Ajker Patrika

খেলার মাঠে কেন হাট

সম্পাদকীয়
খেলার মাঠে কেন হাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এলাকার শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিয়ালখোওয়া উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে সপ্তাহে প্রতি শনি ও বুধবার হাট বসে। এ ছাড়া বাকি পাঁচ দিনই প্রতিষ্ঠানটির মাঠে বসে দৈনিক বাজার। হাটের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল থেকে। সারা দিন চলে বেচাকেনা। এ মাঠে আরও রয়েছে তিনটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও একটি মাদ্রাসা। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ২২ এপ্রিল একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

হাট বসানোর কারণে প্রায়ই হাটের লোকজনকে ঠেলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ঢুকতে হয়। হাটে আসা গরুর বিষ্ঠা মাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। হাটের লোকজনের হট্টগোলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। তামাকের গন্ধে ক্লাসে থাকা অসম্ভব হয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও সুস্থ বিনোদনের জন্য খেলাধুলা করা খুব প্রয়োজনীয়। কিন্তু খেলবে যে, মাঠ কোথায়? মাঠ তো গরুর দখলে। মাঠ থাকতেও ওই শিক্ষার্থীরা মাঠ-বঞ্চিত হচ্ছে। তারা ক্লাসের বিরতির সময় খেলতে পারছে না। একটি মাঠে যে শুধু শিক্ষার্থীরাই খেলাধুলা করে থাকে তা-ই নয়, ছুটির পর এলাকাবাসী উন্মুক্ত মাঠে হাঁটাচলা করতে পারেন। আড্ডা দিতে পারেন। অনেকেই মাঠে শরীরচর্চা করেন। তাই কোনো এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ থাকায় শুধু শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হন না, এলাকাবাসীও উপকৃত হন।

প্রতিটি স্কুলে খেলার মাঠ থাকা দরকার। কিন্তু দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই। আবার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ আছে, সেগুলোর অনেক মাঠই নানা কারণে দখল হয়ে আছে। যেমনটি ঘটেছে শিয়ালখোওয়া এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে। তাদের খেলার মাঠ আছে। কিন্তু সে মাঠ হাটের ইজারাদারের দখলে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না।

শিয়ালখোওয়া হাটের ইজারাদার বলেন, হাটের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বহু বছর ধরে স্কুলমাঠে হাট বসানো হচ্ছে। শুধু গত বছর স্কুলমাঠে হাট বসানো হয়নি স্থানীয় দ্বন্দ্বের কারণে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিয়মনীতি মেনে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে স্কুলমাঠে হাট বসাচ্ছি।’ তিনি আসলে ভুল কথা বলেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট বসানো কোন অর্থে নিয়মনীতির মধ্যে পড়ে?

লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন হাট বসানোর কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তিনি কেন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি? প্রশাসনের ব্যর্থতাও আছে এ ঘটনায়। কারণ দেশের উপজেলার হাটগুলো ইজারা দিয়ে থাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

শুধু শিয়ালখোওয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই

খেলার মাঠ দখল করে হাট বসানোর ঘটনা ঘটছে তা নয়, দেশের অনেক অঞ্চলে প্রভাবশালীরা এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ দখল করে হাট বসান। আমরা মনে করি, সব বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। তারা যেন সেখানে অবাধে খেলাধুলা করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ যদি মাঠ দখল করে থাকে তাহলে সেটা দখলমুক্ত করতে হবে। স্কুলের মাঠে গরুর হাট বসানোর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের গরু বানানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, সেটাও ভেবে দেখতে হবে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত