অনলাইন ডেস্ক
বিশেষ ধরনের জেনেটিক মিউটেশন বা জিনগত পরিবর্তনের কারণে কিছু মানুষ দিনে মাত্র চার ঘণ্টা ঘুমিয়েই পুরোপুরি সুস্থ ও সতেজ থাকেন এবং স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। এই বিরল মিউটেশন কীভাবে ঘুমের পরিমাণ কমিয়েও শরীরের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (সান ফ্রান্সিসকো) বিজ্ঞানী ও গবেষক ইয়িং-হুই ফু এবং তাঁর সহকর্মীরা সম্প্রতি মানবদেহে এই নতুন মিউটেশন শনাক্ত করেছেন। তারা এই মিউটেশনের নাম দিয়েছেন ‘এসআইকে৩–এন৭৮৩ওয়াই’। এই মিউটেশনটি ‘সুপার স্লিপার’ (কম ঘুমিয়েও সুস্থ বা সতেজ থাকা মানুষ) মানুষের শরীরে পাওয়া যায়।
পরীক্ষাগারে তৈরি করা বিশেষ প্রজাতির ইঁদুরের শরীরে এই মিউটেশনটি নিয়ে পরীক্ষা চালান গবেষকেরা। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, এই ধরনের জিনগত পরিবর্তনের জন্য ইঁদুরগুলো সাধারণ ইঁদুরের তুলনায় কম ঘুমায়।
নতুন শনাক্ত হওয়া মিউটেশনটি এমন কয়েকটি জিনগত পরিবর্তনের একটি, যেগুলোর সঙ্গে কম সময় ঘুমানোর প্রবণতার যোগসূত্র রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়েও কম ঘুমিয়ে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ঘুমজনিত সমস্যার আরও কার্যকর চিকিৎসা উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণাপত্রটির সহ–লেখক ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সান ফ্রান্সিসকো)-এর স্নায়ুবিজ্ঞানী ও জেনেটিকবিদ ইয়িং-হুই ফু বলেন, ‘আমরা যখন ঘুমাতে যাই, তখনো আমাদের শরীর কাজ করে যায়। সেসময় শরীর দূষিত পদার্থ বের করে ও ক্ষত মেরামত করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘুমানোর সময় শরীর যেসব কাজ করে, সেসময়ে স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো মানুষদের শরীর সেই কাজগুলো আরও ভালোভাবে করতে পারে।’
ঘুমের অভাবে নানা রকম নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়—অলসতা অনুভব করা, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়া, এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। বয়সের সঙ্গে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কিছুটা পরিবর্তিত হয়। তবে বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুস্থভাবে চলার জন্য প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে যাদের স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানোর শারীরিক বৈশিষ্ট্য আছে, তারা কম ঘুমেই ভালোভাবে কাজ করতে পারেন।
স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো ব্যক্তি প্রতি রাতে প্রায় চার থেকে ছয় ঘণ্টা ঘুমেই ঠিকঠাকভাবে দিন পার করতে পারেন। গবেষণা অনুযায়ী, তারা শুধু কম ঘুমেই ভালোভাবে চলতে পারেন না, বরং স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ঘুমালেই তারা খারাপ অনুভব করেন।
পূর্বের গবেষণায় স্বল্প ঘুমের সঙ্গে যুক্ত চারটি জিন এবং সেই জিনগুলোর মধ্যে পাঁচটি সংশ্লিষ্ট জিনগত পরিবর্তন (মিউটেশন) শনাক্ত করা হয়েছে। নতুনভাবে যে জিনগত পরিবর্তনটি চিহ্নিত হয়েছে, তা একটি পঞ্চম জিন—‘এসআইকে৩ ’–কে প্রভাবিত করে। এই জিনটিকে আগেও ঘুমের প্রবণতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানা গিয়েছিল। গবেষকেরা এই পরিবর্তনটি ল্যাবের ইঁদুরদের শরীরে প্রয়োগ করে পরীক্ষা করেন। তারা দেখেন, যেসব ইঁদুরের শরীরে এই পরিবর্তন ছিল, তারা অন্যদের চেয়ে গড়ে প্রায় ৩১ মিনিট কম ঘুমায়।
এরপর গবেষকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে ইঁদুরদের কিছু সময় ঘুমাতে না দিয়ে জাগিয়ে রাখেন। এ জন্য তারা ধীরে ধীরে ইঁদুরগুলোকে নাড়াচাড়া করায়। এর ফলে দেখা যায়, জিন পরিবর্তিত ইঁদুরগুলো আরও কম ঘুমায়—প্রায় ৫৪ মিনিট কম।
ইঁদুর সাধারণত দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা ঘুমায়, যা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। তাই এই নতুন জিনগত পরিবর্তনের ফলে ঘুম কমে যাওয়ার পরিমাণ—সর্বোচ্চ ৫৪ মিনিট। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ কম ঘুমায়, তার চেয়েও কম। গবেষকেরা বলেন, এর একটি কারণ হতে পারে ইঁদুরদের ঘুম সাধারণত মানুষের তুলনায় বেশি ভাঙা ভাঙা হয়ে থাকে, অথবা যেসব ইঁদুর গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে, তারা ইনব্রিড (অন্তঃ প্রজনন) হওয়ায় ঘুমের আচরণে প্রভাব পড়েছে।
স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমিয়েও সচল থাকতে পারা ব্যক্তিদের জিনগত বৈশিষ্ট্য ও তাদের এই ‘ঘুম সম্পর্কে গবেষকদের এখনো অনেক কিছু জানার বাকি আছে। তবে এই নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, ‘এসআইকে৩’ নামক জিনটি ঘুমের মান ও কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি সোমবার (৫ মে) ‘প্রসেডিনংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ (পিএনএএস) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
বিশেষ ধরনের জেনেটিক মিউটেশন বা জিনগত পরিবর্তনের কারণে কিছু মানুষ দিনে মাত্র চার ঘণ্টা ঘুমিয়েই পুরোপুরি সুস্থ ও সতেজ থাকেন এবং স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। এই বিরল মিউটেশন কীভাবে ঘুমের পরিমাণ কমিয়েও শরীরের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (সান ফ্রান্সিসকো) বিজ্ঞানী ও গবেষক ইয়িং-হুই ফু এবং তাঁর সহকর্মীরা সম্প্রতি মানবদেহে এই নতুন মিউটেশন শনাক্ত করেছেন। তারা এই মিউটেশনের নাম দিয়েছেন ‘এসআইকে৩–এন৭৮৩ওয়াই’। এই মিউটেশনটি ‘সুপার স্লিপার’ (কম ঘুমিয়েও সুস্থ বা সতেজ থাকা মানুষ) মানুষের শরীরে পাওয়া যায়।
পরীক্ষাগারে তৈরি করা বিশেষ প্রজাতির ইঁদুরের শরীরে এই মিউটেশনটি নিয়ে পরীক্ষা চালান গবেষকেরা। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, এই ধরনের জিনগত পরিবর্তনের জন্য ইঁদুরগুলো সাধারণ ইঁদুরের তুলনায় কম ঘুমায়।
নতুন শনাক্ত হওয়া মিউটেশনটি এমন কয়েকটি জিনগত পরিবর্তনের একটি, যেগুলোর সঙ্গে কম সময় ঘুমানোর প্রবণতার যোগসূত্র রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়েও কম ঘুমিয়ে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ঘুমজনিত সমস্যার আরও কার্যকর চিকিৎসা উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণাপত্রটির সহ–লেখক ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সান ফ্রান্সিসকো)-এর স্নায়ুবিজ্ঞানী ও জেনেটিকবিদ ইয়িং-হুই ফু বলেন, ‘আমরা যখন ঘুমাতে যাই, তখনো আমাদের শরীর কাজ করে যায়। সেসময় শরীর দূষিত পদার্থ বের করে ও ক্ষত মেরামত করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘুমানোর সময় শরীর যেসব কাজ করে, সেসময়ে স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো মানুষদের শরীর সেই কাজগুলো আরও ভালোভাবে করতে পারে।’
ঘুমের অভাবে নানা রকম নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়—অলসতা অনুভব করা, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়া, এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। বয়সের সঙ্গে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কিছুটা পরিবর্তিত হয়। তবে বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুস্থভাবে চলার জন্য প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে যাদের স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানোর শারীরিক বৈশিষ্ট্য আছে, তারা কম ঘুমেই ভালোভাবে কাজ করতে পারেন।
স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো ব্যক্তি প্রতি রাতে প্রায় চার থেকে ছয় ঘণ্টা ঘুমেই ঠিকঠাকভাবে দিন পার করতে পারেন। গবেষণা অনুযায়ী, তারা শুধু কম ঘুমেই ভালোভাবে চলতে পারেন না, বরং স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ঘুমালেই তারা খারাপ অনুভব করেন।
পূর্বের গবেষণায় স্বল্প ঘুমের সঙ্গে যুক্ত চারটি জিন এবং সেই জিনগুলোর মধ্যে পাঁচটি সংশ্লিষ্ট জিনগত পরিবর্তন (মিউটেশন) শনাক্ত করা হয়েছে। নতুনভাবে যে জিনগত পরিবর্তনটি চিহ্নিত হয়েছে, তা একটি পঞ্চম জিন—‘এসআইকে৩ ’–কে প্রভাবিত করে। এই জিনটিকে আগেও ঘুমের প্রবণতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানা গিয়েছিল। গবেষকেরা এই পরিবর্তনটি ল্যাবের ইঁদুরদের শরীরে প্রয়োগ করে পরীক্ষা করেন। তারা দেখেন, যেসব ইঁদুরের শরীরে এই পরিবর্তন ছিল, তারা অন্যদের চেয়ে গড়ে প্রায় ৩১ মিনিট কম ঘুমায়।
এরপর গবেষকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে ইঁদুরদের কিছু সময় ঘুমাতে না দিয়ে জাগিয়ে রাখেন। এ জন্য তারা ধীরে ধীরে ইঁদুরগুলোকে নাড়াচাড়া করায়। এর ফলে দেখা যায়, জিন পরিবর্তিত ইঁদুরগুলো আরও কম ঘুমায়—প্রায় ৫৪ মিনিট কম।
ইঁদুর সাধারণত দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা ঘুমায়, যা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। তাই এই নতুন জিনগত পরিবর্তনের ফলে ঘুম কমে যাওয়ার পরিমাণ—সর্বোচ্চ ৫৪ মিনিট। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমানো ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ কম ঘুমায়, তার চেয়েও কম। গবেষকেরা বলেন, এর একটি কারণ হতে পারে ইঁদুরদের ঘুম সাধারণত মানুষের তুলনায় বেশি ভাঙা ভাঙা হয়ে থাকে, অথবা যেসব ইঁদুর গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে, তারা ইনব্রিড (অন্তঃ প্রজনন) হওয়ায় ঘুমের আচরণে প্রভাব পড়েছে।
স্বাভাবিকভাবে কম ঘুমিয়েও সচল থাকতে পারা ব্যক্তিদের জিনগত বৈশিষ্ট্য ও তাদের এই ‘ঘুম সম্পর্কে গবেষকদের এখনো অনেক কিছু জানার বাকি আছে। তবে এই নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, ‘এসআইকে৩’ নামক জিনটি ঘুমের মান ও কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি সোমবার (৫ মে) ‘প্রসেডিনংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ (পিএনএএস) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
চাঁদে যৌথভাবে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে চুক্তি করেছে রাশিয়া ও চীন। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ব্যবহার করা হবে তাদের পরিকল্পিত ‘ইন্টারন্যাশনাল লুনার রিসার্চ স্টেশন’ বা আইএলআরএস চালাতে। দুই দেশের মধ্যে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে—বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০৩৬ সালের মধ্যে
৩ ঘণ্টা আগেজীবন বা প্রাণ সত্যিই ‘জ্যোতির্ময়’ বা আলোক বিচ্ছুরণ করে। এমনটাই বলছেন কানাডার ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল অব কানাডার গবেষকেরা। ইঁদুর ও দুটি ভিন্ন প্রজাতির গাছের পাতা নিয়ে করা এক অসাধারণ পরীক্ষায় ‘বায়োফোটন’ নামক এক রহস্যময় ঘটনার সরাসরি প্রমাণ মিলেছে। দেখা গেছে, মৃত্যুর পর এই আল
২০ ঘণ্টা আগেপূর্বের ধারণার চেয়ে অনেক অনেক আগেই হয়তো মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে। এমনটাই জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের র্যাডবাউড ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা জার্নাল অব কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপারটিকাল ফিজিক্স–নামের গবেষণাপত্রে এই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে।
১ দিন আগেবিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে...
২ দিন আগে