Ajker Patrika

বাংলাদেশ নয়, প্রবল চাপে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২২, ১২: ৪৫
বাংলাদেশ নয়, প্রবল চাপে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা

একটি টেস্ট সিরিজে ডুয়ান অলিভিয়ার-লুথো সিপামলার মতো অখ্যাতরা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান ফাস্ট বোলার! পেস বিভাগে তাঁদের সঙ্গী লিজাড উইলিয়ামস, গ্লেনটন স্টারম্যান ও ডারিন ডুপাভিলন মতো অচেনারা। 

নামগুলো উচ্চারণ করতেই যখন বেগ পেতে হচ্ছে, তখন তাঁদের না চেনাটাই স্বাভাবিক। অথচ এই বোলিং লাইনআপ নিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা! 

‘খেলতে নামছে’ বলার চেয়ে ‘নামতে বাধ্য হচ্ছে’ বলাই বোধ হয় শ্রেয়। ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল, ভারনন ফিলান্ডার পরবর্তী যুগে প্রোটিয়াদের পেস আক্রমণভাগের মূল অস্ত্র বিবেচনা করা হয় কাগিসো রাবাদা, লঙ্গি এনগিডি ও এনরিখ নর্তিয়েকে। তরুণ মার্কো ইয়ানসেনও হয়ে উঠছেন ভরসার আরেক নাম। এ বছর এখন পর্যন্ত টেস্ট উইকেট শিকারিদের শীর্ষে রাবাদা ও ইয়ানসেন (দুজনই নিয়েছেন ২৩ উইকেট)। তাঁদের সবাই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার সাগরে ডুব দিতে যাওয়ায় ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সিরিজে পাচ্ছে না প্রোটিয়ারা। 

দলটির টেস্ট অধিনায়ক ডিন এলগার তাই মাস চারেক আগে রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়েরা জানে না তাদের প্রশাসক কারা।’ নিজেদের ক্রিকেটারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আইপিএল যে প্রোটিয়া ক্রিকেটে ‘দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা’ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে, সেটা আঁচ করতে পেরেই এলগারের এমন মন্তব্য। 

শুধু বোলিংই নয়; ব্যাটিং দৈন্যও স্পষ্ট। পরিবারকে সময় দেওয়ার কথা বলে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানো কুইন্টন ডি কক আদতে যে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার সময় বের করতে চেয়েছেন, সেটি না বললেও চলে। জাতীয় দল ছেড়ে আইপিএল খেলতে গেছেন টপ অর্ডার ব্যাটার এইডেন মার্করাম ও মিডল অর্ডারের অন্যতম আস্থা রাসি ফন ডার ডুসেনও। 

আইপিএলের কশাঘাতে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন মূল খেলোয়াড়দের হারিয়ে দিশেহারা, বাংলাদেশ তখন পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই নামছে। পারিবারিক কারণে দেশে ফেরা সাকিব আল হাসান ডারবানে প্রথম টেস্ট না খেললেও দেখা যেতে পারে শেষে টেস্টে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অনিয়মিত হয়ে পড়া সাকিবকে ছাড়া টেস্ট খেলে অবশ্য অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। 

জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ও বাংলাদেশকে বাড়তি রসদ জোগাবে। ওই টেস্টে বাংলাদেশের নায়ক বনে গিয়েছিলেন পেসার ইবাদত হোসেন। এবার তিনি যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নায়ক তাসকিন আহমেদকে। রাবাদা-এনগিডিরা জাতীয় দল ছেড়ে আইপিএলকে বেছে নিলেও তাসকিন প্রস্তাব পেয়েও নাকচ করে দিয়েছেন। দেশের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসাও ড্রেসিংরুমে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে যথেষ্ট। 

ওয়ানডে সিরিজ খোয়ানো দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজেও ব্যাকফুটে থাকার কারণ আছে আরেকটি। উইকেটগুলো স্বাগতিকদের নয়; বরং সফরকারী দলকে সহায়তা করছে বেশি। প্রথম টেস্টের ভেন্যু ডারবানের কিংসমিডে সর্বশেষ ১০ টেস্টের মাত্র দুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় সেটিরই জানান দিচ্ছে। কিংসমিডের পেস-স্বর্গে ইদানীং স্পিনটাও ভালো ধরছে। 

অধিনায়ক এলগার অবশ্য এসব নিয়ে অজুহাত দাঁড় করাতে চান না, ‘সূচি ও ভেন্যু নির্ধারণের ব্যাপারটি আমার হাতে নেই। আমাকে যে দল দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়েই লড়তে হবে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।’ 

উইকেট নিয়ে এলগারের ভাষ্য, ‘আমরা পিচে ঘাস রাখতে বলেছি। পানি ঢালাতে ঘাস একটু দ্রুত বেড়েছে। পিচ নিচু ও মন্থর হলেও অসুবিধা নেই। খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আমি তাদের (বাংলাদেশের) চেয়ে বড় দলের বিপক্ষে আরও কঠিন কন্ডিশনে খেলেছি।’ 

এলগার যতই বলুন না কেন, বাস্তবতা বিবেচনায় এগিয়ে রাখতে হবে বাংলাদেশকেই। আর এটা কোনো মজা নয়!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত