Ajker Patrika

সংস্কারের বাস্তবায়ন নির্বাচিত সরকার করবে: সিপিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংস্কারের বাস্তবায়ন নির্বাচিত সরকার করবে: সিপিবি

সংস্কার প্রস্তাবে গণভোট বা গণপরিষদ সামনে নিয়ে এলে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, সংস্কার বাস্তবায়ন নির্বাচিত সরকার করবে, এটা প্রস্তাবের প্রথমেই থাকা দরকার ছিল। কিন্তু নিয়ে আসা হয়েছে গণপরিষদ, সাংবিধানিক পরিষদ ও গণভোট। এই আলোচনাগুলোকে প্রধান করলে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে না।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেছে সিপিবি। দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে দলটির সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল এই সংলাপে অংশ নেয়। বেলা ৩টার কিছু পরে শুরু হয়ে সংলাপ শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এর আগে ১৩ মে সিপিবির সংলাপের মুলতবি হয়।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের সামনে একটা প্রধান কাজ হচ্ছে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন করা। এর জন্য যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন, সেই সংস্কারের প্রশ্নগুলো সামনে নিয়ে আসা দরকার। কিন্তু গণপরিষদ, সাংবিধানিক পরিষদ, গণভোট—এমন সব বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে, যেগুলোকে প্রধান করলে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার চার্জশিট হলেই নির্বাচনে অযোগ্য— নির্বাচন সংস্কার কমিশনের এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে সিপিবি। এটা দেশের আইনে পারমিট করে না বলে দাবি করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। তবে নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করতে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে একমত সিপিবি।

সরকারের উচ্চপর্যায়ের কথাবার্তা সংকট তৈরি করছে দাবি করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অনেক সময় দেখছি সরকার এবং অনেক জায়গায় অনেকের কথাবার্তার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে। যেমন ধরুন, সংস্কারের তো কোনো আলোচনার এজেন্ডাই ছিল না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাতের বেলায় ভেঙে দেওয়া হলো কোনো আলোচনা না করে। করিডরের প্রশ্ন, বন্দরের প্রশ্ন—এগুলো তো সংস্কার আলোচনায় নেই।’

করিডর ও বন্দর নিয়ে সিপিবির অবস্থান জানতে চাইলে প্রিন্স বলেন, ‘আমাদের তো বন্দর বেশি নাই। এটা স্ট্র্যাটেজিক্যাল বিষয়। এইটা কোনোভাবে বেসরকারীকরণ করা উচিত না। বিদেশিকে দেওয়া তো উচিতই না। আমাদের বন্দরের যদি কোনো ত্রুটি থাকে, তা আমরাই দূর করব। কিন্তু যে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আমাদের নিজেদের টাকায় সক্ষমতা গড়ে তুলেছি, সক্ষমতার থেকে বেশি কাজ তারা করছে; তাদের যার সক্ষমতা, তার থেকে বেশি তারা উপহার দিচ্ছে। সুতরাং এই বন্দর দেওয়াটা আমাদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর, রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর, আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া প্রমুখ।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘দুই মাস আগে শুরু হওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনার আজকে সমাপ্তি ঘটেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অব্যাহত এই আলোচনায় অনেকগুলো বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি এবং বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের ভিন্নমতও রয়েছে। খুব শিগগির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করে যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা রয়েছে, তা বিষয়ভিত্তিকভাবে আলোচনা করে দ্রুত জাতীয় সনদ তৈরিতে অগ্রসর হতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত