি
এখন বিশ্বমানের ফুটবলার তৈরি করছে গিওর্গি হ্যাজির ফুটবল একাডেমি। ছবি: এএফপি

গিওর্গি হ্যাজির ফুটবল একাডেমিতে ঢুঁ মারলেই সহজেই নজর কাড়বে একটি দেয়ালচিত্র। এই দেয়ালচিত্র মনে করিয়ে দেয় ১৯৯৪ ফিফা বিশ্বকাপে রোমানিয়ার সেরা অর্জনের কথা। সেবার সবাইকে চমকে গিয়ে তারা জায়গা করে নিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে।

দলটির এই সাফল্যের মূলে ছিলেন যিনি, তিনি গিওর্গি হ্যাজি। সেই বিশ্বকাপে এতটাই তাঁর উদ্ভাসিত পারফরম্যান্স ছিল যে, সেই টুর্নামেন্টের পর হ্যাজি ‘কার্পাথিয়ান্সের ম্যারাডোনা’ হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছিলেন।

পেশাদার ফুটবল থেকে ২০০১ সালে সেই হ্যাজি অবসর নিয়েছেন। তারপর থেকেই তো ফিফা বিশ্বকাপের দর্শক হয়ে গেছে রোমানিয়া! ১৯৯৮ সালের পর একবারও আর বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি গিওর্গি হ্যাজির দেশ। তবে তিনি আবার বিশ্বকাপে খেলতে দেখতে চান রোমানিয়াকে। তিনি তো আর খেলতে পারবেন না, তবে দেশকে বিশ্বকাপে তুলতে পারে—এমন ফুটবলার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন হ্যাজি।

এই একাডেমিতে বর্তমানে ৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী দু শরও বেশি খুদে ফুটবলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই তরুণ ফুটবলারদের মধ্যেই বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নের বীজ বপন করে চলেছেন হ্যাজি। ২০০৯ সালে একাডেমিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরোরও বেশি ব্যয় করেছেন। এটি তৈরি হয়েছে তার নিজ শহর কনস্টান্টার কাছে, যা বুখারেস্ট থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত।

হ্যাজির দীর্ঘ পরিশ্রম এত দিনে ফল দিতে শুরু করেছে। এই একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া অনেক তরুণই ফুটবলার রোমানিয়ার শীর্ষ পেশাদার লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছে। তাদের অনেকের হাতেই আবার উঠেছে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী। এই একাডেমির ৯ জন খেলোয়াড়, যাঁদের মধ্যে আছেন হ্যাজির ২৬ বছর বয়সী ছেলে ইয়ানিসও, তারা রোমানিয়ার জাতীয় দলকে ২০২৪ ইউরোয় খেলার টিকিট পাইয়ে দিয়েছিল। তাতে হ্যাজির একাডেমিকে ঘিরেই এখন বিশ্বকাপ খেলারও স্বপ্ন দেখেন দেশটির নতুন প্রজন্মের ফুটবল সমর্থকেরা। এক পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে গত বছর রোমানিয়ার জাতীয় দলের ৬০ শতাংশ গোল ও অ্যাসিস্ট এসেছিল হ্যাজির একাডেমিতে প্রশিক্ষিত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে।

প্রায় ১৭ হেক্টর জায়গা জুড়ে থাকা হ্যাজির একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়াটা তাঁর জীবনকে কতটা এগিয়ে দিয়েছে সেটা জানিয়ে ১৮ বছর বয়সী সম্ভাবনাময় ফরোয়ার্ড ইউস্টিন ডোইকারু বললেন, ‘এই একাডেমিতে না এলে সিনিয়র দলে এত দ্রুত জায়গা পেতাম না আমি।’ ফুটবলের কলাকৌশলের বাইরেও এখানে অনেক কিছু নিয়ে শেখানো হয় প্রশিক্ষণার্থীদের। ডোইকারুর ভাষায়, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে কীভাবে সামলে উঠতে হয়, কঠিন সময়েও কীভাবে সমাধান খুঁজে বের করতে হয়, তা আমি এখান থেকেই শিখেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত