Ajker Patrika

ফুটবলে চতুর্থ জার্সির উত্থানের নেপথ্যে অ্যাডিডাস

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২২, ১৪: ০৫
ফুটবলে চতুর্থ জার্সির উত্থানের নেপথ্যে অ্যাডিডাস

ফুটবলে হোম-অ্যাওয়ে কিট বা জার্সির ব্যবহার বেশ পুরোনো। দলগুলো নিজেদের তৃতীয় জার্সিকেও সমর্থকদের কাছে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। যদিও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন এখনো। এ নিয়ে তর্কবিতর্কের মধ্যেই এসে হাজির চতুর্থ জার্সি! এটিকে বলা হচ্ছে ফুটবলের নতুন বিস্ময়।

২০২০-২১ মৌসুমে প্রথমবার চতুর্থ জার্সি উন্মোচন করে ক্লাবগুলো। বেশির ভাগ ফুটবল ফেডারেশন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও এ বছর এর ব্যবহার বেড়েছে অনেক। লিগ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়ে চতুর্থ জার্সি পরে খেলতে নেমেছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি), আর্সেনাল, এসি মিলানের মতো পরাশক্তিরা। তবে দল তিনটি আলাদা কারণে এই জার্সি ব্যবহার করেছে। বিশেষ কোনো দিনে বা বিশেষ উপলক্ষকে কেন্দ্র করে, সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে, কোনো ধারণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে কিংবা স্রেফ ফ্যাশনের অংশ হিসেবে মৌসুমের একটি ম্যাচে চতুর্থ জার্সি ব্যবহার করেছে ক্লাবগুলো।

লিওনেল মেসি-কিলিয়ান এমবাপ্পেরা গত মে মাসে সমকামভীতির বিরোধিতা করে ‘রেইনবো জার্সি’ পরে খেলেছেন। এটি পিএসজির চতুর্থ জার্সির স্বীকৃতি পেয়েছে।

জানুয়ারিতে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালের ফুটবলাররা নিজেদের মাঠে চিরচেনা লাল-সাদা জার্সির পরিবর্তে শুধু সাদা পরে নেমেছিলেন ‘কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে। লন্ডনে কিশোর অপরাধ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় প্রায়ই ঘটছিল রক্তপাত। সে কারণে গানাররা তাদের কর্মসূচির নাম দিয়েছিল ‘নো মোর রেড’ (আর নয় লাল)। রক্ত লাল বলেই সেই রং বাদ দিয়ে শুদ্ধতা ও শান্তির প্রতীক সাদা জার্সি বেছে নিয়েছিলেন মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

তবে এসি মিলানের চতুর্থ জার্সির সঙ্গে সচেতনতা কিংবা প্রতিবাদের সম্পৃক্ততা ছিল না। ইতালিয়ান সিরি ‘আ’-এর বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এপ্রিলে বোলোনিয়ার বিপক্ষে যে জার্সি পরে খেলতে নেমেছিল, সেটি শুধু ফ্যাশন বৈচিত্র্যের অংশ হিসেবে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্লাবগুলোর চতুর্থ জার্সি বানিয়েছে বিখ্যাত ক্রীড়াসামগ্রী প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাডিডাস’। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ‘নাইকি’র সঙ্গে টেক্কা দিতে নতুনত্ব আনতে চেয়েছে তারা। অ্যাডিডাসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডলফ ডাসলারের ভাই রুডলফ ডাসলারের প্রতিষ্ঠান ‘পুমা’ও একই পথে হেঁটেছে। হোম, অ্যাওয়ে ও তৃতীয় কিটের চেয়ে চতুর্থটিতে বিশেষত্ব আনতে ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে অ্যাডিডাস।

কিছু ক্লাব আবার যৌথভাবে নির্দিষ্ট কোনো ম্যাচে একই ডিজাইনের জার্সি পরে খেলতে নামছে। নাপোলি ও জুভেন্টাস যেমন পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে চতুর্থ জার্সি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ইতালির পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মার্সেলো বারলনের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা। অ্যাডিডাসও চতুর্থ জার্সিতে বৈচিত্র্য আনতে ফারেল উইলিয়ামস কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে।

ফুটবলে হঠাৎ চতুর্থ জার্সির আবির্ভাব নিয়ে অ্যাডিডাসের নকশা বিভাগের পরিচালক ইনগো টার্নার বলেছেন, ‘চতুর্থ জার্সি একধরনের শূন্যস্থান পূরণের মতো ব্যাপার। যা একটি দলকে আরও সৃজনশীল ও স্বাধীন করে তোলে।’

যদিও সমর্থকদের মনে চতুর্থ জার্সি সেভাবে জায়গা করে নিতে পারেনি। টার্নার এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন, ‘এটা আমাদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। জার্সির নম্বর, রং, গ্রাফিকসের ব্যবহার—সবকিছুতেই অন্যগুলোর মতো গুরুত্ব দিয়ে আসছি। জানি, এটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে এবং বিক্রি বাড়াতে সময় লাগবে। তবে আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত