অনলাইন ডেস্ক
হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ একত্রিত হয়ে খাবার ও পানীয় ভাগাভাগি করেছে, আনন্দ করেছে, আর গড়েছে সামাজিক বন্ধন। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মানুষই নয়—আমাদের নিকট আত্মীয় শিম্পাঞ্জি রাও হয়তো একত্রে মিলে অ্যালকোহলযুক্ত ফল উপভোগ করে এবং সেই অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির মাধ্যমে গড়ে তোলে পারস্পরিক সম্পর্ক। অর্থাৎ, শুধু বেঁচে থাকার জন্য নয়, সামাজিক বিনোদনের অংশ হিসেবেও শিম্পাঞ্জিরা খেতে পারে অ্যালকোহলযুক্ত ফল।
যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে পরিচালিত একদল গবেষক গিনি-বিসাউয়ের কান্তানহেজ জাতীয় উদ্যানে বন্য শিম্পাঞ্জিদের ক্যামেরাবন্দী করেছেন, যেখানে তাদের ফার্মেন্টেড (আংশিক গাঁজনযুক্ত) আফ্রিকান ব্রেডফ্রুট একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে দেখা গেছে।
কর্নওয়ালের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনরিন ক্যাম্পাসের ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশন সেন্টারের গবেষক আন্না বোল্যান্ড বলেন, ‘আমরা জানি, মানুষ অ্যালকোহল পান করলে ডোপামিন ও এন্ডরফিন নামক রসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ হয়, যা আনন্দ ও প্রশান্তির অনুভূতি তৈরি করে। আমরা আরও জানি, উৎসবসহ নানা প্রথার মাধ্যমে একসঙ্গে অ্যালকোহল ভাগাভাগি করা সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং তা আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করে।’
এখন যেহেতু বন্য শিম্পাঞ্জিদের অ্যালকোহলযুক্ত (ইথানলিক) ফল এক সঙ্গে ভাগাভাগি করতে দেখা যায়, তাহলে প্রশ্ন উঠে—তারাও কী মানুষের মতো একই উপকার পাচ্ছে।
পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার জন্য মোশন-অ্যাকটিভেটেড ক্যামেরা ব্যবহার করেন গবেষকেরা। ১০টি ঘটনায় দেখা যায়, শিম্পাঞ্জিরা বড়, ঘন ও আঁশযুক্ত ফার্মেন্টেড ফল ভাগাভাগি করছেন। এই ফল পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, আয়তন (এবিভি) অনুযায়ী এতে সর্বোচ্চ অ্যালকোহল ছিল দশমিক ৬১ শতাংশ—যা বিয়ার বা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়র সমতুল্য।
ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের আরেক গবেষক কিম্বারলি হকিংস বলেন, ‘শিম্পাঞ্জিরা সবসময় খাবার ভাগ করে না। তাই ফার্মেন্টেড বা গাঁজন হওয়া ফল নিয়ে তাদের এই আচরণটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ব্রেডফ্রুটের অ্যালকোহলের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তবে শিম্পাঞ্জিরা প্রতিদিন অনেক পরিমাণে এই ফল খায়। তাই তারা মোটেও সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করছে না। তারা প্রতিদিন কেজি কেজি ফল খেতে পারে। এটা আমাদের হালকা বিয়ার চুমুক দেওয়ার মতো হতে পারে।’
এর আগে ২০১৫ সালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন হকিংস এবং তার সহকর্মীরা। এই গবেষণাপত্রে তারা দেখান—পশ্চিম আফ্রিকার শিম্পাঞ্জিরা মানুষের তৈরি খেজুরের রসের অ্যালকোহল চুরি করে পান করেছিল। সেই সময় কিছু শিম্পাঞ্জিকে দুষ্টুমি করতে দেখা যায়। যেমন, অন্যদের রাতে থাকার জন্য বাসা বানাতে না দেওয়া।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় অংশ নেওয়া বিজ্ঞানীরা বলেন, ব্রেডফ্রুটে থাকা অল্প পরিমাণ অ্যালকোহলের কারণে চিম্পাঞ্জিদের মাতাল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ মাতাল হওয়া তাদের বেঁচে থাকতে বা পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি সুবিধা দেয় না।
ফল ভাগাভাগির এই আচরণ সব বয়সী ও লিঙ্গের শিম্পাঞ্জিদের মধ্যেই দেখা গেছে। গবেষকেরা চিপ এবং আত নামের দুটি প্রাপ্তবয়স্ক নারী শিম্পাঞ্জির ওপর নজর রাখেন। তারা দেখেন, শিম্পাঞ্জি দুটি বড় আকারের একটি ব্রেডফ্রুট উপেক্ষা করে বরং ছোট হলেও ফার্মেন্টেড বা গাঁজনযুক্ত একটি টুকরো বেছে নেয়।
এদিকে মান্ডজাম্বে ও গ্যারি নামের দুই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি–কে পাকা ব্রেডফ্রুটের দিকে আগ্রাসী ভঙ্গিতে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। মান্ডজাম্বে একটি টুকরো নিয়ে খেতে শুরু করে। সেসময়, ববি নামের অন্য একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি গ্যারিকে ফলটি থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। শেষ পর্যন্ত ওই এলাকায় থাকা সব শিম্পাঞ্জি মিলে ব্রেডফ্রুটের স্বাদ গ্রহণ করে।
গবেষণাপত্রটি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে ‘প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, ‘উৎসবের করার স্বভাব আমাদের সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত কিনা।’
কিম্বারলি হকিংস বলেন, ‘শিম্পাঞ্জিরা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যালকোহলযুক্ত ফল খোঁজে কীনা এবং তা কীভাবে বিপাকিত করে তা নিয়ে আমাদের আরও গবেষনার প্রয়োজন। তবে এই আচরণটি উৎসবের প্রাথমিক বিবর্তনীয় স্তরের অংশ হতে পারে। যদি তা সত্যি হয়, তাহলে বুঝা যায় যে, মানুষের উৎসব করার অভ্যাস খুব পুরনো এবং আমাদের বিবর্তনের শুরু থেকেই তা থাকতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ একত্রিত হয়ে খাবার ও পানীয় ভাগাভাগি করেছে, আনন্দ করেছে, আর গড়েছে সামাজিক বন্ধন। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মানুষই নয়—আমাদের নিকট আত্মীয় শিম্পাঞ্জি রাও হয়তো একত্রে মিলে অ্যালকোহলযুক্ত ফল উপভোগ করে এবং সেই অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির মাধ্যমে গড়ে তোলে পারস্পরিক সম্পর্ক। অর্থাৎ, শুধু বেঁচে থাকার জন্য নয়, সামাজিক বিনোদনের অংশ হিসেবেও শিম্পাঞ্জিরা খেতে পারে অ্যালকোহলযুক্ত ফল।
যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে পরিচালিত একদল গবেষক গিনি-বিসাউয়ের কান্তানহেজ জাতীয় উদ্যানে বন্য শিম্পাঞ্জিদের ক্যামেরাবন্দী করেছেন, যেখানে তাদের ফার্মেন্টেড (আংশিক গাঁজনযুক্ত) আফ্রিকান ব্রেডফ্রুট একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে দেখা গেছে।
কর্নওয়ালের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনরিন ক্যাম্পাসের ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশন সেন্টারের গবেষক আন্না বোল্যান্ড বলেন, ‘আমরা জানি, মানুষ অ্যালকোহল পান করলে ডোপামিন ও এন্ডরফিন নামক রসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ হয়, যা আনন্দ ও প্রশান্তির অনুভূতি তৈরি করে। আমরা আরও জানি, উৎসবসহ নানা প্রথার মাধ্যমে একসঙ্গে অ্যালকোহল ভাগাভাগি করা সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং তা আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করে।’
এখন যেহেতু বন্য শিম্পাঞ্জিদের অ্যালকোহলযুক্ত (ইথানলিক) ফল এক সঙ্গে ভাগাভাগি করতে দেখা যায়, তাহলে প্রশ্ন উঠে—তারাও কী মানুষের মতো একই উপকার পাচ্ছে।
পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার জন্য মোশন-অ্যাকটিভেটেড ক্যামেরা ব্যবহার করেন গবেষকেরা। ১০টি ঘটনায় দেখা যায়, শিম্পাঞ্জিরা বড়, ঘন ও আঁশযুক্ত ফার্মেন্টেড ফল ভাগাভাগি করছেন। এই ফল পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, আয়তন (এবিভি) অনুযায়ী এতে সর্বোচ্চ অ্যালকোহল ছিল দশমিক ৬১ শতাংশ—যা বিয়ার বা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়র সমতুল্য।
ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের আরেক গবেষক কিম্বারলি হকিংস বলেন, ‘শিম্পাঞ্জিরা সবসময় খাবার ভাগ করে না। তাই ফার্মেন্টেড বা গাঁজন হওয়া ফল নিয়ে তাদের এই আচরণটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ব্রেডফ্রুটের অ্যালকোহলের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তবে শিম্পাঞ্জিরা প্রতিদিন অনেক পরিমাণে এই ফল খায়। তাই তারা মোটেও সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করছে না। তারা প্রতিদিন কেজি কেজি ফল খেতে পারে। এটা আমাদের হালকা বিয়ার চুমুক দেওয়ার মতো হতে পারে।’
এর আগে ২০১৫ সালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন হকিংস এবং তার সহকর্মীরা। এই গবেষণাপত্রে তারা দেখান—পশ্চিম আফ্রিকার শিম্পাঞ্জিরা মানুষের তৈরি খেজুরের রসের অ্যালকোহল চুরি করে পান করেছিল। সেই সময় কিছু শিম্পাঞ্জিকে দুষ্টুমি করতে দেখা যায়। যেমন, অন্যদের রাতে থাকার জন্য বাসা বানাতে না দেওয়া।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় অংশ নেওয়া বিজ্ঞানীরা বলেন, ব্রেডফ্রুটে থাকা অল্প পরিমাণ অ্যালকোহলের কারণে চিম্পাঞ্জিদের মাতাল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ মাতাল হওয়া তাদের বেঁচে থাকতে বা পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি সুবিধা দেয় না।
ফল ভাগাভাগির এই আচরণ সব বয়সী ও লিঙ্গের শিম্পাঞ্জিদের মধ্যেই দেখা গেছে। গবেষকেরা চিপ এবং আত নামের দুটি প্রাপ্তবয়স্ক নারী শিম্পাঞ্জির ওপর নজর রাখেন। তারা দেখেন, শিম্পাঞ্জি দুটি বড় আকারের একটি ব্রেডফ্রুট উপেক্ষা করে বরং ছোট হলেও ফার্মেন্টেড বা গাঁজনযুক্ত একটি টুকরো বেছে নেয়।
এদিকে মান্ডজাম্বে ও গ্যারি নামের দুই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি–কে পাকা ব্রেডফ্রুটের দিকে আগ্রাসী ভঙ্গিতে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। মান্ডজাম্বে একটি টুকরো নিয়ে খেতে শুরু করে। সেসময়, ববি নামের অন্য একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি গ্যারিকে ফলটি থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। শেষ পর্যন্ত ওই এলাকায় থাকা সব শিম্পাঞ্জি মিলে ব্রেডফ্রুটের স্বাদ গ্রহণ করে।
গবেষণাপত্রটি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে ‘প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, ‘উৎসবের করার স্বভাব আমাদের সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত কিনা।’
কিম্বারলি হকিংস বলেন, ‘শিম্পাঞ্জিরা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যালকোহলযুক্ত ফল খোঁজে কীনা এবং তা কীভাবে বিপাকিত করে তা নিয়ে আমাদের আরও গবেষনার প্রয়োজন। তবে এই আচরণটি উৎসবের প্রাথমিক বিবর্তনীয় স্তরের অংশ হতে পারে। যদি তা সত্যি হয়, তাহলে বুঝা যায় যে, মানুষের উৎসব করার অভ্যাস খুব পুরনো এবং আমাদের বিবর্তনের শুরু থেকেই তা থাকতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আধুনিক জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। তবে এই বহুল ব্যবহৃত উপাদানটিই আজ পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই প্লাস্টিক জমে থাকছে নদী-নালা, সাগর ও মাটির গভীরে, যা জলজ প্রাণী থেকে শুরু করে মানবস্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে মারাত্মক প্রভাব। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা
১৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বব্রহ্মাণ্ডে প্রতি মুহূর্তে ঘটছে অসংখ্য শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। নক্ষত্রগুলো জ্বলছে বিশাল পরমাণু বিক্রিয়ার শক্তিতে, আর বিশাল উল্কাপিণ্ড ছুটে এসে ধাক্কা দিচ্ছে গ্রহে গ্রহে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করেছেন, যা এই সব কিছুকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাদের দাবি, মহাকা
২ দিন আগেআমাদের গ্রহে প্রাণের বিকাশ ও প্রাচুর্য টিকে আছে অক্সিজেনের কল্যাণে। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সব সময় এমন ছিল না। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে আমাদের বায়ুমণ্ডলে আবারও মিথেনের আধিক্য হবে এবং অক্সিজেনবিহীন অবস্থায় ফিরে যাবে। তবে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
২ দিন আগেবসন্ত এলেই গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে লাখ লাখ পিঁপড়া। দলবদ্ধভাবে তারা ছড়িয়ে পড়ে উঠোন, বারান্দা ও রান্নাঘরের মেঝেতে—উদ্দেশ্য একটাই, কলোনির জন্য খাবার খুঁজে বের করা। তবে এদের সব সময় সারিবদ্ধভাবেই হাঁটতে দেখা যায়। তবে তাদের এই শৃঙ্খলাবদ্ধ হাঁটার পেছনে লুকিয়ে আছে চমকপ্রদ এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
৪ দিন আগে