Ajker Patrika

‘মুশি ভাইয়ের ত্যাগে কিপিং করতে পেরেছি’

তাসনীম হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৮
Thumbnail image

টানা দুর্দান্ত দুটি সিরিজ জয়ের পর মিলল একখণ্ড অবসর। সেই অবসরের সময়টা ফুরফুরে আর রঙিন করতে পরিবার নিয়ে নুরুল হাসান সোহান ঘুরতে গেছেন ‘চায়ের দেশ’ সিলেটে। চার দিনের সেই ‘ট্রিপ’ শেষ হতে না-হতেই আবার ছয় দিনের একটা সফর আছে সোহানের।

এবার অবশ্য পরিবার নিয়ে নয়, সোহানের ভাষায় যেটা ‘ব্যাচেলর ট্রিপ’! তাসকিন, আফিফ, সাইফউদ্দিনসহ সাত ক্রিকেটার ‘বন্ধুকে’ নিয়ে সোহান চলে যাবেন সৌদি আরবে ওমরা করতে।

এই অবসর সময়েও সোহানকে পিছু ছাড়ছে না পুরোনো কাসুন্দি! নিউজিল্যান্ড সিরিজের শুরুতেই অস্বস্তির কালো মেঘ হয়ে এসেছিল মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে সোহানের কিপিং ভাগাভাগির বিষয়টি। সেই লড়াইয়ে না নেমে পরে টি-টোয়েন্টিতে পছন্দের কিপিং গ্লাভস জোড়া অনুজ সতীর্থের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন মুশি। এতেও কমেনি আলোচনা। বরং বিসিবি সভাপতি থেকে কোচ-অধিনায়ককে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হয়েছে একাধিকবার।

তবে মুশফিকের সঙ্গে কিপিং প্রসঙ্গটি আসতেই অগ্রজের প্রতি শ্রদ্ধায় বিনীত সোহান। আজকের পত্রিকাকে এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান গতকাল সিলেট থেকে মোবাইল ফোনে বললেন, ‘১৬ বছর ধরে মুশফিক ভাই বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিচ্ছেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে আমার তুলনা করা বোকামি! দুই-পাঁচটা ম্যাচ খেলে কখনো আমি তুলনায় আসি না। তিনি (মুশফিক) ত্যাগ স্বীকার করেছেন বলেই হয়তো কিপিং করতে পেরেছি।’

বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের চোখে এখন দেশের সেরা উইকেটকিপার হচ্ছেন সোহান। তবে সোহানের চোখে উইকেটের পেছনে মুশফিকই সেরা। শুধু দেশেই নন, দেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে বিশ্বেরই অন্যতম সেরা কিপার মনে করেন সোহান, ‘তিনি আমার কাছে সব সময় সেরা। আমার মনে হয় তিনি শুধু বাংলাদেশের সেরা নন, পরিসংখ্যান মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা।’

বাইরে থেকে যে আলোচনাই হোক, মুশফিককে আপাদমস্তক অনুসরণ করেন সোহান। ২৭ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বললেন, ‘(মহেন্দ্র সিং) ধোনিকে অনুসরণ করি। তিনি এখন অবসরে। এখন যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে মুশফিক ভাই অন্যতম সেরা। তাঁর কাজের ধরন, কঠোর পরিশ্রম—এখন তো অনুসরণ করিই, যখন জাতীয় দলের বাইরে ছিলাম তখনো কিপিং, ব্যাটিং ফিটনেসের বিষয়ে মুশফিক ভাই আমাকে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে সহায়তা করেছেন।’

মুশফিকের কাছ থেকে কিপিং পাওয়া নিয়ে এত যে আলোচনা, এসব অস্বস্তি বা বাড়তি চাপ অনুভব হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে সোহানের কণ্ঠে সংহতির গান, ‘আমাদের মধ্যে এরকম (প্রতিযোগিতা) কিছু আসে না। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা এখন অন্য রকম। বাইরের বিষয়গুলো (সমালোচনা-আলোচনা) সেখানে প্রভাব ফেলে না।’

উইকেটকিপিং নিয়ে অনেক কথা হলো। প্রসঙ্গ পাল্টে সোহানের সামনে তোলা হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের টুর্নামেন্ট তাঁর কাছে ভিন্নভাবেই ধরা দিচ্ছে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা সোহানের কাছে হয়ে আছে ‘শিক্ষাসফর’ হিসেবে। দলে থাকলেও একটা ম্যাচেও খেলার সুযোগ মেলেনি সেবার। এবার সোহান টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ‘চয়েস’। চোট কিংবা অন্য কোনো সমস্যাই শুধু তাঁকে একাদশ থেকে বাইরে রাখতে পারে!

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাস তিনেক আগে আকস্মিক বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন সোহান। ২০১৬ সালের শুরুতে নিজের শহর খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে তাঁর অভিষেক হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। পাঁচ বছর পর সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ‘নতুন’ শুরুর সুযোগ হয়েছে সোহানের। প্রায় তিন বছরের বিরতি দিয়ে গত জুনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন সংস্করণের দলেই ফেরেন সোহান। পরের গল্পটা সবারই জানা। কয়েক মাসের মধ্যে সোহান হয়ে উঠেছেন দলের এক নম্বর উইকেটকিপার।

এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে তাই একগুচ্ছ পরিকল্পনা সোহানের, ‘ভালো কিছু করার লক্ষ্য আছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সর্বশেষ তিন সিরিজে আমরা দল হিসেবে ভালো খেলেছি। আমার কাছে মনে হয়, ২০১৬ বিশ্বকাপে যা ছিলাম, তার চেয়ে এবার মনোযোগটা আরও বেশি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত