সম্পাদকীয়
৫০ বছর বয়সের হাফিজা খাতুন নামের এক রোগী চিকিৎসককে দেখানোর আগে সিরিয়ালের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় মঙ্গলবার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এই অপমৃত্যুর ঘটনাটি যে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে ঘটেছে, ব্যাপারটি সে রকম না। আসল ব্যাপার হলো, চিকিৎসক-সংকটসহ নানা সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন রুগ্ণ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এর আগে চারবার ভালো সেবার কারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদক পেয়েছিল, সেটার কেন এখন এ অবস্থা হলো? এ প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে লুকিয়ে আছে এটির রুগ্ণতার আসল কারণ।
২০০৯ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হলেও সে অনুপাতে চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় লোকবল বাড়ানো হয়নি। ৩৩ জন চিকিৎসকের পদের বিপরীতে এখানে বর্তমানে আছেন মাত্র ১৩ জন। আবার ৩১ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে ৯০ থেকে ১২০ জন। আর বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০০-৫১০ এবং জরুরি বিভাগে প্রায় ১৫০ জন সেবা নেয়। এ হিসাব স্পষ্ট বলে দিচ্ছে, রোগীর বিপরীতে চিকিৎসক অপ্রতুল। তাহলে দোষ কার? এখানে চিকিৎসকদের দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই।
আমাদের দেশে একটি বা কয়েকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো এ রকম না। পুরো দেশের সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার একই দশা। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্র শুধু স্বাস্থ্য খাতে নয়, সব ক্ষেত্রে জনগণকে বঞ্চিত করছে।
অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালের করুণ অবস্থার কারণে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। বেসরকারি হাসপাতালে টাকাওয়ালা ছাড়া গরিব মানুষ চিকিৎসা নিতে পারেন না। তাহলে কি রাষ্ট্র স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বেসরকারীকরণে উৎসাহ দিচ্ছে না? কথা ছিল স্বাস্থ্যব্যবস্থা হবে জনবান্ধব। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এত বছর পরেও সেদিকে কোনো সরকারকেই মনোযোগ দিতে দেখা যায়নি। কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারতের অনেক প্রদেশ স্বাস্থ্যব্যবস্থায় রোল মডেল হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের দেশের অনেকে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার জন্য ভারতের সেইসব জায়গায় চিকিৎসা নিতে যান। আমাদের দেশে যদি উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা করা যেত, তাহলে এ দেশের টাকা বাইরের দেশে যেতে পারত না। এ টাকা আমাদের অর্থনীতিতে যোগ হতো।
আমাদের দেশের বিগত সময়ের সরকারগুলো স্বাস্থ্য খাত উন্নত করার কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দিন দিন অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে উঠে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
যত দিন পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য যথার্থ পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হবে না, তত দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোরও রুগ্ণ দশার অবসান হবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার দৈন্য কাটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
৫০ বছর বয়সের হাফিজা খাতুন নামের এক রোগী চিকিৎসককে দেখানোর আগে সিরিয়ালের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় মঙ্গলবার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এই অপমৃত্যুর ঘটনাটি যে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে ঘটেছে, ব্যাপারটি সে রকম না। আসল ব্যাপার হলো, চিকিৎসক-সংকটসহ নানা সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন রুগ্ণ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এর আগে চারবার ভালো সেবার কারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদক পেয়েছিল, সেটার কেন এখন এ অবস্থা হলো? এ প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে লুকিয়ে আছে এটির রুগ্ণতার আসল কারণ।
২০০৯ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হলেও সে অনুপাতে চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় লোকবল বাড়ানো হয়নি। ৩৩ জন চিকিৎসকের পদের বিপরীতে এখানে বর্তমানে আছেন মাত্র ১৩ জন। আবার ৩১ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে ৯০ থেকে ১২০ জন। আর বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০০-৫১০ এবং জরুরি বিভাগে প্রায় ১৫০ জন সেবা নেয়। এ হিসাব স্পষ্ট বলে দিচ্ছে, রোগীর বিপরীতে চিকিৎসক অপ্রতুল। তাহলে দোষ কার? এখানে চিকিৎসকদের দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই।
আমাদের দেশে একটি বা কয়েকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো এ রকম না। পুরো দেশের সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার একই দশা। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্র শুধু স্বাস্থ্য খাতে নয়, সব ক্ষেত্রে জনগণকে বঞ্চিত করছে।
অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালের করুণ অবস্থার কারণে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। বেসরকারি হাসপাতালে টাকাওয়ালা ছাড়া গরিব মানুষ চিকিৎসা নিতে পারেন না। তাহলে কি রাষ্ট্র স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বেসরকারীকরণে উৎসাহ দিচ্ছে না? কথা ছিল স্বাস্থ্যব্যবস্থা হবে জনবান্ধব। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এত বছর পরেও সেদিকে কোনো সরকারকেই মনোযোগ দিতে দেখা যায়নি। কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারতের অনেক প্রদেশ স্বাস্থ্যব্যবস্থায় রোল মডেল হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের দেশের অনেকে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার জন্য ভারতের সেইসব জায়গায় চিকিৎসা নিতে যান। আমাদের দেশে যদি উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা করা যেত, তাহলে এ দেশের টাকা বাইরের দেশে যেতে পারত না। এ টাকা আমাদের অর্থনীতিতে যোগ হতো।
আমাদের দেশের বিগত সময়ের সরকারগুলো স্বাস্থ্য খাত উন্নত করার কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দিন দিন অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে উঠে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
যত দিন পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য যথার্থ পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হবে না, তত দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোরও রুগ্ণ দশার অবসান হবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার দৈন্য কাটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
৩ মিনিট আগেবাংলাদেশের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ফেব্রুয়ারি একটি অনন্য মাস। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য যে পথ রচনা করে দিয়েছে, সেই পথই দেশকে পৌঁছে দিয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। প্রকৃতপক্ষে এ দেশের আপামর ছাত্র-শ্রমিক-জনতা রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে সেই পথকে করেছে মসৃণ...
৭ মিনিট আগেবাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি একধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নানা বাধা দেখা যাচ্ছে। এসব ঘটনা শুধু বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিবন্ধকতা নয়; বরং বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন।
৯ মিনিট আগেআজ থেকে বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলা শুরু হচ্ছে। মাসব্যাপী এই আয়োজন প্রাণের মেলায় পরিণত হোক, সেই কামনা করি। তবে আজ বইমেলা নিয়ে নয়, বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে যে নাটক অভিনীত হলো, তা নিয়েই কিছু কথা বলা সংগত হবে।
১৩ মিনিট আগে