Ajker Patrika

‘মাশরাফি ভাইকে দেখেই আমার পেস বোলিংয়ে আসা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০: ৪৩
‘মাশরাফি ভাইকে দেখেই আমার পেস বোলিংয়ে আসা’

তোপ দাগানো এক স্পেলে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) অভিষেক হয়েছিল মানিক খানের। ২০১৯ সালে ডিপিএল হয়েছিল টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। বিকেএসপির বিপক্ষে ডিপিএলের অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করেন এই পেসার। ৪ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ১২ রান দিয়ে ওই ম্যাচে দোলেশ্বরের হয়ে তাঁর শিকার ছিল ৪ উইকেট। 

টি-টোয়েন্টিতে নিজের সেরা বোলিং করার পর মানিকও যেন দীর্ঘ সময়ের জন্য হারিয়ে গেলেন ক্রিকেটীয় আলোচনা থেকে। কিন্তু গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ডিপিএলে আরেকটি ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং ফিগার করে মানিক নিজেকে আলোচনার টেবিলে বসাতে বাধ্য করলেন। ডিপিএলে আজ রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে ৫৬ রানে হেরেছে মানিকের দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। দল হারলেও ১০ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি, যা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে মানিকের সেরা বোলিং ফিগার। 

ব্রাদার্সে জাতীয় দলের কোনো তারকা ক্রিকেটার ছিলেন না, তবু তারুণ্যনির্ভর দলটি পয়েন্ট টেবিলের ৭ নম্বরে থেকে মৌসুম শেষ করেছে। সুপার লিগ পর্বে না যেতে পারলেও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মানিকেরা। তাই এই পেসারের গলায় স্বস্তির সুর, ‘ব্রাদার্সের সবাই ভালো শেপে ছিল, দল থেকে ভালো সমর্থন দেওয়া হয়েছে। কোচ, অধিনায়ক, টিম ম্যানেজমেন্ট সবার মধ্যে একতা ছিল, তাই পারফরম্যান্সটা সব মিলিয়ে ভালো হয়েছে।’ 

ডিপিএলের ব্যাটিং উইকেটে শেষ ম্যাচে মানিকের বোলিংটা ছিল বেশ। তাই একটু স্বস্তি তাঁর মনেও, ‘এসব উইকেটে ৫ উইকেট পাওয়া খুব চ্যালেঞ্জিং। আলহামদুলিল্লাহ, শেষ ম্যাচ ভালো খেলতে পেরে শুকরিয়া। আসলে এ বছর যে পরিস্থিতি ছিল, বেশির ভাগই ব্যাটারদের জন্য উইকেট ছিল। বোলারদের তেমন কিছু করার ছিল না। তার ওপর গরম। গরমে ফিট থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গরমের কারণে অনেক ঘাটতিও হয়েছে।’ 

মানিক যোগ করেন, ‘এসব উইকেটে ব্যাটারকে বুঝতে হবে, তাঁর জন্য কী প্রয়োজন। বোলিংয়ে বৈচিত্র্য লাগবে। ব্যাটারকে থিতু হতে দেওয়া যাবে না।’ 

২০১৯ সালে এইচপিতেও ছিলেন মানিক। জিতেছিলেন তাঁরা সাউথ এশিয়ান গেমসের গোল্ড মেডেলও। তবু সামনে থেকে যেন এখন কিছুটা আড়ালে চলে গেছেন তিনি। এবার অবশ্য আশা ব্যক্ত করলেন, নিজেকে স্বরূপে ফেরানোর জন্য সবটুকুই করবেন, ‘সামনে অনেক ক্যাম্প আছে। নিজেকে আরও প্রস্তুত করতে চাই, যদি সুযোগ পাই। যে দুর্বলতা ও সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই এবং সব সময় ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকতে চাই আমি।’ 

নিজেকে লড়াকু হিসেবে দেখতে পছন্দ মানিকের। সামনে নিয়ে এলেন নিজের আদর্শ মাশরাফি বিন মুর্তজাকে, ‘আমার সবচেয়ে ভালো লাগে মাশরাফি ভাইকে। ওনাকে দেখেই আমার পেস বোলিংয়ে আসা। সবচেয়ে ভালো লাগে ওনার মনোভাব, এত বছর চোট নিয়েও এখনো হাল ছেড়ে দেননি এটা ভালো লাগে।’ 

ক্যারিয়ারের ভালো সময় খারাপ সময় আসতে পারে, এটা মেনেই শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকতে চান মানিক, ‘অবশ্যই, ২০১৯ সালে এইচপিতে ছিলাম। তারপরে সাউথ এশিয়ান গেমসে আমরা স্বর্ণ জিতলাম। তারপর করোনা এল, তখন তো ক্যাম্পে ছিলাম না। তবে সামনে ইনশাআল্লাহ ক্যাম্প হবে। ভালো কাজ করতে চাই। ক্রিকেটের সঙ্গই থাকতে চাই।’ 

ব্রাদার্সের হয়ে চার ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করেছেন মানিক। কিন্তু দল সুপার লিগে না যাওয়ায় কিছুটা আক্ষেপের সুর তাঁর গলায়, ‘এটা একটা কষ্ট আমরা সুপার লিগে যেতে পারিনি। যেকোনো দলই চায় সুপার লিগ খেলতে। সেখানে খেললে পাঁচটা ম্যাচ বাড়ে, পারফরম্যান্স দেখা হয়। যদি ওখানে খেলেন–বোলিং-ব্যাটিং সবকিছুতেই এগিয়ে যাওয়া যায়। সুপার লিগ না খেললে তেমন পারফর্ম গণনা হয় না। কিন্তু সুপার লিগে যেতে পারলে খুব ভালো লাগত। তবু আমরা আলহামদুলিল্লাহ, ভালো ক্রিকেট খেলেছি।’ 

অবশ্য চোটও আরেক শত্রু হয়ে আছে মানিকের। গত বছর জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) প্রথম ম্যাচেই খুলনার বিপক্ষে শিকার করেছিলেন ৬ উইকেট। এর পরই চোটে ছিটকে পড়েন তিনি। ডিপিএলেও সুযোগ হলো না এবার সব ম্যাচে খেলার। 

যেকোনো টুর্নামেন্টই এখন ফ্লাট উইকেটে আয়োজন হয়, যা বোলারদের জন্য রীতিমতো পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বোলিং বৈচিত্র্য নিয়েও কাজ করছেন মানিক, ‘আমাদের দেশে বেশির ভাগই ফ্ল্যাট উইকেট। এখানে ভ্যারিয়েশন বা বৈচিত্র্য ছাড়া বাঁচতে পারবেন না। ভ্যারিয়েশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভেরিয়েশনের ওপর অনেক কাজ করছি, ইয়ার্কার, অফ-কাটার, লেগ কাটার, স্লোয়ার, বাউন্সার ইত্যাদি নিয়ে। আমার এগুলোই ভালো লাগে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত