সম্পাদকীয়
নতুন বছরে প্রবেশ করলাম আমরা। পৃথিবীব্যাপী বসবাসরত নানা জনগোষ্ঠী যেমন নতুন বছরকে উৎসবের মাধ্যমে বরণ করে নেয়, তেমনি বাঙালিও নানা আনন্দ-আয়োজনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। একটি নতুন আশা, উদ্দীপনা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বছরের প্রথম দিনটিতে।
ইতিহাস মতে, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় থেকে হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করা হতো। কিন্তু হিজরি সাল চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে এর কোনো মিল পাওয়া যেত না। আর সেই সমস্যার সমাধানে মোগল সম্রাট আকবর বাংলায় বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই সময় সৌরবছর ও হিজরি সালের মধ্যে সমন্বয় করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম চালু হয়।
পুণ্যাহ, হালখাতা, বৈশাখী মেলায় রঙিন হয়ে উঠেছিল আমাদের নববর্ষ। এরপর পাকিস্তান আমলে বাঙালি সংস্কৃতি দমিয়ে রাখার একটা অপচেষ্টা চালিয়েছিল শাসকগোষ্ঠী। তাদের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথকে বর্জনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই হুমকির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ১৯৬৭ সালে ‘ছায়ানট’ প্রথম ঢাকার রমনা পার্কে পয়লা বৈশাখ বর্ষবরণ উৎসব পালনের আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় এখন এটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরেও বিভিন্ন সময়ে এটাকে হিন্দুয়ানি অপসংস্কৃতি ট্যাগ দেওয়ার অপচেষ্টা দেখা গেছে। কিন্তু এ দেশের অধিকাংশ অসাম্প্রদায়িক চিন্তার মানুষ এসব অপচেষ্টা রুখে দিয়ে বর্ষবরণ পালন করে আসছে।
কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের সঙ্গে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপিত হলেও কয়েক বছর ধরে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন ধরনের আমেজ যুক্ত হয়েছে। পয়লা বৈশাখ কেবল সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর সঙ্গে অর্থনীতিরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এখন তো পয়লা বৈশাখ মানে নতুন জামা-কাপড় পরার প্রচলন ব্যাপকভাবে হচ্ছে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। এটা আমাদের দেশের অর্থনীতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই উৎসব শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা উৎসব-আনন্দের মাধ্যমে পালন করে থাকে। একই সময়ে দেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে উদ্যাপিত হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি উৎসব। এই উৎসবে পাহাড়ের মানুষও আনন্দে মেতে ওঠে।
আমাদের প্রত্যাশা, পয়লা বৈশাখ জাগ্রত করবে আমাদের শান্তি ও সম্প্রীতির চেতনা। ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র, জাতিগোষ্ঠী-নির্বিশেষে সবার অন্তরে বাংলা নববর্ষ নতুন করে দোলা দিক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’—এই চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা এ বছরের পয়লা বৈশাখের মতো ধর্ম-মত-পথনির্বিশেষে সব বাংলাদেশির হৃদয়ে দোলা দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সব ধর্মের মানুষের মিলনের উৎসব বাংলা নববর্ষ। পয়লা বৈশাখের এই মহিমা অটুট থাকুক। ধর্মীয় সংকীর্ণতা, সাম্প্রদায়িকতার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সবাই মাতুক উৎসবের আনন্দে। আমাদের প্রত্যাশা, নতুন বছরের নতুন সূর্যোদয় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্যও নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসবে।
বাংলা নববর্ষে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে আমরা সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। শুভ নববর্ষ।
নতুন বছরে প্রবেশ করলাম আমরা। পৃথিবীব্যাপী বসবাসরত নানা জনগোষ্ঠী যেমন নতুন বছরকে উৎসবের মাধ্যমে বরণ করে নেয়, তেমনি বাঙালিও নানা আনন্দ-আয়োজনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। একটি নতুন আশা, উদ্দীপনা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বছরের প্রথম দিনটিতে।
ইতিহাস মতে, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় থেকে হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করা হতো। কিন্তু হিজরি সাল চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে এর কোনো মিল পাওয়া যেত না। আর সেই সমস্যার সমাধানে মোগল সম্রাট আকবর বাংলায় বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই সময় সৌরবছর ও হিজরি সালের মধ্যে সমন্বয় করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম চালু হয়।
পুণ্যাহ, হালখাতা, বৈশাখী মেলায় রঙিন হয়ে উঠেছিল আমাদের নববর্ষ। এরপর পাকিস্তান আমলে বাঙালি সংস্কৃতি দমিয়ে রাখার একটা অপচেষ্টা চালিয়েছিল শাসকগোষ্ঠী। তাদের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথকে বর্জনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই হুমকির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ১৯৬৭ সালে ‘ছায়ানট’ প্রথম ঢাকার রমনা পার্কে পয়লা বৈশাখ বর্ষবরণ উৎসব পালনের আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় এখন এটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরেও বিভিন্ন সময়ে এটাকে হিন্দুয়ানি অপসংস্কৃতি ট্যাগ দেওয়ার অপচেষ্টা দেখা গেছে। কিন্তু এ দেশের অধিকাংশ অসাম্প্রদায়িক চিন্তার মানুষ এসব অপচেষ্টা রুখে দিয়ে বর্ষবরণ পালন করে আসছে।
কৃষিকাজ ও খাজনা সংগ্রহের সঙ্গে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপিত হলেও কয়েক বছর ধরে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন ধরনের আমেজ যুক্ত হয়েছে। পয়লা বৈশাখ কেবল সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর সঙ্গে অর্থনীতিরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এখন তো পয়লা বৈশাখ মানে নতুন জামা-কাপড় পরার প্রচলন ব্যাপকভাবে হচ্ছে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। এটা আমাদের দেশের অর্থনীতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই উৎসব শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা উৎসব-আনন্দের মাধ্যমে পালন করে থাকে। একই সময়ে দেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে উদ্যাপিত হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি উৎসব। এই উৎসবে পাহাড়ের মানুষও আনন্দে মেতে ওঠে।
আমাদের প্রত্যাশা, পয়লা বৈশাখ জাগ্রত করবে আমাদের শান্তি ও সম্প্রীতির চেতনা। ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র, জাতিগোষ্ঠী-নির্বিশেষে সবার অন্তরে বাংলা নববর্ষ নতুন করে দোলা দিক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’—এই চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা এ বছরের পয়লা বৈশাখের মতো ধর্ম-মত-পথনির্বিশেষে সব বাংলাদেশির হৃদয়ে দোলা দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সব ধর্মের মানুষের মিলনের উৎসব বাংলা নববর্ষ। পয়লা বৈশাখের এই মহিমা অটুট থাকুক। ধর্মীয় সংকীর্ণতা, সাম্প্রদায়িকতার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সবাই মাতুক উৎসবের আনন্দে। আমাদের প্রত্যাশা, নতুন বছরের নতুন সূর্যোদয় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্যও নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসবে।
বাংলা নববর্ষে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে আমরা সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। শুভ নববর্ষ।
সূর্যোদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এবার যে নববর্ষের আগমন, তা রাঙিয়ে দিয়ে যাক প্রত্যেক মানুষের জীবন। বাংলা নববর্ষের উজ্জীবনী সুধায় স্নান করুক মানুষ। আশা ও আকাঙ্ক্ষার স্বপ্নপূরণে সার্থক হোক পৃথিবী। গ্লানি, জ্বরা মুছে গিয়ে অগ্নিস্নানে ধরণিকে শুচি করার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ...
২ দিন আগেবাংলা নববর্ষ বরণকে কেন্দ্র করে আমাদের নগরকেন্দ্রিক জীবনে উপচানো আবেগ-উচ্ছ্বাস উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই আবেগ-উচ্ছ্বাস জাতিগত পারস্পরিক সৌহার্দ্যের নয়, সমষ্টিগতও নয়, একান্তই আত্মকেন্দ্রিকতায় সীমাবদ্ধ।
২ দিন আগেআশেকা ইরশাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সাবেক চেয়ারপারসন। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র জেন্ডার, ভূ-কৌশলগত ও আঞ্চলিক সম্পর্ক নিয়ে। ফিলিস্তিন পরিস্থিতিতে আরব বিশ্বের ভূমিকা...
৩ দিন আগেরাজনীতি যদি মানুষের আশা-ভরসার প্রতীক হয়, তবে তা শুধু ঢাকার পিচঢালা রাস্তায় নয়, প্রতিটি ইউনিয়নের মাটির পথে প্রতিফলিত হতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে রাজনীতি যেন একটি দূরবর্তী বিষয়—শুধু খবরের কাগজে থাকে, জীবনের ভেতরে তা প্রবেশ করে না।
৩ দিন আগে