আব্দুর রাজ্জাক
‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে—
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?’—বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ গানটি লিখেছিলেন শিশুদের স্বাধীনতার আনন্দে উদ্বেলিত করে মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের জন্য। খুবই সুন্দর সুর ও ছন্দে গানটি গাওয়া হচ্ছে শত বছর যাবৎ। গানটির কথা মনে পড়ে গেল বর্তমান সময়ে আমাদের এই জাতির কিছু কর্মকাণ্ড দেখে। এমন এমন কর্মকাণ্ড, দাবি-দাওয়া প্রতিদিন দেখি, যার যার অবস্থান থেকে বিভিন্ন গোষ্ঠী করে যাচ্ছে একেবারেই নিজেদের কথা বিবেচনা করে, নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবে, অন্যদের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় না রেখে। সার্বভৌম রাষ্ট্রের আইনের তোয়াক্কা না করে দাবি-দাওয়া পেশ করা ও এসব আদায়ের জন্য নিজেদের মনমতো সব আজগুবি কাজ করা, সুবিধামতো ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও আন্দোলন-সংগ্রাম করা চলছে। চতুর্দিকে দিনের পর দিন এই দাবি-দাওয়া ও আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে মনে হচ্ছে, এ দেশে ‘আমরা সবাই রাজা’! সেই যে প্রাচীনকালের রাজারা তাঁর রাজ্যে যা খুশি করতে পারতেন একক সিদ্ধান্তে, শুধু দরকার হতো রাজার সদিচ্ছা ও ফরমান জারি করা বা হুকুম দেওয়া।
বর্তমান নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রথম যে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া গেল, সেটা ছিল এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রদের মধ্য থেকে। তারা সাত বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল, বাকি পরীক্ষা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা দেবে না, এই বলে আন্দোলন করে সচিবালয় ঘেরাও করে এক দিনের মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছ থেকে প্রজ্ঞাপন বের করে নিয়ে এসেছিল। এই আন্দোলনে তারা সফল হয়েছিল। অবশ্য এইচএসসির ফলাফলের পরে দ্বিতীয় আন্দোলন অর্থাৎ যারা পরীক্ষা দিয়েছে সবাইকে পাস করাতে হবে, সেই আন্দোলনে তারা সফল হয়নি। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হয়েছিল—সব দাবি মানা যায় না, অন্যায় দাবি মানা যায় না, সব ক্ষেত্রে মাথা নত করা যায় না। রাষ্ট্রকে মাঝে মাঝে কঠোর হতে হয়, গুটিকয়েক মানুষের অন্যায্য ও অন্যায় দাবিকে মানতে গিয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও আপামর জনসাধারণের মঙ্গলের জন্য রাষ্ট্রকে কঠোর হতে হয়।
কয়েক দিন যাবৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে বেশ অভিযোগ করে আসছিল যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি আদেশ জারি করেছে। শুক্র, শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনে বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত, অন্যান্য দিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, বার্ন ইউনিট, শিববাড়ী ক্রসিং, ফুলার রোড, পলাশী মোড় ও নীলক্ষেত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে স্টিকার ও জরুরি সেবার যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে যেসব শিক্ষার্থী বুয়েটে প্রবেশ করে, তাদের জন্য একটি বিড়ম্বনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে এই আদেশ জারির পর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু তাদের স্বার্থটুকু দেখল, আশপাশের যে আরও বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা একবারও ভেবে দেখেনি। এখানে খণ্ডিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশ্যই স্বাধীনতা আছে তাদের ক্যাম্পাসের মধ্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ব্যবস্থা গ্রহণের। তাই বলে সিটি করপোরেশনের রাস্তা, সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রাখার আদেশ দেওয়ার ন্যায়সংগত অধিকার তাদের আছে কি না, সেটা সবাই বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
একটি শহরে স্বাচ্ছন্দ্যে মানুষের চলাফেরার জন্য কমপক্ষে হলেও ২৫ ভাগ খালি জায়গা থাকতে হয়, রাস্তা থাকতে হয় এই ২৫ ভাগ জায়গার ওপরে। আর ঢাকা শহরে রয়েছে ৭ ভাগ খালি জায়গা। ঘনবসতিপূর্ণ শহরে এই ৭ ভাগ খোলা জায়গার ফুটপাতে বসে হকার, হাঁটাচলার পথ প্রায় সংকীর্ণ, কোনো কোনো জায়গা একেবারেই চলার অনুপযোগী। তার মধ্যে ইচ্ছেমতো আদেশ জারি করে সবার চলার কিছু পথ বন্ধ করে দেওয়া, এটা কী রকম ব্যবস্থা!
এ রকম প্রতিটি ওয়ার্ডে দেখবেন লোহার গেট দিয়ে কোনো কোনো সোসাইটি বা সমিতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু রাস্তা বন্ধ করে রাখে তাদের এলাকার শান্তিশৃঙ্খলার জন্য। এই এলাকাটা তাদের হলেও এলাকার রাস্তাঘাট কিন্তু ঢাকা সিটি করপোরেশনের। সেদিকে খেয়াল না রেখে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া—সবাই দেখেও দেখছে না।
মাঝে মাঝে শাহবাগে একদল লোক নির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া নিয়ে শাহবাগ মোড় বন্ধ করে দিয়ে মিছিল-মিটিং করছে। এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, শাহবাগ বন্ধ করে দিলে পুরো ঢাকা শহর প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এখন আবার দেখছি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের রাস্তাও বন্ধ করে দাবি আদায় চলছে। প্রেসক্লাবের সামনে সমানতালে সারা বছর চলছে দাবি-দাওয়া আদায়ের মঞ্চ। কোনো কোনো সময় ফুটপাত তো দখল হয়ই, সামনের রাস্তাও দখল হয়ে যায়।
ঢাকা শহরের প্রতিটা জায়গায়, প্রতিটা বাড়ির সামনে এখন আর কোনো রকম হাঁটাচলা করার অবস্থা নেই। প্রতিটা বাড়ির সামনে থেকে সারা শহরে একেবারে ছেয়ে গেছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব রিকশার কারণে সাধারণভাবে চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা কোনো আইনকানুন মানেন না। যেদিক থেকে খুশি চলাচল করেন। এইসব যানবাহনের গতি সীমিত করা বা ট্রাফিক আইন মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কি নেই, সেটা বোঝাও যাচ্ছে না। প্রতিদিন ঢাকা শহরে শত শত দুর্ঘটনা ঘটছে এই ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে, কেউ দেখার নেই। অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে, যদি এসব রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে অন্য সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে শুধু এই ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যবস্থা করে দিতে হবে!
যার যার অবস্থান থেকে আমরা সবাই স্বাধীন। এই স্বাধীন দেশের কোনো কোনো নির্দিষ্ট জায়গার জন্য আমরা নিজেদের রাজত্ব কায়েম করেছি। আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে—চরণটি আমরা ভালোভাবে আত্মস্থ করেছি। আমরা যে আমাদের স্বাধীনতা উপভোগ করার জন্য অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করছি, সেদিকে আমাদের একেবারেই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
আমাদের এই সচেতনতাটুকু এখনই বাড়াতে হবে। আমি যেমন আমার রাজত্বে স্বাধীন, অন্য একজন মানুষও তার জায়গায় স্বাধীন। এই দুই স্বাধীনতা মিলে সবার জন্য যেটা ভালো, সেই কাজটি সমন্বয় করার জন্য আছে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী। তাই ‘আমি স্বাধীন’ না ভেবে সবাই যদি ‘আমরা স্বাধীন’ ভাবি, তাহলেই আমাদের এই সমাজ সুস্থভাবে চলবে, আমরা সবাই একযোগে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে—
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?’—বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ গানটি লিখেছিলেন শিশুদের স্বাধীনতার আনন্দে উদ্বেলিত করে মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের জন্য। খুবই সুন্দর সুর ও ছন্দে গানটি গাওয়া হচ্ছে শত বছর যাবৎ। গানটির কথা মনে পড়ে গেল বর্তমান সময়ে আমাদের এই জাতির কিছু কর্মকাণ্ড দেখে। এমন এমন কর্মকাণ্ড, দাবি-দাওয়া প্রতিদিন দেখি, যার যার অবস্থান থেকে বিভিন্ন গোষ্ঠী করে যাচ্ছে একেবারেই নিজেদের কথা বিবেচনা করে, নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবে, অন্যদের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় না রেখে। সার্বভৌম রাষ্ট্রের আইনের তোয়াক্কা না করে দাবি-দাওয়া পেশ করা ও এসব আদায়ের জন্য নিজেদের মনমতো সব আজগুবি কাজ করা, সুবিধামতো ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও আন্দোলন-সংগ্রাম করা চলছে। চতুর্দিকে দিনের পর দিন এই দাবি-দাওয়া ও আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে মনে হচ্ছে, এ দেশে ‘আমরা সবাই রাজা’! সেই যে প্রাচীনকালের রাজারা তাঁর রাজ্যে যা খুশি করতে পারতেন একক সিদ্ধান্তে, শুধু দরকার হতো রাজার সদিচ্ছা ও ফরমান জারি করা বা হুকুম দেওয়া।
বর্তমান নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রথম যে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া গেল, সেটা ছিল এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রদের মধ্য থেকে। তারা সাত বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল, বাকি পরীক্ষা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা দেবে না, এই বলে আন্দোলন করে সচিবালয় ঘেরাও করে এক দিনের মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছ থেকে প্রজ্ঞাপন বের করে নিয়ে এসেছিল। এই আন্দোলনে তারা সফল হয়েছিল। অবশ্য এইচএসসির ফলাফলের পরে দ্বিতীয় আন্দোলন অর্থাৎ যারা পরীক্ষা দিয়েছে সবাইকে পাস করাতে হবে, সেই আন্দোলনে তারা সফল হয়নি। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হয়েছিল—সব দাবি মানা যায় না, অন্যায় দাবি মানা যায় না, সব ক্ষেত্রে মাথা নত করা যায় না। রাষ্ট্রকে মাঝে মাঝে কঠোর হতে হয়, গুটিকয়েক মানুষের অন্যায্য ও অন্যায় দাবিকে মানতে গিয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও আপামর জনসাধারণের মঙ্গলের জন্য রাষ্ট্রকে কঠোর হতে হয়।
কয়েক দিন যাবৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে বেশ অভিযোগ করে আসছিল যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি আদেশ জারি করেছে। শুক্র, শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনে বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত, অন্যান্য দিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, বার্ন ইউনিট, শিববাড়ী ক্রসিং, ফুলার রোড, পলাশী মোড় ও নীলক্ষেত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে স্টিকার ও জরুরি সেবার যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে যেসব শিক্ষার্থী বুয়েটে প্রবেশ করে, তাদের জন্য একটি বিড়ম্বনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে এই আদেশ জারির পর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু তাদের স্বার্থটুকু দেখল, আশপাশের যে আরও বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা একবারও ভেবে দেখেনি। এখানে খণ্ডিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশ্যই স্বাধীনতা আছে তাদের ক্যাম্পাসের মধ্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ব্যবস্থা গ্রহণের। তাই বলে সিটি করপোরেশনের রাস্তা, সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রাখার আদেশ দেওয়ার ন্যায়সংগত অধিকার তাদের আছে কি না, সেটা সবাই বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
একটি শহরে স্বাচ্ছন্দ্যে মানুষের চলাফেরার জন্য কমপক্ষে হলেও ২৫ ভাগ খালি জায়গা থাকতে হয়, রাস্তা থাকতে হয় এই ২৫ ভাগ জায়গার ওপরে। আর ঢাকা শহরে রয়েছে ৭ ভাগ খালি জায়গা। ঘনবসতিপূর্ণ শহরে এই ৭ ভাগ খোলা জায়গার ফুটপাতে বসে হকার, হাঁটাচলার পথ প্রায় সংকীর্ণ, কোনো কোনো জায়গা একেবারেই চলার অনুপযোগী। তার মধ্যে ইচ্ছেমতো আদেশ জারি করে সবার চলার কিছু পথ বন্ধ করে দেওয়া, এটা কী রকম ব্যবস্থা!
এ রকম প্রতিটি ওয়ার্ডে দেখবেন লোহার গেট দিয়ে কোনো কোনো সোসাইটি বা সমিতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু রাস্তা বন্ধ করে রাখে তাদের এলাকার শান্তিশৃঙ্খলার জন্য। এই এলাকাটা তাদের হলেও এলাকার রাস্তাঘাট কিন্তু ঢাকা সিটি করপোরেশনের। সেদিকে খেয়াল না রেখে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া—সবাই দেখেও দেখছে না।
মাঝে মাঝে শাহবাগে একদল লোক নির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া নিয়ে শাহবাগ মোড় বন্ধ করে দিয়ে মিছিল-মিটিং করছে। এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, শাহবাগ বন্ধ করে দিলে পুরো ঢাকা শহর প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এখন আবার দেখছি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের রাস্তাও বন্ধ করে দাবি আদায় চলছে। প্রেসক্লাবের সামনে সমানতালে সারা বছর চলছে দাবি-দাওয়া আদায়ের মঞ্চ। কোনো কোনো সময় ফুটপাত তো দখল হয়ই, সামনের রাস্তাও দখল হয়ে যায়।
ঢাকা শহরের প্রতিটা জায়গায়, প্রতিটা বাড়ির সামনে এখন আর কোনো রকম হাঁটাচলা করার অবস্থা নেই। প্রতিটা বাড়ির সামনে থেকে সারা শহরে একেবারে ছেয়ে গেছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব রিকশার কারণে সাধারণভাবে চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা কোনো আইনকানুন মানেন না। যেদিক থেকে খুশি চলাচল করেন। এইসব যানবাহনের গতি সীমিত করা বা ট্রাফিক আইন মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কি নেই, সেটা বোঝাও যাচ্ছে না। প্রতিদিন ঢাকা শহরে শত শত দুর্ঘটনা ঘটছে এই ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে, কেউ দেখার নেই। অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে, যদি এসব রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে অন্য সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে শুধু এই ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যবস্থা করে দিতে হবে!
যার যার অবস্থান থেকে আমরা সবাই স্বাধীন। এই স্বাধীন দেশের কোনো কোনো নির্দিষ্ট জায়গার জন্য আমরা নিজেদের রাজত্ব কায়েম করেছি। আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে—চরণটি আমরা ভালোভাবে আত্মস্থ করেছি। আমরা যে আমাদের স্বাধীনতা উপভোগ করার জন্য অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করছি, সেদিকে আমাদের একেবারেই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
আমাদের এই সচেতনতাটুকু এখনই বাড়াতে হবে। আমি যেমন আমার রাজত্বে স্বাধীন, অন্য একজন মানুষও তার জায়গায় স্বাধীন। এই দুই স্বাধীনতা মিলে সবার জন্য যেটা ভালো, সেই কাজটি সমন্বয় করার জন্য আছে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী। তাই ‘আমি স্বাধীন’ না ভেবে সবাই যদি ‘আমরা স্বাধীন’ ভাবি, তাহলেই আমাদের এই সমাজ সুস্থভাবে চলবে, আমরা সবাই একযোগে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
১৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ফেব্রুয়ারি একটি অনন্য মাস। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য যে পথ রচনা করে দিয়েছে, সেই পথই দেশকে পৌঁছে দিয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। প্রকৃতপক্ষে এ দেশের আপামর ছাত্র-শ্রমিক-জনতা রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে সেই পথকে করেছে মসৃণ...
১৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি একধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নানা বাধা দেখা যাচ্ছে। এসব ঘটনা শুধু বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিবন্ধকতা নয়; বরং বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন।
১৪ ঘণ্টা আগেআজ থেকে বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলা শুরু হচ্ছে। মাসব্যাপী এই আয়োজন প্রাণের মেলায় পরিণত হোক, সেই কামনা করি। তবে আজ বইমেলা নিয়ে নয়, বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে যে নাটক অভিনীত হলো, তা নিয়েই কিছু কথা বলা সংগত হবে।
১৪ ঘণ্টা আগে