গিরগিটি বাংলাদেশের অনেক এলাকায় ‘রক্তচোষা’ নামে পরিচিত এক অতি নিরীহ সরীসৃপ। এরা ইচ্ছে মতো ত্বকের রং পরিবর্তন করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে এদের নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণাও আছে। এ কারণে এদের দেখলেই মানুষ মেরে ফেলতে উদ্যত হয়।
অথচ এই রং পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল। অত্যন্ত ভিতু ও লাজুক প্রকৃতির এই প্রাণী নিজেকে পরিবেশের সঙ্গে মিশিয়ে রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু এই রং পরিবর্তন এরা কীভাবে করে?
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করতেন, গিরগিটি অক্টোপাসের মতো রং পরিবর্তন করে। তবে সম্প্রতি জীববিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রক্রিয়া। অনেকেই মনে করেন, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য গিরগিটি রং পরিবর্তন করে। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো! এরা বরং নিজেদের আলাদা করতেই রং পরিবর্তন করে। আর স্বাভাবিক ও স্বস্তিদায়ক অবস্থায় এরা বরং প্রাকৃতিকভাবেই পরিবেশে সঙ্গে মিশে যায়। এদের সাধারণ সবুজ রং প্রকৃতির সবুজ পাতার সঙ্গে মিশে যায়।
ওকল্যান্ড চিড়িয়াখানায় ক্যালিফোর্নিয়ার কনজারভেশন সোসাইটির মার্কেটিং ম্যানেজার ডেনিয়েল ফ্লিন বলেন, গিরগিটির রং পরিবর্তনকারী বৈশিষ্ট্যগুলো এদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে না। বরং এদের স্বাভাবিক, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ অবস্থাই এদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে। এরা পরিবেশের সঙ্গে মিশতে নিজের রঙের পরিবর্তন করে না বরং নিজেদের আলাদাভাবে তুলে ধরতে ত্বকের রঙের পরিবর্তন করে।
ফ্লিন আরও বলেন, ‘ত্বকের নিচে ইরিডোফোরস নামক স্ফটিক–সদৃশ কোষগুলোর কাঠামোগত পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে এদের রঙের পরিবর্তন হয়। এগুলো আলোর প্রতিসরণ ঘটায়। যখন এরা উত্তেজিত হয়, হুমকি বোধ করে বা সঙ্গীর প্রতি ইতিবাচক বা প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি নেতিবাচকভাবে মনোভাব প্রদর্শন করতে চায়, তখন স্ফটিকগুলো বিকৃত বা সংকুচিত হয়। আর এভাবেই এদের শরীরের রং পরিবর্তন হয়।
২০১৫ সালে নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেন, ত্বকের এই বিশেষ কোষগুলো ছোট আয়নার মতো কাজ করে যা বেছে বেছে আলোক তরঙ্গ প্রতিফলিত করে ও বিভিন্ন রং শোষণ করে।
অনেক প্রাণীই বিভিন্ন রং প্রদর্শন করতে পারে। যেমন—পাখি ও মাছ। সাধারণত দৃশ্যমান আলোর বর্ণালির নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলোকে শোষণ করে বা প্রতিফলিত করে এসব প্রাণীর কোষগুলো বিভিন্ন রং প্রদর্শন করে।
গিরগিটির কোষ অন্য প্রাণীদের তুলনায় ভিন্ন। গিরগিটির ইরিডোফোরস প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট রঙের পরিবর্তে বর্ণালির যেকোনো বা সমস্ত রংকে শোষণ বা প্রতিফলিত করতে পারে।
ফ্লিন আরও বলেন, ‘কিছু প্রজাতি অন্যদের চেয়ে বেশি রং পরিবর্তন করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রাণীর ত্বকের রং হালকা থেকে গাঢ় হয়, অন্যদের আরও প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল রঙে পরিবর্তিত হয়। এই ধরনের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, এদের মধ্যেও প্রচুর বৈচিত্র্য রয়েছে। এরা বিভিন্ন ধরনের রং পরিবর্তন করতে পারে, এমনকি এমন রং ধারণ করতে পারে যা মানুষ খালি চোখে দেখে না!
জীবন্ত গিরগিটির ইরিডোফোরসের ভেতরে ক্ষুদ্র থলিতে রঞ্জক পদার্থ থাকে। কিন্তু যখন গিরগিটির মেজাজ পরিবর্তিত হয়, তখন এর স্নায়ুতন্ত্র এই কোষগুলো সক্রিয় করে, সংকুচিত বা প্রসারিত করে।
গিরগিটি শান্ত থাকলে কোষগুলো কাছাকাছি থাকে ও আলোর ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য (যেমন: নীল) প্রতিফলিত করে। উত্তেজনার সময় কোষগুলোকে পরস্পর থেকে দূরে ঠেলে দেয়, প্রতিটি ইরিডোফোরকে লাল, কমলা এবং হলুদের মতো দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত করতে সক্ষম করে।
এখন মনে আসতে পারে গিরগিটিগুলো শান্ত অবস্থায় নীল রং প্রতিফলিত করে, তাহলে এদের সাধারণ অবস্থায় সবুজ রঙের দেখা যায় কেন? এর জবাবে ফ্লিন বলেন, গিরগিটি শান্ত অবস্থায় সবুজ পাতা ও গাছের সঙ্গে মিশে থাকার জন্য প্রাকৃতিকভাবে সবুজ রঙেরই হয়। গিরগিটির ত্বকে সাধারণ হলুদ রং ইরিডোফোরস কোষের নীল রঙের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। আর নীল ও হলুদ রং মিলে সবুজ রং তৈরি হয়।
সবুজ পাতার সঙ্গে মিশে থাকার মাধ্যমে গিরগিটি নিজেদের অন্য শিকারি থেকে আড়াল করতে পারে। গিরগিটির ত্বকের বাইরের স্তরটি আসলে স্বচ্ছ। এই স্তরের নিচে আরও কয়েকটি স্তর রয়েছে, যাতে নীল আলো এবং সাদা আলো প্রতিফলিত করার ইরিডোফোরস কোষসহ বিভিন্ন ধরনের অনন্য অভিযোজন সক্ষম স্তর রয়েছে।
শরীরের রং দ্রুত পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে (বিশেষ করে সঙ্গীকে আকর্ষণ করা জন্য) গিরগিটি দ্রুত সূর্যের আলোর নিচে চলে যায়, ফলে আলো ত্বকের ইরিডোফোরসের কোষ থেকে প্রতিফলিত হয়ে রঙের পরিবর্তন ঘটায়। তখন এদের সহজে চেনা যায় না।
তথ্যসূত্র: হাও স্টাফ ওয়ার্কস
গিরগিটি বাংলাদেশের অনেক এলাকায় ‘রক্তচোষা’ নামে পরিচিত এক অতি নিরীহ সরীসৃপ। এরা ইচ্ছে মতো ত্বকের রং পরিবর্তন করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে এদের নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণাও আছে। এ কারণে এদের দেখলেই মানুষ মেরে ফেলতে উদ্যত হয়।
অথচ এই রং পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল। অত্যন্ত ভিতু ও লাজুক প্রকৃতির এই প্রাণী নিজেকে পরিবেশের সঙ্গে মিশিয়ে রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু এই রং পরিবর্তন এরা কীভাবে করে?
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করতেন, গিরগিটি অক্টোপাসের মতো রং পরিবর্তন করে। তবে সম্প্রতি জীববিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রক্রিয়া। অনেকেই মনে করেন, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য গিরগিটি রং পরিবর্তন করে। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো! এরা বরং নিজেদের আলাদা করতেই রং পরিবর্তন করে। আর স্বাভাবিক ও স্বস্তিদায়ক অবস্থায় এরা বরং প্রাকৃতিকভাবেই পরিবেশে সঙ্গে মিশে যায়। এদের সাধারণ সবুজ রং প্রকৃতির সবুজ পাতার সঙ্গে মিশে যায়।
ওকল্যান্ড চিড়িয়াখানায় ক্যালিফোর্নিয়ার কনজারভেশন সোসাইটির মার্কেটিং ম্যানেজার ডেনিয়েল ফ্লিন বলেন, গিরগিটির রং পরিবর্তনকারী বৈশিষ্ট্যগুলো এদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে না। বরং এদের স্বাভাবিক, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ অবস্থাই এদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে। এরা পরিবেশের সঙ্গে মিশতে নিজের রঙের পরিবর্তন করে না বরং নিজেদের আলাদাভাবে তুলে ধরতে ত্বকের রঙের পরিবর্তন করে।
ফ্লিন আরও বলেন, ‘ত্বকের নিচে ইরিডোফোরস নামক স্ফটিক–সদৃশ কোষগুলোর কাঠামোগত পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে এদের রঙের পরিবর্তন হয়। এগুলো আলোর প্রতিসরণ ঘটায়। যখন এরা উত্তেজিত হয়, হুমকি বোধ করে বা সঙ্গীর প্রতি ইতিবাচক বা প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি নেতিবাচকভাবে মনোভাব প্রদর্শন করতে চায়, তখন স্ফটিকগুলো বিকৃত বা সংকুচিত হয়। আর এভাবেই এদের শরীরের রং পরিবর্তন হয়।
২০১৫ সালে নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেন, ত্বকের এই বিশেষ কোষগুলো ছোট আয়নার মতো কাজ করে যা বেছে বেছে আলোক তরঙ্গ প্রতিফলিত করে ও বিভিন্ন রং শোষণ করে।
অনেক প্রাণীই বিভিন্ন রং প্রদর্শন করতে পারে। যেমন—পাখি ও মাছ। সাধারণত দৃশ্যমান আলোর বর্ণালির নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলোকে শোষণ করে বা প্রতিফলিত করে এসব প্রাণীর কোষগুলো বিভিন্ন রং প্রদর্শন করে।
গিরগিটির কোষ অন্য প্রাণীদের তুলনায় ভিন্ন। গিরগিটির ইরিডোফোরস প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট রঙের পরিবর্তে বর্ণালির যেকোনো বা সমস্ত রংকে শোষণ বা প্রতিফলিত করতে পারে।
ফ্লিন আরও বলেন, ‘কিছু প্রজাতি অন্যদের চেয়ে বেশি রং পরিবর্তন করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রাণীর ত্বকের রং হালকা থেকে গাঢ় হয়, অন্যদের আরও প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল রঙে পরিবর্তিত হয়। এই ধরনের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, এদের মধ্যেও প্রচুর বৈচিত্র্য রয়েছে। এরা বিভিন্ন ধরনের রং পরিবর্তন করতে পারে, এমনকি এমন রং ধারণ করতে পারে যা মানুষ খালি চোখে দেখে না!
জীবন্ত গিরগিটির ইরিডোফোরসের ভেতরে ক্ষুদ্র থলিতে রঞ্জক পদার্থ থাকে। কিন্তু যখন গিরগিটির মেজাজ পরিবর্তিত হয়, তখন এর স্নায়ুতন্ত্র এই কোষগুলো সক্রিয় করে, সংকুচিত বা প্রসারিত করে।
গিরগিটি শান্ত থাকলে কোষগুলো কাছাকাছি থাকে ও আলোর ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য (যেমন: নীল) প্রতিফলিত করে। উত্তেজনার সময় কোষগুলোকে পরস্পর থেকে দূরে ঠেলে দেয়, প্রতিটি ইরিডোফোরকে লাল, কমলা এবং হলুদের মতো দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত করতে সক্ষম করে।
এখন মনে আসতে পারে গিরগিটিগুলো শান্ত অবস্থায় নীল রং প্রতিফলিত করে, তাহলে এদের সাধারণ অবস্থায় সবুজ রঙের দেখা যায় কেন? এর জবাবে ফ্লিন বলেন, গিরগিটি শান্ত অবস্থায় সবুজ পাতা ও গাছের সঙ্গে মিশে থাকার জন্য প্রাকৃতিকভাবে সবুজ রঙেরই হয়। গিরগিটির ত্বকে সাধারণ হলুদ রং ইরিডোফোরস কোষের নীল রঙের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। আর নীল ও হলুদ রং মিলে সবুজ রং তৈরি হয়।
সবুজ পাতার সঙ্গে মিশে থাকার মাধ্যমে গিরগিটি নিজেদের অন্য শিকারি থেকে আড়াল করতে পারে। গিরগিটির ত্বকের বাইরের স্তরটি আসলে স্বচ্ছ। এই স্তরের নিচে আরও কয়েকটি স্তর রয়েছে, যাতে নীল আলো এবং সাদা আলো প্রতিফলিত করার ইরিডোফোরস কোষসহ বিভিন্ন ধরনের অনন্য অভিযোজন সক্ষম স্তর রয়েছে।
শরীরের রং দ্রুত পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে (বিশেষ করে সঙ্গীকে আকর্ষণ করা জন্য) গিরগিটি দ্রুত সূর্যের আলোর নিচে চলে যায়, ফলে আলো ত্বকের ইরিডোফোরসের কোষ থেকে প্রতিফলিত হয়ে রঙের পরিবর্তন ঘটায়। তখন এদের সহজে চেনা যায় না।
তথ্যসূত্র: হাও স্টাফ ওয়ার্কস
রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিভা ও বিতর্কিত কর্মজীবনের জন্য পরিচিত ছিলেন। বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক আবিষ্কার করেছিলেন এই প্রত্নতত্ত্ববিদ। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় আজও উপেক্ষিত।
৮ ঘণ্টা আগেরঙের জগতে নতুন চমক নিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, তারা এমন একটি রং আবিষ্কার করেছেন, যা সাধারণ চোখে আগে কখনো দেখা যায়নি। এই রঙের নাম রাখা হয়েছে ‘ওলো’, যা দেখতে একধরনের গাড় সবুজাভ নীল।
১৫ ঘণ্টা আগেআইনস্টাইনের কথা উঠলেই চলে আসে আরও একজনের নাম। তিনি হলের এমি নোয়েথার। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন এই নারী। তিনি ছিলেন জার্মান গণিতবিদ। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান এই নারী। কিন্তু এই অল্প কিছুদিনেই গণিতে তাঁর অবদান অসামান্য।
১ দিন আগেজলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কৃষিপ্রধান দেশগুলোর ধানে আর্সেনিকের উপস্থিতির আশঙ্কা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে