Ajker Patrika

বিসিবি এইচপির আড়াই কোটি টাকার ক্যাম্পে প্রাপ্তি কী

আহমেদ রিয়াদ, ঢাকা
আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাম্প করেছে বিসিবি এইচপি। ছবি: বিসিবি
আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাম্প করেছে বিসিবি এইচপি। ছবি: বিসিবি

শেষ হতে চলেছে চলতি বছরে বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলের ক্যাম্প। ক্যাম্প ঠিকঠাক আয়োজনে যথেষ্ট ব্যয় ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিসিবির কৃপণতা নেই। কিন্তু দীর্ঘ ক্যাম্প শেষে লক্ষ্য কতটা পূরণ হলো এইচপির, সে প্রশ্ন এসে যাচ্ছে।

এইচপির প্রথম দফা ক্যাম্পের সূচি ছিল ৩ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত। তবে মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের সঙ্গে সিরিজ ছিল রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও ঢাকার ভেন্যুতে। ৩ থেকে ১৬ মে এইচপি দল অবস্থান করে রাজশাহীতে। এরপর চার দিনের ম্যাচ খেলতে ২০ মে চট্টগ্রামে চলে যায় দুই দল। ২৩ মে প্রথম ম্যাচ শেষে করে ঢাকায় ফেরে তারা। সিরিজের দ্বিতীয় তথা শেষ চার দিনের ম্যাচ হয় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, ২৭ থেকে ৩০ মে। মে পর্যন্ত যতটা আন্তর্জাতিক সূচি ও ব্যস্ততা ছিল এইচপির, পরে আর সেটা সেভাবে দেখা যায়নি।

দ্বিতীয় ধাপের ক্যাম্প চট্টগ্রামে শুরু হয় ১২ জুন। শেষ হয়েছে গত ১২ আগস্ট। প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই ক্যাম্পের ৪০–৪৫ দিনই ক্রিকেটাররা মূল মাঠে অনুশীলনই করতে পারেননি। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এই সময় হোটেলে জিম, সাঁতার আর ইনডোর ব্যাটিং-বোলিং সেশনেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন ক্রিকেটাররা। জুন-জুলাই-আগস্টে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির বাগড়া থাকবে, সেটি তো আর নতুন কিছু নয়!

চলতি অর্থবছরে এইচপি দলের বাজেট বরাদ্দ প্রায় ১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইতিমধ্যেই চট্টগ্রামে দুই মাসের ক্যাম্পে খরচ হয়েছে প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এইচপি দলের প্রস্তুতি ও ম্যাচ আয়োজনের মোট ব্যয় হতে পারে প্রায় ৪ কোটি টাকা। ব্যয়ে ঘাটতি নেই, কিন্তু এইচপি দল দিয়ে প্রত্যাশিত লক্ষ্য কি পূরণ হয়েছে?

চট্টগ্রামের ক্যাম্পে ম্যাচ বলতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে এইচপি দল। এসব ম্যাচে জাতীয় দলের বাইরে থাকা সিনিয়র ক্রিকেটারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত সপ্তাহে ‘এ’ দলের মোড়কে এইচপি দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে। বিমান ভাড়া, ভিসা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে এই সফরের ব্যয় প্রায় ৩৫–৩৮ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, খেলা ‘এ’ দলের হলেও ব্যয় এইচপি দলের বাজেটের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

এইচপি দলের মূল উদ্দেশ্য হলো জাতীয় দলের জন্য প্রতিভাবান ক্রিকেটার বাছাই ও তাদের দক্ষতা উন্নত করা। তরুণ ক্রিকেটারদের একটি শক্তিশালী পুল তৈরি করা, যাদের ভবিষ্যতে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া যায়। জাতীয় দলের জন্য শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি করাই এইচপির মূল লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্যেই ক্যাম্পের ফাঁকে ফাঁকে আন্তর্জাতিক সিরিজ দরকার হয়। বৈরী আবহাওয়ায় ঠিকঠাক প্রস্তুতি না নেওয়া গেলেও চট্টগ্রামে প্রায় দুই মাসের ক্যাম্পে যে খরচ হয়েছে, সেটি দিয়ে উপমহাদেশের কোনো একটি দেশে সফর করে নিজেদের আরও ভালোভাবে তৈরি করার সুযোগ ছিল এইচপি দলের।

এইচপির সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কোচ বলেন, ‘এইচপি দলের জন্য যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সে অনুযায়ী এগোতে পারেনি। ক্যাম্প শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সিরিজ পেয়েছিলাম, সেটি দারুণ ছিল। কিন্তু পরে ক্যাম্প শুরুর আগে যদি একটি সিরিজ খেলা যেত, তবে আমরা ভুল-ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে ঠিক করতে পারতাম। এরপর আরেকটি সিরিজের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের মূল্যায়ন করা যেত। ইনডোর বা মাঠে দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলন করলেও ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়া যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব নয়।’

এইচপির সঙ্গে ওই কোচ আরও বলেছেন, ‘‘এ’ দলের সঙ্গে তিনটি ম্যাচ ছাড়াও দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি নিজেদের মধ্যে। কিন্তু ক্রিকেটারদের খুব বেশি উন্নতি চোখে পড়ে না। কারণ, প্রতিপক্ষ চেনা এবং জানা। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেললে খেলোয়াড়দের মান বোঝা যায়।’ ’

নভেম্বরে এশিয়ান গেমসে দল পাঠাবে বিসিবি। গেমসে সাধারণত এইচপি দলের খেলোয়াড়েরাই অংশ নিয়ে থাকে। এইচপির ম্যাচে অনেক সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে এইচপি দলের মূল ক্রিকেটারদের সুযোগ সীমিত হয় বলে মনে করেন দল-সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোররাতে হাঁসের মাংস খেতে ৩০০ ফুটে যান আসিফ মাহমুদ, না পেয়ে যান ওয়েস্টিনে

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভুলভাবে কথা বলেছেন: প্রেস সচিব

নীলা মার্কেটের হাঁসের মাংস নাকি ওয়েস্টিনের—কোনটি সেরা

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শিবির নেতা, ছাত্রলীগ সন্দেহে মারধর করল ছাত্রদল

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ: ভাতা দ্বিগুণ হয়ে ১২০০, ঘণ্টায় সম্মানী ২৫০০ থেকে বেড়ে ৩৬০০ টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত