Ajker Patrika

৭৩ ধাপ ওপরের মিয়ানমারকে হারিয়ে এশিয়ান কাপের কাছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৫২
গোলের পর সতীর্থদের নিয়ে ঋতুপর্ণার (ডান দিক থেকে চতুর্থ) উচ্ছ্বাস। ছবি: বাফুফে
গোলের পর সতীর্থদের নিয়ে ঋতুপর্ণার (ডান দিক থেকে চতুর্থ) উচ্ছ্বাস। ছবি: বাফুফে

কোচ পিটার বাটলার আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, একই সঙ্গে মানতে বললেন বাস্তবতাও। বাংলাদেশ নিয়ে খুব কম লোকই তাই আশাবাদী ছিলেন। কারণ, নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুই পরাশক্তি বাহরাইন ও মিয়ানমার র‍্যাঙ্কিংয়ে ঢের এগিয়ে। সেই ভুল ভাঙিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার আরও কাছে চলে গেলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। বাহরাইনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর আজ স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। দুটো গোলই এসেছে ঋতুপর্ণা চাকমার পা থেকে।

এশিয়ান কাপের টিকিট পেতে বাংলাদেশকে চোখ রাখতে হবে আজকের বাহরাইন-তুর্কমেনিস্তান লড়াইয়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি ড্র কিংবা বাহরাইন জিতলেই ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ।

ইয়াঙ্গুনের থুউনা স্টেডিয়ামে প্রথম মিনিটেই বিপদের মুখে পড়তে হয়েছিল। ডান প্রান্ত থেকে ইউন ওয়াদি লাইংয়ের ক্রসে শ্বে ই তুনের ভলি অল্পের জন্য বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ষষ্ঠ মিনিটে মনিকার শট সহজে তালুবন্দী করেন মিয়ানমারের গোলরক্ষক মিয়া নিয়েন।

১৮ মিনিটে বক্সের কিছুটা বাইরে ফাউলের শিকার হন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ঋতুপর্ণা চাকমার নেওয়া ফ্রি-কিক মানবদেয়ালে আটকে গেলেও বল চলে আসে তাঁর কাছে। এবার আর কোনো ভুল করেননি তিনি। বাম পায়ের কোনাকুনি শটে খুঁজে নেন জালের ঠিকানা। এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে।

২৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ ছিল শামসুন্নাহার জুনিয়রের কাছে। ঋতুপর্ণার ক্রসে তিনি পা ছোঁয়ালেও বল পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। ৩৬ মিনিটে ই তুনের গোলে সমতায় ফিরেছিল মিয়ানমার। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয় সেই গোল। ৪২ মিনিটে ইউপার খাইনের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তবে ফিরতি শটে বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি নও রাই। বিরতির আগে সমতায় ফিরতে আরও কয়েকবার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় স্বাগতিকেরা।

বিরতির পর আরও মরিয়া হয়ে ওঠে মিয়ানমার। ৫৮ মিনিটে কর্নার থেকে মে লুর হেড ঠেকিয়ে দেন রুপনা। বাংলাদেশের আক্রমণে ফিরতে অবশ্য কিছুটা সময় লাগে। ৬৯ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণার ক্রস মনিকা ঠিকমতো প্লেসমেন্ট করতে পারেননি। বল চলে যায় বারের ওপর দিয়ে।

৭১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। গোলদাতা আবারও সেই ঋতুপর্ণা। মিয়ানমারের ডিফেন্ডার থানদার তুনের ভুল পাসে বল পেয়ে যান তিনি। বাম প্রান্ত ধরে খানিকটা এগিয়ে যাওয়ার পর বক্সের বাইরে থেকে তাঁর নেওয়া শট গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে।

৭৫ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করার সুযোগ এসেছিল সুলতানার সামনে। বক্সের বাইরে গোলরক্ষককে কাটিয়ে ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়ে যান তিনি। কিন্তু তাঁর শটের নিশানা ঠিক ছিল না। ৭৭ মিনিটে আবার বাংলাদেশকে রক্ষা করেন রুপনা। মাটিতে পড়ে রুখে দেন মিয়ানমারের ফরোয়ার্ড নোয়ে খিনকে। ৭৯ মিনিটে দুই ফুটবলারকে কাটিয়ে মুনকি আক্তারের দেওয়া পাস কাজে লাগাতে পারেননি সুলতানা। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর শট চলে যায় অনেকটা ওপর দিয়ে।

৮৯ মিনিটে মিয়ানমারের হয়ে একটি গোল শোধ করেন উইন উইন। কিন্তু দিনশেষে হতাশায় ভুগতে হয় র‍্যাঙ্কিংয়ের ৫৫ নম্বরে থাকা স্বাগতিকদের। ৭৩ ধাপ পিছিয়ে ১২৮-এ থাকা বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছে আনন্দ নিয়ে। ৭ বছর আগে এই স্টেডিয়ামে মিয়ানমারের বিপক্ষে ৫-০ গোলে হারের দুঃস্মৃতি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আজকের জয়টা তাই প্রতিশোধেরও!

বাংলাদেশ একাদশ: রুপনা চাকমা, আফঈদা খন্দকার, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র, কোহাতি কিসকু, স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, তহুরা খাতুন ও ঋতুপর্ণা চাকমা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত