Ajker Patrika

মানুষের প্রত্যাশাই এখন আমাদের শক্তি

বোরহান জাবেদ
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ১১
মানুষের প্রত্যাশাই এখন আমাদের শক্তি

প্রশ্ন: দেশ থেকে বলে গিয়েছেন, বিশ্বকাপ নিশ্চিত এবং চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরতে চান। এই আত্মবিশ্বাসের রহস্য যদি বলতেন?

নিগার সুলতানা জ্যোতি: আমরা যখন বাছাইপর্ব খেলতে যাই, যে দলগুলোর বিপক্ষে খেলি, তাদের চেয়ে নিঃসন্দেহে আমরা শক্তিশালী দল হিসেবেই যাই। সম্প্রতি আমরা ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলে এসেছি, সেখানে আমরা পারফর্ম করেছি। একসঙ্গে অনেক বছর খেলছি, সিনিয়ররা আছেন। দল হিসেবেও আমরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। সবকিছু মিলিয়ে আমরা বাছাইপর্বের দলগুলোর মধ্যে অনেকটা এগিয়ে ছিলাম। সে কারণেই আত্মবিশ্বাসটা এসেছে। যখন দল ভালো ছন্দে থাকে, সেটা অভিজ্ঞতা কিংবা পারফরম্যান্স—সে ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ নেওয়া কিংবা বলা অনেক সহজ হয়ে যায়। 

প্রশ্ন: সবাইকে দেখিয়ে দিতে এবারের এশিয়া কাপ নিশ্চয়ই আরেকটা বড় সুযোগ?

জ্যোতি: প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের প্রমাণের ব্যাপার রয়েছে। সেই সুযোগগুলো সামনে আসছে। আমরা যেহেতু এখন নিয়মিত খেলব, ব্যস্ত সূচি যখন থাকবে, আমরা যত ভালো করব, বিশ্ব ক্রিকেটে তত আমাদের কদর বাড়বে। ক্রিকেট বিশ্ব আমাদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেবে। প্রতিটি টুর্নামেন্ট, প্রতিটি সিরিজে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জও থাকবে এবং সুযোগও থাকবে নিজেদের সেরাটা দেখানোর। কারণ, আমাদের সম্ভাবনা আছে। সেটা যদি পারফর্মে রূপান্তরিত করতে পারি, সে ক্ষেত্রে আমরাই বেশি লাভবান হব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা যত বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে পারব, আমাদের সুযোগ তত বাড়তে থাকবে। 

প্রশ্ন: ঘরের মাঠে খেলা, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। নিজেদের ফেবারিট মনে করছেন কি না?

জ্যোতি: কোন দল কোন অবস্থানে আছে, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি না। আমাদের দল যে ভালো অবস্থানে আছে, সবাই দলের জন্য ভালো করতে উন্মুখ। দেখা গেল একদিন কেউ ক্লিক করেনি, আরেকজন সেটা পুষিয়ে দিচ্ছে। দলের জন্য এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই ঘরের মাঠে খেলার একটা সুবিধা থাকে। মানুষের প্রত্যাশা কিন্তু আমাদের প্রতি এখন অনেক বেশি। একটা সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের হাত ধরে (২০১৮ এশিয়া কাপ), সেটা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি...। এটা সম্ভব হবে, যদি আমরা দল হিসেবে খেলতে পারি। এবং সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখতে পারে, সম্ভব। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়, আমরা যদি ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে পারি, আমরা যদি আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, যারা রানের মধ্যে আছে তারা যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে, বোলাররা তো সব সময় দলের জন্য সর্বোচ্চ সমর্থন দিয়ে যায়। সবকিছু মিলিয়ে দল হিসেবে খেললে ফাইনালের পথে এগোনো সহজ হবে।

প্রশ্ন: প্রত্যাশার কথা বলছিলেন, এই মুহূর্তে সেটার চাপ কতটা অনুভব হচ্ছে?

জ্যোতি: সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ হিসেবে আমার কাছে মনে হয় প্রত্যাশা কখনো চাপ হতে পারে না। মানুষ প্রত্যাশা করে, কারণ তারা আমাদের প্রতি আত্মবিশ্বাসী তাই। সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশাই আমাদের কাছে এখন শক্তি। মানুষ বুঝতে পারছে যে আমরা ভালো করতে পারি, আমাদের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায়। মানুষ তাই প্রত্যাশা করছে। এটাকে আমরা আমাদের শক্তি ধরে নিয়ে এগোচ্ছি।

প্রশ্ন: বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরেই এশিয়া কাপের প্রস্তুতিতে নেমে পড়তে হলো। হাতে একেবারেই সময় নেই। টানা খেলার ক্লান্তি নিশ্চয়ই আছে?

জ্যোতি: দেখুন, একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটাই আমার দায়িত্ব। দল ও দেশকে সার্ভিস দিয়ে যাওয়া। আসলে নিজেরাই চাইতাম আমরা যেন আরও বেশি ম্যাচ পাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত সময় পার করি। এখন সেটাই কিন্তু হচ্ছে। অবশ্যই শারীরিক সামর্থ্যের একটা বিষয় আছে। অনেক সময় ক্লান্তি বোধ হয়। তা ছাড়া পরিবার থেকে অনেক দিন দূরে থাকতে হয়। এর পরও কিন্তু আমরা দল হিসেবে খুব আনন্দিত। ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ খেলেছি। আগে আফসোস হতো, আমরা খুব বেশি ম্যাচ পাই না। সেই অভিযোগ আর থাকছে না। আমরা বেশ রোমাঞ্চিত।

প্রশ্ন: দল দারুণ ছন্দে থাকার পরও কোনো চিন্তার জায়গা রয়েছে বলে মনে হয়?

জ্যোতি: কোনো দলই তো পরিপূর্ণ হয় না, কোনো খেলোয়াড়ও পরিপূর্ণ হয় না। কোনো না কোনো ঘাটতি থেকেই যায়। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে যেভাবে খেলে এসেছি, সেমিফাইনালে আরেকটু ভালো খেলতে পারতাম। ফাইনালে রান আরেকটু বেশি করতে পারতাম। আমি নিজেও রান করতে পারিনি বা টপ অর্ডারে তেমন রান হয়নি। একই সঙ্গে আমরা ফারজানা হক পিংকিকে মিস করেছি, জাহানার আপুর মতো খেলোয়াড় চোটে ছিল, ফাহিমা খাতুন ছিল না। কিন্তু এটাও সত্যি, যারা ছিল, তারা চেষ্টা করেছে। টি-টোয়েন্টিতে কিন্তু সবার খেলা লাগে না। তিন-চারজন ব্যাটার আর দু-তিনজন বোলার ভালো বোলিং করলে হয়ে যায়, আর পুরো দল যদি ভালো ফিল্ডিং করে। আমার কাছে মনে হয়, ভালোর কোনো শেষ নেই আসলে। বাছাইয়ে আমরা যে পারফর্ম করেছি, সেটা থেকে যদি আমরা আর ১০-২০ শতাংশ ভালো ক্রিকেট এশিয়া কাপে খেলতে পারি, সব ম্যাচে আমাদের ভালো সুযোগ তৈরি করে দেবে। 

প্রশ্ন: নির্দিষ্ট করে কোনো দলকে মনে হচ্ছে হারানো কঠিন?

জ্যোতি: না। প্রতিপক্ষকে আগে থেকে এ রকম ভেবে ফেললে তো আগেই হেরে গেলেন।

প্রশ্ন: এফটিপিতে অনেক ম্যাচ আছে। সামনে অনেক ব্যস্ত সময় পার করতে হবে। এটা নিশ্চয়ই অনেক সহায়তা করবে উন্নতি করতে?

জ্যোতি: অবশ্যই। আমরা যখন (গত বছর) ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে যাই, তখন আমাদের উদ্দেশ্য ছিল মূল পর্বে ওঠা। কারণ, বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলা মানেই আইসিসি এফটিপিতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করা। জানতাম, সেটা করতে পারলে ভবিষ্যতে আমরা অনেক ম্যাচ-সিরিজ পাব। এটা আমাদের ক্রিকেটীয় দক্ষতা যেমন বাড়াবে, দলের সবার মনোবল চাঙা করবে ও ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বদলে দেবে। আপনি যত বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন, আপনার উন্নতিও (অবস্থানও) তত বেশি বুঝতে পারবেন। আর খেলোয়াড় হিসেবে যদি বলি, তাহলে কারও সামর্থ্য কিন্তু তিন ম্যাচেই বুঝতে পারবেন না। দেখা যাচ্ছে, তিন ম্যাচের দুটিতেই ক্লিক করছে না। হয়তো শেষ ম্যাচে গিয়ে ভালো করছে। এরপর আবার বিরতি। লম্বা সময় খেলা নেই। এতে করে কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেই খেলোয়াড়ের নিজেকে মেলে ধরতে অনেক বেশি সময় লাগে। এখন বেশি ম্যাচ থাকায় সবাই আরও বেশি সুযোগ পাবে। এটা আমাদের জন্য দারুণ ব্যাপার। আমাদের দলে অনেক বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে, যারা যেকোনো পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারে; বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে পারফর্ম করতে পারে। কিন্তু শুধু আন্তর্জাতিক ম্যাচ কম খেলার জন্য আমরা আড়ালে পড়ে যাই এবং সুযোগ কম পাই। সব মিলিয়ে এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। 

প্রশ্ন: আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের মধ্যে মানসিকতার বেশ একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। অধিনায়ক হিসেবে আপনি দলে কেমন পরিবর্তন লক্ষ করছেন?

জ্যোতি: আমার সবচেয়ে বড় ভালো লাগার ব্যাপার হচ্ছে, দলে সবাই পারফর্ম করতে চায়। সবাই সুযোগের সদ্ব্যবহারের অপেক্ষায় থাকে যে কখন দলের জন্য পারফর্ম করব। আরেকটা বিষয়, প্রতিদিন কিন্তু একজন ভালো করবে না। চেষ্টা করি সবাইকে মানসিকভাবে চাঙা রাখার। চেষ্টা করি যে আজ আমার দিন নয়, তোমার দিন। তুমি ভালো খেলবা। যখন আপনার দলের কেউ এসে পিঠে হাত দিয়ে বলবে, এই আত্মবিশ্বাসের হাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বৃষ্টিতে ম্যাচ বাতিলের আগে জ্যোতিদের হতাশার ব্যাটিং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আগে মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন মারুফা আক্তাররা। ছবি: আইসিসি
বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আগে মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন মারুফা আক্তাররা। ছবি: আইসিসি

বৃষ্টি বাগড়া দিল কয়েকবার। তাতে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ২৭ ওভারে। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বৃষ্টির মতো আরেকটি দৃশ্য খুব পরিচিত হয়ে উঠেছে। সেটা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের হতাশা। এমনকি শেষ ম্যাচেও তা এড়ানো গেল না।

মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১১৯ রান করেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। দুই অঙ্কের ছোঁয়া পেয়েছেন মাত্র ৪ ব্যাটার। প্রথম ওভারে সুমাইয়া আক্তারকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রেনুকা সিং। আরেক ওপেনার রুবাইয়া হায়দারও (১৩) থিতু হতে পারেননি।

তিনে নেমে বড় ইনিংস খেলার সুবাস দিচ্ছিলেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। কিন্তু দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রানে ফিরতে হয় তাঁকে। সোবহানা মোস্তারি এসে আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন। তাঁর ২১ বলে ৪ চারে ২৬ রানের ইনিংস থামান রাধা যাদব। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। দিন শেষে অলআউট না হওয়ার স্বস্তি নিয়ে শেষ হয় ইনিংস।

ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন রাধা যাদব। দুটি উইকেট শিকার শ্রী চারানির। ডিএলএস মেথডে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৬ রান। যে লক্ষ্যে ব্যাট করে ৮.৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান করে ভারত।। এরপর বৃষ্টি আবার বাগড়া দলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। ম্যাচ বাতিল হওয়ার আগে স্মৃতি মান্ধনা ৩৪ ও আমানজোতে কৌর ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

ম্যাচ বাতিল হওয়ায় ৭ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করলেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালেম উঠল ভারত। ভারতের আগে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এমবাপ্পে-বেলিংহামের গোলে রিয়ালের এল ক্লাসিকো জয়

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১১
গোলের পর এমবাপ্পেকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি
গোলের পর এমবাপ্পেকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

খেলার শেষ মিনিটে পেদ্রিকে রেফারি লাল কার্ড দেখানোর সঙ্গে সঙ্গেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল দুই দলের ডাগআউট। খেলা শেষেও তর্কে জড়িয়ে পড়েন খেলোয়াড়েরা। আপনি হয়তো বলতে পারেন এ আর নতুন কি! এল ক্লাসিকো বলে কথা। মাঠের লড়াইয়ে যেখানে থাকে যুদ্ধের ভাব। থিয়েটারে রিলিজ করলেও বক্স অফিসে সহজেই হিট তকমা পেয়ে যাবে এই ম্যাচ।

তবে সেই সিনেমায় তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন কেবল রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরাই। আজ বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে তাদের জয় উপহার দিয়েছেন এমবাপ্পে-বেলিংহামরা। তাও টানা ৪ এল ক্লাসিকো হারের পর।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পেনাল্টি পায় রিয়াল। কিন্তু ভিএআরে দেখা যায় লামিনে ইয়ামাল নন উল্টো ভিনিসিয়ুস জুনিয়রই ফাউল করে বসেন। ১২ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে দারুণ এক ভলিতে কাঁপান জাল। অফসাইডের সংকেত নিয়ে এবারও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভিএআর।

২২ মিনিটে রিয়ালকে আর কোনোকিছুই আটকাতে পারেনি। আটকাতে পারেনি এমবাপ্পেকেও। জুড বেলিংহামের দুর্দান্ত এক থ্রু বল খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। সামনে যখন শুধু গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। তখন এমবাপ্পে আর ভুল করতে পারেন কী করে! অসাধারণ শটে বল জালে ঠেলে সোজা চলে যান উদ্যাপনে। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে টানা ৪ ম্যাচে গোল করা তৃতীয় ফুটবলার তিনি।

এরপর বল বার্সার দখলে বেশি থাকলেও রিয়াল শানাচ্ছিল একের পর এক আক্রমণ। আর বার্সা ছিল রিয়ালের একটি ভুলের অপেক্ষায়। সেই ভুল করে বসেন আর্দা গুলের। বক্সের সামনে পেদ্রির কাছে বল হারান তিনি। সেখান থেকে আলেহান্দ্রো বালদে বল পেয়ে তা বাড়ান মার্কাস রাশফোর্ডকে। তাঁর কাটব্যাক থেকে সুযোগ সন্ধানী ফরোয়ার্ডের মতোই জাল খুঁজে নেন ফেরমিন লোপেস। সমতায় ফেরার স্বস্তি নিয়ে বার্সা বিরতিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তখনো খুব একটা বেশি ছিল। রিয়াল বল পেলেই যে ছুটছিল আক্রমণের দিকে। ৪২ মিনিটে স্বাগতিকদের ফের এগিয়ে দেন বেলিংহাম। ২১ শতাব্দীতে এল ক্লাসিকোর এক ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবরার তিনি (২২ বছর ১১৯ দিন)। ছাড়িয়ে গেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে (২২ বছর ২৬৭ দিন)।

বিরতির পর ম্যাচের ফিরে আসতে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সা। রিয়ালের রক্ষণ দুর্গ ভেঙে তেমন কোনো সুযোগই পাচ্ছিল না। তাদের হাইলাইন ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে এমবাপ্পেও বেশ কিছু পাল্টা আক্রমণে ত্রাস সৃষ্টি করেন। কিন্তু একটি সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি। এমনকি পেনাল্টিও না। ৬২ মিনিটে স্পটকিক থেকে তাঁর নেওয়া শট খুব সহজেই ঠেকান সেজনি। যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে অরেলিয়ে চুয়োমেনিকে ফাউল করে পেদ্রি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে নামে বার্সা। হতাশার সঙ্গে তাই ক্ষোভ নিয়েও মাঠ ছাড়তে হলো তাদের।

এই জয়ে ১০ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগায় শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল রিয়াল। ৫ পয়েন্ট দূরে থেকে দুইয়ে বার্সা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাফুফের সভা হয়েছে, কিন্তু ‘আলোচনা’ হয়নি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ২৩
বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির ৫ম সভা। ছবি: বাফুফে
বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির ৫ম সভা। ছবি: বাফুফে

এক বছর পূর্তিতে আজ বাফুফে ভবনে হয়েছে বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির পঞ্চম সভা। যেখানে আসেনি উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত। বেলা ২টায় শুরু হওয়া সভার চার ঘণ্টায় এক বছর নারী ফুটবল দলের সাফল্য ও গঠনতন্ত্রের সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অথচ অ্যাজেন্ডা থাকলেও বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে আলোচনাই হয়নি।

সভা শেষে বাফুফের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বে বাফুফে নির্বাহী কমিটি এক বছর অতিক্রম করল। আমরা এক বছর অনেক ফুটবল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছি। নারী দল সাফ চ্যাম্পিয়ন, প্রথমবারের মতো নারী দলের এশিয়া কাপের মূল পর্বে কোয়ালিফাই করেছে, ফুটসাল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলেছে, হামজা-শমিতের মতো ফুটবলার বাংলাদেশের হয়ে খেলছে, এ রকম অনেক সফলতাই আমাদের এসেছে। ব্যর্থতা থাকলে সেটা আপনারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

নারী ফুটবল দল সাফ জেতার পর দেড় কোটি টাকা বোনাসের ঘোষণা দেয় বাফুফে। সেই অর্থ এখনো দেওয়া হয়নি। বাবু বলেন, ‘আজকে এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা সামনে আলোচনার মাধ্যমে এটা তাদের প্রদানের ব্যবস্থা করব।’

সবশেষ দুই ম্যাচে হংকংয়ের কাছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে জিততে পারেনি পুরুষ ফুটবল দল। সেই প্রসঙ্গ কেউ তোলেননি বলে দাবি বাবুর, ‘না, আমাদের এ রকম আলোচনা হয়নি। হলে তো অবশ্যই বলতাম। জাতীয় দলের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। এটি জাতীয় দল কমিটির বিষয়, সভাপতি নিজেই এটার চেয়ারম্যান। এই (আয়-ব্যয়ের) বিষয়টি আলোচনায় ওঠেনি। গঠনতন্ত্র ও এক বছরের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক আলোচনা হওয়ায় দুটি বিষয় আলোচনা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘরের মাঠে খেলতে না পারার আক্ষেপ বাংলাদেশ কোচের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অনুশীলনে ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে
অনুশীলনে ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে

ফুটবলে দিন শেষে ফলই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলারের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল আজ থাইল্যান্ডকে কি হারাতে পারবেন ঋতুপর্ণা-আফঈদারা? জবাবে বাটলার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ শেষ কবে জিতেছিল?

দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। হেরেছে ৩-০ গোলে। কাল লড়াইটা তাই ঘুরে দাঁড়ানোর। ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়।

খেলায় যেকোনো দলই জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে। তবে প্রতিপক্ষ যখন র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা থাইল্যান্ড। দুবার বিশ্বকাপ খেলা দলটির বিপক্ষে তখন বাটলারও খুব একটা উচ্চাশা দেখার সুযোগ পান না। আগের ম্যাচের ভুল শুধরে স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জে ফেলার সাহস অবশ্য তিনি করছেন। আজ বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমরা সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। কিছু কিছু জায়গা ঘাটতি রয়েছে আমাদের, সেটা পূরণ করতে হবে। আগের ম্যাচে আমরা মৌলিক কিছু ভুল করেছি—যেমন প্রথম ৪৫ সেকেন্ডে গোল হজম করা এবং তা সবসময় পাহাড়সম চাপ বয়ে আনে।’

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সবশেষ খেলেছে গত বছরের জুনে চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে। এরপর সবগুলো ম্যাচ শুধু দেশের বাইরে খেলেছে। বাটলারও খানিকটা আক্ষেপ ভরা কণ্ঠে বলেন, ‘খেলার মধ্যে অনেক কিছুই থাকে, যা ফলাফলে প্রভাব ফেলে। আমি কাউকে দোষ দিতে পছন্দ করি না এবং অজুহাতও দিই না। তবে দেশের বাইরে জেতার চেয়ে ঘরের মাঠে ম্যাচ জেতা অনেক সহজ।’

প্রথম ম্যাচে হারের পর ফুটবলারদের আচরণ ও মানসিকতা ক্ষুব্ধ করেছিল বাটলারকে, ‘কয়েকজনের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলেছি। তাদের অ্যাপ্রোচ ও মাইন্ডসেট নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বিশেষ করে এক-দুজন আছে, যাদের আমি সত্যিকারের ম্যাচ উইনার মনে করি এবং আগের ম্যাচে তারা তাদের সামর্থ্যটা মেলে ধরতে পারেনি।’

থাইল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে বাটলার বলেন, ‘আমরা থাইল্যান্ডের লেভেলে নেই। তারা খুবই ভালো দল এবং সেটা তারা দেখাবেও। তারা সম্ভবত পুরো ভিন্ন এক দল মাঠে নামাবে (আজ)। অনেক সময় বেঞ্চ দেখে দলের শক্তি বোঝা যায়। তাদের বেঞ্চ দেখে মনে হলো এখানে আরকটা দল বসে আছে। তাই আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে।’

এই সফরের আগে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচই খেলেছে বাংলাদেশ। এক যুগ আগের ম্যাচে হারতে হয়েছিল ৯-০ গোলে। বাটলার বলেন, ‘যদি আমরা মানদণ্ড দাঁড় করানোর ও আরও পেশাদার হওয়ার কথা বলি, বড় কিছু কল্পনা করার আগে আমাদের সেই জায়গায় পৌঁছাতে হবে। যেখানে আমরা থাইল্যান্ডের মতো জায়গায় এসে ম্যাচ জেতার কথা ভাবতে পারি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা একটা মোমেন্টাম তৈরি করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত