Ajker Patrika

ফিরেই তো আসছেন মোস্তাফিজ

রানা আব্বাস, নিউইয়র্ক থেকে
আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ১২: ২৬
ফিরেই তো আসছেন মোস্তাফিজ

বিষয়টা তিনি ভালো করেই জানেন। যখন ভালো করতে পারেন না, তখন ট্রল হয় ‘মুস্তা ইজ নেভার কামিং ব্যাক’ কথাটা দিয়ে। যখন ভালো খেলেন, তখন আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হয় ঠিক উল্টো—এই কথার প্রবক্তাকে নিয়ে! মোস্তাফিজুর রহমানের কাছেও এখন বিষয়টি বেশ ‘উপভোগ্য’ হয়ে উঠেছে! 

খারাপ করলে এসব ট্রল নিয়ে তিনি ভাবেন না। ভালো করলে ভাসেন না উচ্ছ্বাসে। আড্ডায় মোস্তাফিজ একটা কথা প্রায়ই বলেন, ‘হাত ভালো ঘুরলে সব ঠিক। না ঘুরলে কথা বলতে কেউ ছাড়ে না!’ তাঁর হাত ভালো ঘোরা মানে দুর্দান্ত বোলিং। মোস্তাফিজ বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি তাঁর বেঞ্চমার্ক সেট করে ফেলেছেন আবির্ভাবের শুরুতেই। ৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার তাঁর। কাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেটের সংখ্যা ৩১৮। খেলেন বিশ্বের সেরা সেরা সব লিগে। বল হাতে মনে রাখার দৃশ্য তো আর কম উপহার দেননি। 

তবু সবার কাছে মোস্তাফিজের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ ২০১৫ সালের জুনে ভারতের বিপক্ষে সেই ওয়ানডে সিরিজ, যেটিতে অচেনা এক তরুণ চুরমার করে দিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং লাইনআপ। প্রতাপশালী ভারতকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছেন এক তরুণ, বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে সেটা ছিল এক পরাবাস্তব দৃশ্য। সেই দৃশ্য যিনি উপহার দিয়েছিলেন, সেই মোস্তাফিজ একটু খারাপ করলেই কথা হয়—আগের ধার তাঁর আর নেই। কেন তিনি ‘অটোমেটিক চয়েস’, তখন সেই প্রশ্নও শুনতে হয় নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টকে। 

গত কয়েক বছরে একাদশ কিংবা দল থেকে বাদ পড়ার অভিজ্ঞতা মোস্তাফিজের একাধিকবার হয়েছে। সবশেষ আইপিএলে দুর্দান্ত ফিজকে দেখার পর আরেক প্রশ্ন, ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটাতে ভালো খেলেন, জাতীয় দলের জার্সিতে নিষ্প্রভ থাকেন কেন? চেন্নাই সুপার কিংসে মহেন্দ্র সিং ধোনির সংস্পর্শে তাঁর জ্বলে ওঠার পর আরেকটি বিষয় সামনে এল—বাংলাদেশের অধিনায়কেরা তাঁকে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারেন না। 

চারিত্রিকভাবে সাকিব আল হাসানের মতো না হলেও আলোচনা-সমালোচনা হজমে মোস্তাফিজ অনেকটা তারকা অলরাউন্ডারের মতো। ফিজ ভালো করেই জানেন, একজন বোলারকে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হতে হলে সব উইকেট কন্ডিশনেই ভালো করতে হবে। কিন্তু সবার শক্তি-দুর্বলতা যে এক নয়। মোস্তাফিজের তূণে যেসব তির আছে, সেগুলো বেশি কার্যকর হয় মন্থর উইকেটে। আর এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ ধরনের উইকেটই বেশি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, ‘মোস্তাফিজের জন্য এই বিশ্বকাপ স্বর্গে থাকার মতো। কারণ, এর চেয়ে আইডিয়াল উইকেট সে হয়তো খুব কম পাবে।’ 

আসলেই কি এই উইকেট মোস্তাফিজের জন্য উপযুক্ত? গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমন এক প্রশ্নের জবাবে কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে বললেন, ‘উপযুক্ত উইকেট বলব না। সে (মোস্তাফিজ) অসাধারণ বল করে। সে খুব আত্মবিশ্বাসী নিজের পরিকল্পনা নিয়ে। নানা ধরনের বলই সে করছে। যেভাবে পরিস্থিতি ও পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বোলিং করছে, এটা আসলেই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। কোচিং স্টাফও ভালো কাজ করছে, তাদের প্রচুর তথ্য দিচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ২২ গজে বোলারদেরই নিতে হয়।’ 

সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ। সেই ম্যাচে বোলিংয়ে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন সবচেয়ে বেশি মুগ্ধতা ছড়ালেও তাঁকে পথ দেখিয়ে দেওয়ার কাজ মোস্তাফিজই করেছিলেন। দলকে সময়মতো ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার সঙ্গে লঙ্কান ব্যাটারদের ওপর ক্রমাগত চাপ তিনিই প্রয়োগ করেছিলেন। আর তাতে রিশাদের সামনে খুলে যায় উইকেট শিকারের দুয়ার। 

লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৭ রানে ৩ উইকেট পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো বোলারের টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেট পাওয়া, তার আগে আইপিএলে ধারাবাহিক ভালো বোলিং করা—মোস্তাফিজ এ রকম ধারাবাহিক থাকলে ‘কামিং ব্যাক’-এর বিষয়টিই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জমকালো দোতলা বাড়িতে দূতাবাস, সামনে সারি সারি কূটনৈতিক গাড়ি—৭ বছর পর জানা গেল ভুয়া

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটেই ১৯ ফ্রিজ, আরও বিপুল ব্যবহার সামগ্রী উঠছে নিলামে

অবশেষে রাজি ভারত, ‘জিতেছে বাংলাদেশ’

ই-মেইলে একযোগে ৫৪৭ ব্যাংক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত, পুনর্বহালের দাবি

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে পলাতক আসামি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত