Ajker Patrika

মুক্ত গণমাধ্যম, মুক্তিযুদ্ধ এবং মোবাইল ফোন

মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একান্ত অপরিহার্য একটি অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মময় জীবনের সবটা সময় আমরা আজকাল মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকি কিংবা বলা যায় ঘুমের সময় ছাড়া যতক্ষণ জেগে থাকি ততক্ষণই মোবাইল ফোন আমাদের সচল করে রাখে। আধুনিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটি যখন ছিল না তখন হয়তো আমরা আরেকটু স্বস্তির সঙ্গে সময় কাটাতে পারতাম।

ড. মো. গোলাম রহমান
আপডেট : ০৩ মে ২০২৫, ০৮: ২৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৩ মে পালিত হয় বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবস। এই দিনটিতে সাংবাদিকেরা আত্ম-উপলব্ধির দিন হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা ও পেশাগত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে থাকেন।

বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির সম্ভাবনায় বিশ্ব আজ তথ্যপ্রবাহের মাধ্যমে প্রায় সব সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তথ্য সেবার অন্তর্গত এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জনগণের তথ্য চাহিদা মেটানো ও ব্যক্তি পর্যায়ে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আজকে দায়বদ্ধ। এখানে শুধু ভোক্তা এবং বিক্রেতার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলেই চলবে না। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়ত্বশীলতা স্বীকার করতে হবে। সাম্প্রতিক বিশ্বে সংবাদপত্র তথা সংবাদবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে তথ্যের গুণাগুণ বিচার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অনেক দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদ সরবরাহের সুযোগের সঙ্গে ভোক্তার তথ্য ব্যবহারের অধিকার নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। আমাদের দেশে মানবসম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করে সময়োপযোগী আধুনিক তথ্যব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং তার জন্য আইনি কাঠামোর আধুনিকায়ন প্রয়োজন। পাশ্চাত্যের অনেক দেশেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদ সরবরাহ এবং সংবাদ সম্পাদনার কাজ সহজ করা হয়েছে কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একই ধারায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সেই সুযোগ কার্যকর করা কতখানি যথাযথ হচ্ছে, তা নিরীক্ষা করা দরকার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপরিকল্পিত ব্যবহার এই ক্ষেত্রে সঠিক হবে না বরং তা আত্মঘাতী হতে পারে। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সেই মানসিকতায় নিজেদের সমৃদ্ধ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অস্বীকার করে আমরা নিশ্চয়ই লাভবান হতে পারব না। বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় রাখতে হবে যে সম্ভাবনাময় বিশ্বে আমরা নিশ্চয়ই বিচ্ছিন্ন থাকতে পারব না। বিজ্ঞানের অগ্রগতি অস্বীকার করেও থাকতে পারব না। সব পক্ষের সমন্বয় ও সমঝোতা এবং সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অগ্রসর হওয়াই বিবেচনাপ্রসূত কাজ হবে বলে মনে করি, যাতে আমরা জাতি হিসেবে যেন পিছিয়ে না পড়ি। আজকের দিনে তাই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন পেশা তথা রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোর মেলবন্ধন গড়ে তুলতে হবে, যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থের সংঘাত প্রকট হয়ে না ওঠে। গতিশীল সমাজব্যবস্থায় একই সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নৈতিক অবস্থান যেন পারস্পরিক সুশাসনের সহজাত প্রক্রিয়া হয়।

আমরা জানি, আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা এই দিনে দেশে দেশে আলোচনা, সেমিনার, প্রতর্ক-বিতর্ক, সভা-সমিতিসহ বিশেষায়িত লেখা প্রকাশ থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের ওপর নানা ধরনের লাঞ্ছনা-গঞ্জনার ফিরিস্তি প্রকাশ করে তার প্রতিকার দাবি করে থাকেন এবং পেশাগত অধিকার আদায়ে সোচ্চার হন। বরং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁরা শুধু সংবাদ প্রকাশ কিংবা সংবাদ আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে সব সেক্টরে সমন্বিতভাবে সক্রিয় অবদান রাখতে পারেন।

দুই.

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আজকের পত্রিকায় একটি লেখা লিখেছেন ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আসলেই শেষ হয়নি’ শীর্ষক শিরোনামে। তিনি গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে মৌলবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একদিক দিয়ে এটা অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। কেননা, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান ও পরাভূত করে। কিন্তু পরাভূত শক্তি আবার ফিরে এসেছে। তার পরাজয়টা কেবল যে সশস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটেছিল তা নয়, ঘটেছিল আদর্শিকভাবেও। তাহলে কেন তার পুনরুত্থান?...দৈহিকভাবে হেরে গিয়ে এবং ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে ছিল মাত্র, পরে পরিস্থিতি আগের মতো প্রতিকূল নেই দেখে ফিরে এসেছে।’

কথা হচ্ছে, দেশের মানুষ গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ নিতে পারেনি, কয়েক যুগ পার হয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের সত্যিকার অর্থে মুক্তি মেলেনি। কতিপয় ব্যক্তি দুঃশাসনের ফাঁক দিয়ে নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করেছেন মাত্র। সমাজ বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আধুনিক জীবনমানের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়। পরিবার ও সমাজজীবন স্বীকার করে মানুষ সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা করে। সেখানে দেশ, কাল, পাত্র যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের শাসনব্যবস্থা ও শাসকগোষ্ঠীর নিয়ম-নীতি, আইনের শাসন এবং ন্যায়পরায়ণতাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। একটি সমাজ রাতারাতি তৈরি হয় না। যুগ যুগ ধরে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একটা স্বাভাবিক অবস্থান সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক দল এবং নেতা-কর্মীরা ন্যায়পরায়ণ হলেই কেবল জনগণের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। আমাদের দেশে মানুষের ত্যাগের ইতিহাস আছে। জীবন উৎসর্গ করে বিশ্বে নজির স্থাপনের গৌরব আছে।

দেশে দেশে শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য নানা রকমের মতবাদ আছে। বিশ্বে কোনো দেশে শতভাগ পরিশুদ্ধ কোনো ব্যবস্থা রয়েছে, এমন দাবি কেউ করতে পারবেন না। কিছু ভালো, কিছু মন্দ—এমন সব মতবাদের ওপর ভিত্তি করেই গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা চালু আছে। গণতন্ত্র থাকলেও সব দেশেই আবার একই রকমের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু নেই। ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা কিংবা লাতিন আমেরিকার যেকোনো দেশের একটির সঙ্গে আরেকটির মিল নেই। কিন্তু তারপরও দেখা যায় অনেক দেশের শাসনব্যবস্থা নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট জবাবদিহিমূলক এবং মানুষের অধিকার অর্জনের অগ্রাধিকার দেয়। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। আমরা তো আরও পিছিয়ে।

আমরা জানি যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই বিশ্বের দেশগুলোকে গণতন্ত্র সূচকে বিভক্ত করে রেখেছে। গণতন্ত্র সূচকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল বাংলাদেশে ‘হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা’ বিদ্যমান রয়েছে। গণতন্ত্র সূচকে গতবারের তুলনায় পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫তম, গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে। ২০২২ সালের ইআইইউর গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশ ৭৩তম অবস্থানে ছিল। এই সংস্থার মতে, সূচকে প্রতিটি দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়, সেগুলো হলো পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিকদের স্বাধীনতা—এ পাঁচটি ধাপে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ভিত্তি করে সূচকে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার হালনাগাদ অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়। ইআইইউ হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা বলতে এমন এক ব্যবস্থাকে বোঝাচ্ছে, যেখানে প্রায়ই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। এ শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলের ওপর সরকারের চাপ থাকে। বিচারব্যবস্থা পুরো স্বাধীন নয়। সাংবাদিকদের চাপ দেওয়া ও হয়রানি করা হয়। দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, দুর্বল আইনের শাসন, দুর্বল নাগরিক সমাজ এমন শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচনা করা হয়।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশ ২৫ ধাপ পিছিয়েছে। ১৬৫টি দেশ ও দুটি অঞ্চলের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে বিশ্বের আর কোনো দেশের গণতন্ত্রের সূচক এতটা পেছায়নি।

২০২৩ সালের ইআইইউর গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫তম। ২০২২ সালে তা ছিল ৭৩তম। অর্থাৎ ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২০২৪ সালে এক লাফে ২৫ ধাপ পিছিয়ে ১০০-এ নেমে গেছে। বাংলাদেশের সমান স্কোর নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনও ১০০তম অবস্থানে রয়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে দেশটির অবস্থান নেমেছে তিন ধাপ। সেখানে বাংলাদেশের নেমেছে ২৫ ধাপ।

স্বাধীনতার মূল্যবোধ লালন, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রয়োগের নীতি কার্যকর করা আমাদের সংবিধানের অন্যতম অন্তর্নিহিত শক্তি। গণতান্ত্রিক এই শক্তি কার্যকর না থাকলে ধরে নেওয়া যেতে পারে দেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি।

তিন.

সম্প্রতি একটি খবরের প্রতি চোখ পড়ল। সেটি হলো, সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় রাজধানীর উত্তরায় এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তরা কোর্টবাড়ি এলাকার রেললাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন ওই দম্পতি। এ সময় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ইতি নামের ওই নারী মারা যান। পথচারীরা ওই নারীর স্বামী আহত মাসুমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায় বলে জানা গেছে। আহত অবস্থায় যুবককে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনিও মারা যান। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, কয়েকজন পথচারী ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে হাসপাতালে কোনো স্বজন না আসায় তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একান্ত অপরিহার্য একটি অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মময় জীবনের সবটা সময় আমরা আজকাল মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকি কিংবা বলা যায় ঘুমের সময় ছাড়া যতক্ষণ জেগে থাকি ততক্ষণই মোবাইল ফোন আমাদের সচল করে রাখে। আধুনিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটি যখন ছিল না, তখন হয়তো আমরা আরেকটু স্বস্তির সঙ্গে সময় কাটাতে পারতাম। তবে যোগাযোগের এই মাধ্যমটি থাকার ফলে জীবন আমাদের অনেক সহজ হয়েছে, কাজের গতি বেড়েছে, আমাদের মতো জনবহুল দেশে পথঘাটের যে ব্যস্ততা, তাতে করে সময় বাঁচানোর একটা সহজ গতি হয়েছে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু আধুনিক গতিময় এ জীবনে চলার পথে নিজেকে সাবধানতার সঙ্গে পথ চলতে হবে, তার কোনো বিকল্প নেই। একটু সাবধান হলে নিশ্চয়ই সেলফি তোলা এই দম্পতি অকালে প্রাণ হারাতেন না।

মোবাইল ফোন নিয়ে আরেকটি সংবাদ। আমরা জানি, মোবাইল ফোনের বহুবিধ ব্যবহার বিশ্বব্যাপী এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। আমাদের দেশেই ইদানীং বিকাশ, রকেট, মাই ক্যাশ, ইউক্যাশ—এসব নামে ১৩টি ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বিবিধ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সম্প্রসারণের ফলে গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজারের অধিক। জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ২ হাজারের অধিক। তবে গ্রাহক বাড়লেও ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন কমেছে। জানুয়ারিতে যেখানে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮০ কোটি টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে বিদেশ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। এতে করে নগদ টাকার ওপর নির্ভরতা কমে আসায় দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার হয়েছে।

লেখক: সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত