Ajker Patrika

শান্তর কাছে সব ম্যাচই আন্তর্জাতিক ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ৪১
শান্তর কাছে সব ম্যাচই সমান গুরুত্ব পায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শান্তর কাছে সব ম্যাচই সমান গুরুত্ব পায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) সব দলই ১০টি করে ম্যাচ খেলেছে। লিগ পর্বে আর একটি ম্যাচ বাকি। এই শেষ রাউন্ডেই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে দেশের ক্লাব ক্রিকেটের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ। শুধু দুটি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের মুখোমুখি লড়াই বলেই নয়, এই ম্যাচ জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের জন্যও হয়ে উঠেছে একরকম মানসিক পরীক্ষা ও প্রস্তুতির উপলক্ষ।

পয়েন্ট টেবিলে বর্তমানে আবাহনী এগিয়ে রয়েছে ২ পয়েন্টে, দুই নম্বরে থাকা মোহামেডান তাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে। শিরোপার লড়াইয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার দারুণ সুযোগ দুই দলের সামনেই। আবাহনী জিতলে শিরোপার দৌড়ে এগিয়ে যাবে তারা। মোহামেডান জিতলে লড়াই আরও জমে উঠবে। সমান পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগে যাবে দুই দল।

জাতীয় দলের সিলেট ক্যাম্প পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ম্যাচের গুরুত্ব বিবেচনায়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে ১৩ এপ্রিল শুরু হবে প্রস্তুতি ক্যাম্প, তবে তার আগেই আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে খেলবেন জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা।

বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এই ম্যাচকে টেস্ট সিরিজের মতোই গুরুত্ব দিচ্ছেন। আজ সকালে মিরপুর একাডেমি মাঠে আবাহনীর অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমকে শান্ত বলেন, ‘এই ম্যাচকে কোনোভাবেই শুধু প্রস্তুতি ম্যাচ বলা যাবে না। আমরা অনেক দিন পর টেস্ট খেলতে যাচ্ছি, একটু বেশি সময় পেলে ভালো হতো ঠিকই, তবে এই ম্যাচটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা, বাড়তি প্রত্যাশা। যারা টেস্ট দলে আছে, তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত।’

এই ম্যাচ নিয়ে আলাদা আবেগ কাজ করছে শান্তর ভেতরেও। যদিও কোনো নির্দিষ্ট ক্লাবের প্রতি পক্ষপাত নেই তাঁর, তবু আবাহনী-মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী দলে খেলার সুযোগকে বিশেষ কিছু মনে করছেন তিনি। আবাহনীর অধিনায়ক বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকেই একটা ইচ্ছা ছিল—এ দুই দলে একদিন খেলব। আমি কারও ভক্ত ছিলাম না, তবে এটুকু জানতাম, এ দুই ক্লাবে খেলাটা একটা সম্মানের ব্যাপার। আমি সব ম্যাচকেই আন্তর্জাতিক ম্যাচের মতো করে দেখি, কোনো সিরিজ বা প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখি না।’

প্রতিবারের মতো এবারও আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচ নিয়ে বাড়তি আলোচনা। প্রশ্ন হয়েছিল সাকিব আল হাসানের স্ট্যাম্পে লাথি মারা সেই বিতর্কের ম্যাচ নিয়েও। এ ব্যাপারে শান্তর সাবলীল উত্তর, ‘ওটা আসলে সেরা স্মৃতি নয়। ম্যাচে উত্তেজনা থাকবেই, তবে খেলাটা যেন সুন্দরভাবে শেষ হয়, সেটাই সবচেয়ে জরুরি। আমি আশা করব এবারও ম্যাচটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, তবে অযাচিত কিছু ঘটবে না।’

ফাইনাল রাউন্ডে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না শান্ত? সোজাসাপ্টা বললেন, ‘আমি এটাকে শুধু আরেকটা ম্যাচ হিসেবেই দেখি। বাড়তি কিছু ভাবার নেই। হারজিত গুরুত্বপূর্ণ না, প্রক্রিয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আগের ম্যাচে যা যা ভুল ছিল, সেটা যেন এবার না হয়, সেটাই লক্ষ্য।’

তবে শান্ত স্বীকার করলেন দর্শকের উপস্থিতি আগের মতো নেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আগে যেমন গ্যালারিতে দর্শক আসত, এখন তেমন দেখা যায় না। কারণ হয়তো সকালের ম্যাচ, ব্যস্ততা... (থাকে মানুষের)। তবে এখনো যারা খেলে, তারা ম্যাচের গুরুত্ব বোঝে। আমি বিশ্বাস করি, দর্শকদের মাঝে সেই আগ্রহ এখনো আছে। আশা করব কালকের ম্যাচেও গ্যালারিতে তারা থাকবে।’

আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজ ও সামনের টেস্ট সূচি নিয়েও আশাবাদী শান্ত, ‘গত বছর আমরা চারটা টেস্ট জিতেছিলাম। এ বছর আরও ছয়টা গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট আছে। লক্ষ্য থাকবে আগের চেয়ে ভালো ফল করা। আমরা কোনো প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখছি না। সিরিজ হোক জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে—প্রতিটি ম্যাচকেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবেই দেখি।’

বৈশ্বিক টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে অংশগ্রহণ করা ক্রিকেটারদের প্রসঙ্গও উঠে আসে। পিএসএলে খেলছেন নাহিদ রানা, আইপিএলে খেলবেন লিটন দাস ও রিশাদ হোসেন। বিসিবির এমন সুযোগ আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের লিগে খেলা অভিজ্ঞতা বাড়ায়। তবে অবশ্যই জাতীয় দলের খেলার অগ্রাধিকার থাকতে হবে। বিসিবি যদি এমন সুযোগ আরও করে দেয়, সেটা ক্রিকেটারদের জন্য ভালো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত