নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আগামীর পৃথিবী গড়তে তরুণদের ক্ষমতায়ন জরুরি। নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে ন্যায্য ও সম্ভাবনায় বিশ্বে নিজেদের পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে তারুণ্যকে ক্ষমতায়ন করতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। সম্পর্ক, পরিবার গঠন, পিতামাতার ভূমিকা গ্রহণ বিষয়ে সচেতন এবং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা, লৈঙ্গিক সমতা এবং স্বাস্থ্যসেবায় তাঁদের প্রবেশাধিকারে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
‘ন্যায্য ও সম্ভাবনাময় বিশ্বে পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুণ্যের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন কথা বলেছেন আলোচকেরা। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বনশ্রীতে ‘আজকের পত্রিকা’ কার্যালয়ে এর আয়োজন করা হয়। জনসংখ্যা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি), প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড ফেডারেশন (আইপিপিএফ), দৈনিক আজকের পত্রিকা এবং দৈনিক নিউ এজ এই আয়োজন করে।
পিএসটিসির নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় আয়োজনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পিএসটিসির হেড অব প্রোগ্রামস ডা. মো. মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনে সমন্বয় করে আসছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল। বাংলাদেশে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা এখন দেশের মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ। তবে এই জনমিতির সুবিধা নেওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পরিবার পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে এক-তৃতীয়াংশ। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, তরুণ জনগোষ্ঠীর গুরুত্ব কত। যে দেশে তরুণ জনগোষ্ঠী এত বিশাল অংশ, তাদের বাদ দিয়ে কোনো ধরনের পরিকল্পনা বা নীতি নিয়ে আমরা এগোতে পারব বলে মনে করি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান আবু হাসানাত মো. কিশোয়ার হোসেন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিশোরীদের প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য একটা ভয়াবহ বিপদের কারণ। তরুণদেরকেই আমরা শুধু বিবেচনায় রাখব, কিন্তু পরিবারের যাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সেই বড়দের যদি বিবেচনায় না রাখি, তাহলে যতই তরুণদের ক্ষমতায়ন করি না কেন, ক্ষমতায়ন হবে না।’
ঢাকায় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার (জেন্ডার অ্যান্ড সিভিল সোসাইটি) মাশফিকা জামান সাটিয়ার বলেন, ‘নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক সমস্যা। নীতি যেগুলো নেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলেও কিন্তু অনেক দূর আগানো যায়।’
ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক ও হেড অব হেলথ ডা. কাজী গোলাম রাসুল বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীকে পাওয়ার অব দ্য গ্লোব বলা যেতে পারে। এই শক্তিটা কীভাবে ব্যবহার করা হবে? এটার ভালো দিক ব্যবহার হবে, নাকি খারাপ দিক? একটা শক্তি যদি খারাপ দিকে যায়, এটা সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। আর এটার ভালো দিকটা যদি ব্যবহার করা হয়, তাহলে এটা নতুন একটি পৃথিবী গড়তে পারে।’
ন্যাশনাল ইয়ুথ নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব সাবিক রহমান বলেন, ‘তারুণ্যের ক্ষমতায়ন কীভাবে হবে, যদি তরুণদের কণ্ঠই শোনা না যায়। আমরা প্রায়ই দেখি, পরিবার পরিকল্পনা কিংবা স্বাস্থ্যনীতি—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তরুণদের অংশগ্রহণকে অনেক সময় অগ্রাহ্য করা হয়।’
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ম্যানেজার (এইচআইভি প্রোগ্রাম) ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ২০-২৫ বছর ধরে যৌনকর্মী ও মাদকসেবীদের নিয়ে কাজ করেছি। দুই জায়গায় দুই ধরনের চ্যালেঞ্জ। যৌনকর্মীরা খুব অল্প বয়সে, অনিচ্ছায় যৌনজীবনে প্রবেশ করে। সামাজিক বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে অনেক দূরে থাকে। মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা এর নিরাময়ের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।’
আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম একটি বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণশক্তি। এই শক্তিটাকে আমরা যদি সুপথে না রাখতে পারি, আমরা যদি সঠিকভাবে পরামর্শ দিতে না পারি, তাহলে তাদের মিসলিড (ভুল দিকে চালিত) হওয়ার সুযোগ থেকে যায়।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেপিজিএসএইচের অ্যাডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি ডা. নাফিসা লিরা হক বলেন, ‘বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে গর্ভনিরোধক প্রিভালেন্স রেট (সিপিআর) খুবই কম। যার কারণে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ আমাদের দেশে অনেক বেশি। এ কারণে এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে।’
নেয়ার্সের (এনইএআরএস) প্রেসিডেন্ট ডা. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘২০ বছর আগের চিত্রের সঙ্গে এখনকার চিত্রের অনেক পার্থক্য। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তরুণেরা ছিল না, কিন্তু এখন আছে। প্রশ্ন হলো, তারা কি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেতে পারছে? তাদেরও তথ্য দিয়ে তৈরি করতে হবে।’
পিএসটিসির প্রকল্প ব্যবস্থাপক কানিজ গোফরানী কোরায়শী বলেন, ‘লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নানাভাবে হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে তরুণদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকার কারণে। সহিংসতা কমাতে হলে তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিক তথ্য দিতে হবে।’
পিএসটিসির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুহাস মাহমুদ বলেন, ‘সার্বিকভাবে তারুণ্যের ক্ষমতা তখনই আসবে, যখন সব ধরনের তরুণ; বিশেষ করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের আমরা যদি মেইনস্ট্রিমে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।’
নিউ এজের প্রধান প্রতিবেদক মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্ন করতে শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন তরুণ সম্প্রদায় প্রশ্ন করতে শিখবে, তাদের সমস্যা খানিকটা তারাই সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারবে।’
পিএসটিসির প্রোগ্রাম অফিসার এ কিউ শুদ্ধ হক বলেন, ‘আজকাল প্রায় প্রতিটি এনজিও আইএনজিওতে কিছু না কিছু তরুণ স্বেচ্ছাসেবকের গ্রুপ বা তরুণদের ফোরাম থাকে। কিন্তু এই অংশগ্রহণ তরুণদের জন্য কতটা অর্থপূর্ণ? তরুণেরা কি সত্যিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রক্রিয়ার অংশ হচ্ছে, নাকি তাদেরকে নামেমাত্র যুক্ত করা হচ্ছে?’
পিএসটিসির ফোকাস প্রজেক্টের টিম লিডার অনিতা শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘সমাজে আমাদের কিছু ভঙ্গুর মানুষ আছে। তাদের কথা আরেকটু বেশি করে চিন্তা করতে হবে। অন্যভাবে ভাবতে হবে। তাদেরও ক্ষমতায়নের প্রয়োজন আছে।’
সিডব্লিউএফডির নির্বাহী পরিচালক ড. লাডলি ফায়্জ বলেন, ‘১৯৯০ সালের দিকে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়গুলো ভেঙে বলার মতো পরিবেশ ছিল না। আমি চাই, আমাদের ছেলেমেয়েরা সব রকমের সহযোগিতা-সমর্থন পাক। যৌন, প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার সম্পর্কেও যেন তারা সঠিকভাবে জানতে পারে।’
সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) ফিল্ড ইমপ্লিমেন্টেশনের জেনারেল ম্যানেজার মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘কিশোরী মেয়েদের বাল্যবিবাহ সম্পর্কে পড়ানো হয়। কিন্তু ওই মেয়েটাকে এটা শেখানো হয় না যে কীভাবে বাবা-মাকে বাল্যবিবাহ বন্ধের বিষয়ে বোঝাতে হবে।’
গোল প্রজেক্টের পিয়ার এডুকেটর ফারজানা আক্তার রিমু বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে মিনিস্ট্রিয়াল হাইজিন ডে পালন করলাম। মেয়েরা বাড়িতে গেল। পরের দিন পিরিয়ড হওয়ার পর তাদের মা আর স্কুলে আসতে দিল না। তাহলে এই উদ্যাপনের মানে কী রইল?’
রেডঅরেঞ্জ কমিউনিকেশনসের পরিচালক (প্রোগ্রাম অ্যান্ড অপারেশনস) অলক কুমার মজুমদার বলেন, ‘তরুণদের ক্ষমতায়ন ছাড়া সুস্থ পরিবার গঠন সম্ভব নয়। কিশোর-কিশোরীদের (অ্যাডলসেন্স) ক্ষেত্রে একটা নলেজ গ্যাপ ভীষণভাবে রয়ে গেছে। সরকারের জাতীয় জরিপে দেখেছি, ৬৪ শতাংশ মেয়ে মাসিক হওয়ার আগে জানতই না।’
আগামীর পৃথিবী গড়তে তরুণদের ক্ষমতায়ন জরুরি। নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে ন্যায্য ও সম্ভাবনায় বিশ্বে নিজেদের পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে তারুণ্যকে ক্ষমতায়ন করতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। সম্পর্ক, পরিবার গঠন, পিতামাতার ভূমিকা গ্রহণ বিষয়ে সচেতন এবং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা, লৈঙ্গিক সমতা এবং স্বাস্থ্যসেবায় তাঁদের প্রবেশাধিকারে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
‘ন্যায্য ও সম্ভাবনাময় বিশ্বে পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুণ্যের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন কথা বলেছেন আলোচকেরা। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বনশ্রীতে ‘আজকের পত্রিকা’ কার্যালয়ে এর আয়োজন করা হয়। জনসংখ্যা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি), প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড ফেডারেশন (আইপিপিএফ), দৈনিক আজকের পত্রিকা এবং দৈনিক নিউ এজ এই আয়োজন করে।
পিএসটিসির নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় আয়োজনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পিএসটিসির হেড অব প্রোগ্রামস ডা. মো. মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনে সমন্বয় করে আসছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল। বাংলাদেশে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা এখন দেশের মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ। তবে এই জনমিতির সুবিধা নেওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পরিবার পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে এক-তৃতীয়াংশ। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, তরুণ জনগোষ্ঠীর গুরুত্ব কত। যে দেশে তরুণ জনগোষ্ঠী এত বিশাল অংশ, তাদের বাদ দিয়ে কোনো ধরনের পরিকল্পনা বা নীতি নিয়ে আমরা এগোতে পারব বলে মনে করি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান আবু হাসানাত মো. কিশোয়ার হোসেন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিশোরীদের প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য একটা ভয়াবহ বিপদের কারণ। তরুণদেরকেই আমরা শুধু বিবেচনায় রাখব, কিন্তু পরিবারের যাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সেই বড়দের যদি বিবেচনায় না রাখি, তাহলে যতই তরুণদের ক্ষমতায়ন করি না কেন, ক্ষমতায়ন হবে না।’
ঢাকায় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার (জেন্ডার অ্যান্ড সিভিল সোসাইটি) মাশফিকা জামান সাটিয়ার বলেন, ‘নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক সমস্যা। নীতি যেগুলো নেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলেও কিন্তু অনেক দূর আগানো যায়।’
ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক ও হেড অব হেলথ ডা. কাজী গোলাম রাসুল বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীকে পাওয়ার অব দ্য গ্লোব বলা যেতে পারে। এই শক্তিটা কীভাবে ব্যবহার করা হবে? এটার ভালো দিক ব্যবহার হবে, নাকি খারাপ দিক? একটা শক্তি যদি খারাপ দিকে যায়, এটা সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। আর এটার ভালো দিকটা যদি ব্যবহার করা হয়, তাহলে এটা নতুন একটি পৃথিবী গড়তে পারে।’
ন্যাশনাল ইয়ুথ নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব সাবিক রহমান বলেন, ‘তারুণ্যের ক্ষমতায়ন কীভাবে হবে, যদি তরুণদের কণ্ঠই শোনা না যায়। আমরা প্রায়ই দেখি, পরিবার পরিকল্পনা কিংবা স্বাস্থ্যনীতি—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তরুণদের অংশগ্রহণকে অনেক সময় অগ্রাহ্য করা হয়।’
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ম্যানেজার (এইচআইভি প্রোগ্রাম) ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ২০-২৫ বছর ধরে যৌনকর্মী ও মাদকসেবীদের নিয়ে কাজ করেছি। দুই জায়গায় দুই ধরনের চ্যালেঞ্জ। যৌনকর্মীরা খুব অল্প বয়সে, অনিচ্ছায় যৌনজীবনে প্রবেশ করে। সামাজিক বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে অনেক দূরে থাকে। মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা এর নিরাময়ের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।’
আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম একটি বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণশক্তি। এই শক্তিটাকে আমরা যদি সুপথে না রাখতে পারি, আমরা যদি সঠিকভাবে পরামর্শ দিতে না পারি, তাহলে তাদের মিসলিড (ভুল দিকে চালিত) হওয়ার সুযোগ থেকে যায়।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেপিজিএসএইচের অ্যাডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি ডা. নাফিসা লিরা হক বলেন, ‘বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে গর্ভনিরোধক প্রিভালেন্স রেট (সিপিআর) খুবই কম। যার কারণে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ আমাদের দেশে অনেক বেশি। এ কারণে এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে।’
নেয়ার্সের (এনইএআরএস) প্রেসিডেন্ট ডা. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘২০ বছর আগের চিত্রের সঙ্গে এখনকার চিত্রের অনেক পার্থক্য। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তরুণেরা ছিল না, কিন্তু এখন আছে। প্রশ্ন হলো, তারা কি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেতে পারছে? তাদেরও তথ্য দিয়ে তৈরি করতে হবে।’
পিএসটিসির প্রকল্প ব্যবস্থাপক কানিজ গোফরানী কোরায়শী বলেন, ‘লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নানাভাবে হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে তরুণদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকার কারণে। সহিংসতা কমাতে হলে তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিক তথ্য দিতে হবে।’
পিএসটিসির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুহাস মাহমুদ বলেন, ‘সার্বিকভাবে তারুণ্যের ক্ষমতা তখনই আসবে, যখন সব ধরনের তরুণ; বিশেষ করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের আমরা যদি মেইনস্ট্রিমে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।’
নিউ এজের প্রধান প্রতিবেদক মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্ন করতে শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন তরুণ সম্প্রদায় প্রশ্ন করতে শিখবে, তাদের সমস্যা খানিকটা তারাই সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারবে।’
পিএসটিসির প্রোগ্রাম অফিসার এ কিউ শুদ্ধ হক বলেন, ‘আজকাল প্রায় প্রতিটি এনজিও আইএনজিওতে কিছু না কিছু তরুণ স্বেচ্ছাসেবকের গ্রুপ বা তরুণদের ফোরাম থাকে। কিন্তু এই অংশগ্রহণ তরুণদের জন্য কতটা অর্থপূর্ণ? তরুণেরা কি সত্যিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রক্রিয়ার অংশ হচ্ছে, নাকি তাদেরকে নামেমাত্র যুক্ত করা হচ্ছে?’
পিএসটিসির ফোকাস প্রজেক্টের টিম লিডার অনিতা শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘সমাজে আমাদের কিছু ভঙ্গুর মানুষ আছে। তাদের কথা আরেকটু বেশি করে চিন্তা করতে হবে। অন্যভাবে ভাবতে হবে। তাদেরও ক্ষমতায়নের প্রয়োজন আছে।’
সিডব্লিউএফডির নির্বাহী পরিচালক ড. লাডলি ফায়্জ বলেন, ‘১৯৯০ সালের দিকে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়গুলো ভেঙে বলার মতো পরিবেশ ছিল না। আমি চাই, আমাদের ছেলেমেয়েরা সব রকমের সহযোগিতা-সমর্থন পাক। যৌন, প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার সম্পর্কেও যেন তারা সঠিকভাবে জানতে পারে।’
সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) ফিল্ড ইমপ্লিমেন্টেশনের জেনারেল ম্যানেজার মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘কিশোরী মেয়েদের বাল্যবিবাহ সম্পর্কে পড়ানো হয়। কিন্তু ওই মেয়েটাকে এটা শেখানো হয় না যে কীভাবে বাবা-মাকে বাল্যবিবাহ বন্ধের বিষয়ে বোঝাতে হবে।’
গোল প্রজেক্টের পিয়ার এডুকেটর ফারজানা আক্তার রিমু বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে মিনিস্ট্রিয়াল হাইজিন ডে পালন করলাম। মেয়েরা বাড়িতে গেল। পরের দিন পিরিয়ড হওয়ার পর তাদের মা আর স্কুলে আসতে দিল না। তাহলে এই উদ্যাপনের মানে কী রইল?’
রেডঅরেঞ্জ কমিউনিকেশনসের পরিচালক (প্রোগ্রাম অ্যান্ড অপারেশনস) অলক কুমার মজুমদার বলেন, ‘তরুণদের ক্ষমতায়ন ছাড়া সুস্থ পরিবার গঠন সম্ভব নয়। কিশোর-কিশোরীদের (অ্যাডলসেন্স) ক্ষেত্রে একটা নলেজ গ্যাপ ভীষণভাবে রয়ে গেছে। সরকারের জাতীয় জরিপে দেখেছি, ৬৪ শতাংশ মেয়ে মাসিক হওয়ার আগে জানতই না।’
প্রতিবছরের ১১ জুলাই পালিত হয় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ৮ জুলাই ঢাকায় আজকের পত্রিকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘ন্যায্য ও সম্ভাবনাময় বিশ্বে পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুণ্যের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক। আয়োজনে জনসংখ্যা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পপুলেশন সার্ভিসেস...
৩ দিন আগেমাসিক বা পিরিয়ড নারীজীবনের খুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে আমাদের দেশে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেকে অস্বস্তিতে পড়েন। মাসিকের ব্যবস্থাপনা সঠিক না হলে মাতৃত্ব ঝুঁকিপূর্ণ হয়। প্রতিবছরের ২৮ মে বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে ২৫ মে আজকের পত্রিকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত
২৮ মে ২০২৫নারীর মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষা নিয়ে জনসমক্ষে আলোচনা ও সচেতনতা জরুরি। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কার ভেঙে বিষয়টিকে নারী ও পুরুষ সবার কাছে সহজ ও স্বাভাবিক করে তুলতে সবাইকে কাজ করতে হবে। স্যানিটারি প্যাডের সহজলভ্যতা, তা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকা এবং ব্যবহারের পরে পরিবেশসম্মতভাবে ফেলে দেওয়ার দিক
২৫ মে ২০২৫উচ্চশিক্ষার প্রসারে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে দেশে ১০৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনশ্রীতে আজকের পত্রিকার
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫