রুশা চৌধুরী
সকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
এ দেশের মানুষ আজও ঋতুবদল ভালোবাসে।
‘জল ছুটে যায় এঁকেবেঁকে মাঠের পরে,
আজ মেঘের জটা উড়িয়ে দিয়ে নৃত্য কে করে।’
এই মেঘের দিনগুলো যেই না চলে গেল, অমনি ফুসমন্তরে মেঘ হটিয়ে ধানখেতের মাথার ওপরে এক অচেনা আকাশ! এই সময়ের সকালগুলো যেই হেম আলো দিয়ে মাখা, তার নামেই সেই ‘হেমন্ত’।
পথের ওপর শিউলির হাসি, কাঞ্চনের রূপ আর অল্পবিস্তর পাতা ঝরে পড়ার শুরু। পথের দুই পাশে যে হাওয়া এসে ছুঁয়ে যায়, সেই হাওয়ার নাম ‘শীতালো হাওয়া’, তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নতুন নতুন পাখি আর ফুলের ঘ্রাণ। হেমন্তের আকাশটাকে ‘চাল ধোয়া পানির মতো’ দেখেছিলেন সেই বিষণ্ন কবি, যার নামে জীবন আজও আনন্দে ভাসে। একরাশ আলো নিয়ে হেসে উঠে আকাশটা গান গায়, ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও।’
এই যে ঋতুচক্র, এ যেন আমাদের জীবনেরই মতো। থামতে জানে না। শুধু ‘ছুটে চলো’ আর ‘বয়ে যাও’—কে যেন এই তাড়া নিত্য দিয়ে যাচ্ছে। যতই চড়াই আসুক তা উতরে যেতে হবে, আর কেউ না পারলেই বা কী! থাকুক সে পড়ে পেছনে, জীবনের তাতে কিচ্ছু যায়-আসবে না। তার অন্য সব অনুষঙ্গ নিয়ে সে ঠিক নিজের পথে এগিয়ে যাবে।
হিমেল হেমন্তের অচেনা, উষ্কখুষ্ক ঋতুটিকে বড্ড ভালোবাসতেন সেই আপনভোলা নিঃসঙ্গতাপ্রিয় বাঙালির ভীষণ প্রিয় কবি জীবনানন্দ। তাই তো এমন করে বলে গেছেন,
‘কিছুক্ষণ অঘ্রাণের অস্পষ্ট জগতে হাঁটলাম, চিল উড়ে চলে গেছে—কুয়াশার প্রান্তরের পথে
দু-একটা সজারুর আসা-যাওয়া;
... ... ... ... ...
আমাদের জীবনের অনেক অতীত ব্যাপ্তি আজো যেন লেগে আছে বহতা পাখায়’
জীবনানন্দ থেকে আবার ফিরে যাই আমার জন্মভূমির পাতাঝরা গাছগুলোর কাছে, যারা
এত দিনের বহন করা পত্রপল্লবের মায়া ত্যাগ করছে। কিছুদিন পরেই তার রিক্ততার শুরু,
সেই যে প্রিয় কবির ভাষায়—
‘রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন,
ব্যক্ত হোক জীবনের জয়’
আদিগন্ত ক্যানভাসে আঁকা প্রকৃতির এই সৌন্দর্যে কালি ছিটাই আমরা, মানুষেরা। কেন? কারণ সেই পুরোনো আমরা মানুষ, আমাদের অনেক বুদ্ধি, অনেক লোভ, অনেক চাহিদা, আর সবশেষে ‘শ্রেষ্ঠত্ব’ নিয়েই আমাদের তৃপ্ত থাকা।
প্রিয় হেমন্ত,
যে আনমনা মন আমাদের তোমার কাছে নিয়ে যায়, সেই ‘তুমি’ যেন চিরকালের এক পথভোলা পথিক! এই দেশে হঠাৎ আসো, হঠাৎ চলে যাও, আমাদের শস্যভান্ডার পূর্ণ করে দিয়ে ‘হিমের রাতের ঐ গগনের দীপগুলোরে হেমন্তিকা করল গোপন আঁচল ঘিরে’, এই চিরচেনা গানের সুরে ভাসাও। বকুল ডালের আগায় জ্যোৎস্না হাসছে, আকাশের মলিনতা ঢাকতে পূর্ণশশীর হাসি, নাম না জানা ঘুমহারা পাখিরা বলে যাচ্ছে—
‘হায় হেমন্তলক্ষ্মী তোমার নয়ন কেন ঢাকা
হিমের ধন ঘোমটাখানি ধূমল রঙে আঁকা।’
অল্প এই সময়টা আলো করে রাখার জন্যই তুমি বাঙালির হেমন্তিকা।
সকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
এ দেশের মানুষ আজও ঋতুবদল ভালোবাসে।
‘জল ছুটে যায় এঁকেবেঁকে মাঠের পরে,
আজ মেঘের জটা উড়িয়ে দিয়ে নৃত্য কে করে।’
এই মেঘের দিনগুলো যেই না চলে গেল, অমনি ফুসমন্তরে মেঘ হটিয়ে ধানখেতের মাথার ওপরে এক অচেনা আকাশ! এই সময়ের সকালগুলো যেই হেম আলো দিয়ে মাখা, তার নামেই সেই ‘হেমন্ত’।
পথের ওপর শিউলির হাসি, কাঞ্চনের রূপ আর অল্পবিস্তর পাতা ঝরে পড়ার শুরু। পথের দুই পাশে যে হাওয়া এসে ছুঁয়ে যায়, সেই হাওয়ার নাম ‘শীতালো হাওয়া’, তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নতুন নতুন পাখি আর ফুলের ঘ্রাণ। হেমন্তের আকাশটাকে ‘চাল ধোয়া পানির মতো’ দেখেছিলেন সেই বিষণ্ন কবি, যার নামে জীবন আজও আনন্দে ভাসে। একরাশ আলো নিয়ে হেসে উঠে আকাশটা গান গায়, ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও।’
এই যে ঋতুচক্র, এ যেন আমাদের জীবনেরই মতো। থামতে জানে না। শুধু ‘ছুটে চলো’ আর ‘বয়ে যাও’—কে যেন এই তাড়া নিত্য দিয়ে যাচ্ছে। যতই চড়াই আসুক তা উতরে যেতে হবে, আর কেউ না পারলেই বা কী! থাকুক সে পড়ে পেছনে, জীবনের তাতে কিচ্ছু যায়-আসবে না। তার অন্য সব অনুষঙ্গ নিয়ে সে ঠিক নিজের পথে এগিয়ে যাবে।
হিমেল হেমন্তের অচেনা, উষ্কখুষ্ক ঋতুটিকে বড্ড ভালোবাসতেন সেই আপনভোলা নিঃসঙ্গতাপ্রিয় বাঙালির ভীষণ প্রিয় কবি জীবনানন্দ। তাই তো এমন করে বলে গেছেন,
‘কিছুক্ষণ অঘ্রাণের অস্পষ্ট জগতে হাঁটলাম, চিল উড়ে চলে গেছে—কুয়াশার প্রান্তরের পথে
দু-একটা সজারুর আসা-যাওয়া;
... ... ... ... ...
আমাদের জীবনের অনেক অতীত ব্যাপ্তি আজো যেন লেগে আছে বহতা পাখায়’
জীবনানন্দ থেকে আবার ফিরে যাই আমার জন্মভূমির পাতাঝরা গাছগুলোর কাছে, যারা
এত দিনের বহন করা পত্রপল্লবের মায়া ত্যাগ করছে। কিছুদিন পরেই তার রিক্ততার শুরু,
সেই যে প্রিয় কবির ভাষায়—
‘রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন,
ব্যক্ত হোক জীবনের জয়’
আদিগন্ত ক্যানভাসে আঁকা প্রকৃতির এই সৌন্দর্যে কালি ছিটাই আমরা, মানুষেরা। কেন? কারণ সেই পুরোনো আমরা মানুষ, আমাদের অনেক বুদ্ধি, অনেক লোভ, অনেক চাহিদা, আর সবশেষে ‘শ্রেষ্ঠত্ব’ নিয়েই আমাদের তৃপ্ত থাকা।
প্রিয় হেমন্ত,
যে আনমনা মন আমাদের তোমার কাছে নিয়ে যায়, সেই ‘তুমি’ যেন চিরকালের এক পথভোলা পথিক! এই দেশে হঠাৎ আসো, হঠাৎ চলে যাও, আমাদের শস্যভান্ডার পূর্ণ করে দিয়ে ‘হিমের রাতের ঐ গগনের দীপগুলোরে হেমন্তিকা করল গোপন আঁচল ঘিরে’, এই চিরচেনা গানের সুরে ভাসাও। বকুল ডালের আগায় জ্যোৎস্না হাসছে, আকাশের মলিনতা ঢাকতে পূর্ণশশীর হাসি, নাম না জানা ঘুমহারা পাখিরা বলে যাচ্ছে—
‘হায় হেমন্তলক্ষ্মী তোমার নয়ন কেন ঢাকা
হিমের ধন ঘোমটাখানি ধূমল রঙে আঁকা।’
অল্প এই সময়টা আলো করে রাখার জন্যই তুমি বাঙালির হেমন্তিকা।
গত সংখ্যায় লিখেছিলাম, এখন আর ছাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না, চারদিকে পরীক্ষার্থী। কিন্তু দ্রুতই দেখা যাচ্ছে, ছাত্র এবং পরীক্ষার্থী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদের একটা বৃহদাংশ রাজনীতিবিদে পরিণত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের অঙ্গুলি হেলনে বড় বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও হয়ে যাচ্ছে। ভেবেছিলাম প্রাথমিক শিক্ষা
১৬ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞানীরা বিংশ শতাব্দীজুড়ে বহির্জাগতিক প্রাণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছেন। খুঁজেছেন কার্বনভিত্তিক, সিলিকনভিত্তিক বা অ্যামোনিয়া যৌগনির্ভর প্রাণ। এটা আমাদের জানা জরুরি যে প্রাণের প্রকৃতি, আর অন্য জায়গায় প্রাণ আছে কি না, তা আসলে একই প্রশ্নের দুটো দিক। তা হলো, ‘কেন আমরা এখানে?’ বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে,
১৬ ঘণ্টা আগেপরিবার হলো মূলত রক্ত-সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠন, যেখানে সব সদস্যের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং বিনোদনের আয়োজন হয়ে থাকে। পরিবার কখন কী কারণে গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বেশির ভাগের মত হলো, মানুষ সমতলে বসবাস করার সময় কৃষিকাজ শিখে ফেলে। কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণের জন্য গোলাঘর
১৬ ঘণ্টা আগেনিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি, এ কথা নতুন নয়। এবং এ ব্যাপারে প্রমাণের অভাব নেই। একটা কিছু নিষিদ্ধ করলেই যে তা ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন ভাবাটাই ভুল। ধরুন, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সেই দলটি যে ছদ্মবেশে বা তলে তলে রাজনীতি করবে না, সেই গ্যারান্টি কে দিতে পারে? তেমনি কেউ
১৬ ঘণ্টা আগে