Ajker Patrika

এই বয়সেও জাপান নারী ক্রিকেটের কেতন ওড়াচ্ছেন তিনি

এই বয়সেও জাপান নারী ক্রিকেটের কেতন ওড়াচ্ছেন তিনি

ক্রিকেটের বিশ্বায়ন শুরু হলেও জাপানে খেলাটি এখনো সেভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি। দেশটির অনেক অঞ্চলে খেলাটি এখনো অচেনা। 

শিজুকা মিয়াজির কাছেও ক্রিকেট এক সময় নিছক মজা ছিল। বেসবলের সঙ্গে মিল থাকায় এর প্রতি আগ্রহ জন্মায়। পরে ব্যাট-বলই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যানজ্ঞান। 

২০১০ সালের এশিয়ান গেমসে জাপানের ব্রোঞ্জ জয়ী দলের সদস্য তিনি। ২০১৩ সালে পান দলের নেতৃত্ব। বয়স ৪০ পেরিয়ে গেলেও সূর্যোদয়ের দেশটির ক্রিকেট কেতন তাঁর হাত ধরেই উড়ছে। তবু এখনই থামতে চান না শিজুকা। নিজেকে নিতে চান অনন্য উচ্চতায়। 

আগামী ১ মে থেকে দুবাইয়ে বসছে ফেয়ারব্রেক গ্লোবাল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। টি-২০ সংস্করণের এই টুর্নামেন্টে খেলবেন ৩০ দেশের ক্রিকেটার। খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের জাহানারা আলম ও রুমানা আহমেদেরও। অংশ নেবেন শিজুকাও। একাদশে থাকলে প্রথম জাপানি নারী হিসেবে বিদেশি ক্রিকেট লিগ খেলার নজির গড়বেন তিনি। 

জাপানে ক্রিকেট কীভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, নিজের উত্থান হলো কীভাবে—পাকিস্তানের দৈনিক ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেসব গল্প শুনিয়েছেন শিজুকা। বলেছেন, ‘আমি স্থানীয় বেসবল ক্লাবে নাম লেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় আমার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় খেয়াল করলাম, বেসবলের সঙ্গে ক্রিকেটের মিল আছে। তাই মজার ছলে ক্রিকেট খেলতে শুরু করলাম। তখন আমার বয়স ছিল ২০।’ 

পরিবারের সমর্থন ছিল বলেই এত দূর আসতে পেরেছেন বলে মত শিজুকার, ‘বাবা-মা সব সময় অনুপ্রাণিত করেছে। ক্রিকেটকে আমার প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিতে দিয়েছে।’ 

জাপানের নিশিনোমিয়া শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শিজুকার। ১৯৯৫ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অনেক ক্ষতি হয়েছিল শহরটির। আরেকটি কারণে শহরটির বেশ নামডাক আছে। জাপানের একাধিক তারকা বেসবল খেলোয়াড়ে এখান থেকেই উঠে এসেছেন। 

বেসবল রাজ্যে জন্ম নিয়ে ক্রিকেটে ঝুঁকে পড়া মোটেও সহজ ছিল না শিজুকার, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল পৃষ্ঠপোষক জোগাড় করা। ক্রিকেটারদের কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করতে চাইত না।’ 

দুই দশক জাপানে ক্রিকেটের বীজ ছড়িয়ে দিয়েও সচ্ছল নন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। খেলা না থাকলে অন্য কাজও করতে হয় তাঁকে, ‘ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি সানো গ্রাউন্ডে আমি চা সরবরাহ করি।’ 

ক্রিকেট নারী ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করছে বলে মনে করেন শিজুকা, ‘এটি আমাকে শক্তি, সাহস ও আত্মবিশ্বাস জোগায়। নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে। যারা খেলাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা সবাই একমত হবেন।’ 

জাপানে ক্রিকেট এখনো জনপ্রিয়তা না পেলেও আশাবাদী শিজুকা, ‘জাপানে ক্রিকেটের পরিধি বাড়ছে। বিশেষ করে আমি যেখানে থাকি, সেই সানোতে। এটি জাতীয় খেলা হয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। তবে আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে রোমাঞ্চিত। আমার বিশ্বাস, জাপান একদিন বিশ্বকাপ খেলবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত