Ajker Patrika

‘কাম অন শেন’ বলে চিৎকার করলেও ওয়ার্ন আর জাগলেন না

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৫: ০২
‘কাম অন শেন’ বলে চিৎকার করলেও ওয়ার্ন আর জাগলেন না

চার দিন পেরিয়ে গেলেও অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের অকালপ্রয়াণ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এখনো অবিশ্বাসের ঘোরে বন্দী পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। 

ওয়ার্নের ঘরের মেঝে, তোয়ালে ও বালিশে ফরেনসিক পুলিশ রক্তের দাগ পাওয়ায় মৃত্যু নিয়ে পরিবার-ভক্তদের মনে জেগেছিল সন্দেহ। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসার পর থাইল্যান্ডের পুলিশ বিভাগ নিশ্চিত করেছে, ৫২ বছর বয়সী স্পিন-রাজের মৃত্যুতে কোনো রহস্য নেই। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়াতেই নাকে-মুখে রক্ত এসেছিল। 

ওয়ার্নকে বাঁচাতে সাধ্যের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছেন জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী দলের সদস্য (প্যারামেডিক) আনুচ হান-আইয়াম। অস্ট্রেলিয়ার ট্যাবলয়েড ‘হেরাল্ড সান’কে সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি, ‘প্রথমে বুঝতেই পারিনি, যে মানুষটির জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছি, তিনি শেন ওয়ার্ন—একজন মহাতারকা। তাঁর বন্ধুরা তাঁকে ঘিরে ছিলেন। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বলতে পারেন, জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু পারিনি। আমি দুঃখিত।’ 

এই বিছানাতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন শেন ওয়ার্নথাই পুলিশ বলছে, মৃত্যুর আগে কো সামুইয়ের বাংলোতে দুজন নারী মালিশকারীকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন ওয়ার্ন। একটি নতুন স্যুটও অর্ডার করেছিলেন। তবে তারা ঘরে ঢোকার পর কোনো নারী কিংবা স্যুট পাননি। এসিও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় চলছিল। 

চিকিৎসাসেবা দলের সদস্য আনুচও বলেছেন সে কথা, ‘আমি বাংলোয় পৌঁছানোর পর ওয়ার্নের পাঁচ বন্ধুকে দেখতে পাই। তাঁরা সবাই পুরুষ। প্রত্যেকে ওয়ার্নের চেতনা ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন। এরপর আমি সিপিআর (কৃত্রিম শ্বাসব্যবস্থা) দিতে শুরু করি। ওই সময় তাঁরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে থাকেন।’ 

ওয়ার্নের ঘরে চলছে ফরেনসিক পুলিশের তদন্ত ‘বন্ধুরা ওয়ার্নকে বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন। একজন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা সত্যিই হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একজন চিৎকার করে বলতে থাকেন, “কাম অন শেন, কাম অন…”। কিন্তু তাঁকে আর জাগানো গেল না’—যোগ করেন আনুচ। 

 মৃত্যুর আগে তোলা ওয়ার্নের শেষ ছবিধূমপান ও মদ্যপান ছাড়া যেন থাকতেই পারতেন না ওয়ার্ন। মৃত্যুর দিন বিকেলেও ড্রিংক করার কথা ছিল তাঁর। কিংবদন্তি লেগ স্পিনারের কাছের মানুষ বলছেন, বেপরোয়া ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনই তাঁকে শেষ করে দিল। তবে আনুচ তাঁর ঘরে এসব পাননি বলেই জানিয়েছেন, ‘রুম একদম পরিপাটি ছিল। ভেতরে বিয়ার কিংবা সিগারেট দেখিনি।’ 

ওয়ার্নের মরদেহ থাইল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। সব ঠিক থাকলে আজই ‘ঘরে’ ফিরবেন ওয়ার্ন। তবে নিথর দেহে। 

এ ব্যাপারে ওয়ার্নের রাজ্য ভিক্টোরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী ড্যানিয়েল অ্যান্ডুস বলেছেন, ‘ক্রিকেট দিয়ে ওয়ার্ন আমাদের রাজ্য ও দেশকে গর্বিত করেছেন। এটা সব ভিক্টোরিয়ানের জন্য দারুণ সুযোগ যে, তারা ওয়ার্নকে শেষ বিদায় জানাতে পারবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত