Ajker Patrika

ছোটখাটো নয়, সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরকারকে বিদায় দিতে হবে: সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭: ৫৭
ছোটখাটো নয়, সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরকারকে বিদায় দিতে হবে: সাইফুল হক

বর্তমান সরকার দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন-নিপীড়ন, গুম-খুনের মধ্য দিয়ে জোর করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো নয়, সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরকারকে বিদায় দিতে হবে।’

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৭ দলীয় জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আয়োজিত রাজনৈতিক বন্দী মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে সাইফুল হক এসব কথা বলেন। কর্মসূচি শেষে ১৬ জানুয়ারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে বিইআরসি ভবনের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সরকার বিরোধীদলীয় লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে রেখেছে জানিয়ে সাইফুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধাক্কা দিয়ে আওয়ামী লীগকে ফেলা যাবে না। যখন কেউ আইন-নীতি লঙ্ঘন করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তখন জনগণ তাকে ধাক্কা দেয়। এদের ছোটখাটো ধাক্কায় সরানো যাবে না। যে গণজাগরণ শুরু হয়েছে, তা গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সজোরে ধাক্কা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে।’

দেশের সব বিরোধী দল রাজপথে আজকে কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে জানিয়ে সাইফুল হক আরও বলেন, ‘১৪ সালের তামাশার নির্বাচন এবং ১৮ সালের ডাকাতির নির্বাচনের পর এই সরকার সব বিরোধী দলকে রাজপথে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, আন্দোলনের পথে ঠেলে দিয়েছে।’ 

অন্যদিকে প্রেসক্লাবের সামনে যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ৪টি বাম দলের জোট ‘গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য’। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার মাঝে মাঝে ভোটের নাটক করে। গাইবান্ধায় ইভিএমে দিনের বেলায় ভোট ডাকাতির রিহার্সাল করতে চেয়েছিল, কিন্তু সেটা ধরা পড়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনাররা নিজেদের মুখ রক্ষার জন্য সেই নির্বাচন স্থগিত করে দিয়েছেন। সরকার মানুষের ভোটাধিকার ও মর্যাদা নিয়ে তামাশা করছে। বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে আর তামাশা করার সুযোগ দেবে না।’

বিভিন্ন দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে বন্দী করে বর্তমান সরকার তাদের ক্ষমতা ধরে রেখেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা ভাবছে, এভাবে বন্দী রেখে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করবে। কিন্তু ভয়-ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষের ভোটের অধিকার দীর্ঘকাল কেড়ে নেওয়া যায় না।’ আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলনের নতুন ধারা আরও শক্তিশালী হবে বলে জানান তিনি।

গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ মিছিলের দেশে পরিণত হয়েছে। মানুষের অধিকার ফিরে পেতে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।’ এ সময় তিনি গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আজকে যারা গণতন্ত্র হরণের প্রতিবাদ করছে, তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছে। প্রতিবাদ করার জন্য এই অবৈধ, অনুমোদনহীন সরকারের অনুমতি, অনুমোদনের কোনো প্রয়োজন নাই।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘অবিলম্বে রাজবন্দীদের মুক্তি দিন, নয়তো আগামী দিনে আন্দোলন আরও বেগবান করে ওই জেলখানা ভেঙে আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের মুক্ত করে আনব।’

সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আজকে সারা দেশে ভোটাধিকার ও রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে গণ-অবস্থান চলছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই দেশের মানুষ লড়াই করছে। এই লড়াই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ এ সময় তিনি ১৬ জানুয়ারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে বিইআরসির সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণা করেন।

এদিকে প্রেসক্লাবের সামনে যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চারটি বাম দলের জোট ‘গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য’। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত