Ajker Patrika

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যে যে রাজনীতি দেখছেন বিশ্লেষকেরা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের যে প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন, তার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মত, নির্বাচনে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ ভারতীয় ভোট টানার জন্যই ট্রাম্প বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।

এ নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ গতকাল শুক্রবার বলেন, তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘ মেয়াদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বক্তব্যটি সর্বশেষ উদাহরণ। স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে এমন প্রবণতা দেখা যায়।

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে উল্লেখ করে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনার নিন্দা জানান। ট্রাম্পের দাবি, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকলে এমন ঘটনা কখনোই ঘটতে পারত না।

এ নিয়ে ড. আলী রীয়াজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের নাটকীয় পতনের পর একশ্রেণির ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিষয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে তার ছাপ পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলার সঙ্গেও কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতির অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী, প্রধানত ভারতীয়দের ভোট নিশ্চিত করা ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য।

ট্রাম্পের বক্তব্য প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট এম হুমায়ুন কবির গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরিণতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে একটি নেতিবাচক ধারণা প্রচার পাবে।’

বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্প কতটা অবগত, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ঊর্ধ্বতন পরামর্শক টম কিন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতের কিছু ডানপন্থী মিডিয়া ও রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের ঘটনাগুলো অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করেছে।

টম কিন বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক চাল হতে পারে, অথবা তিনি (ট্রাম্প) ভুল তথ্য পেয়েছেন এবং তা বিশ্বাস করেছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রশংসা করেছে ভারতভিত্তিক বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র বিনোদ বানসাল আইএএনএসসহ দেশটির কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রাম্প প্রথম পশ্চিমা নেতা, যিনি বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গটি তুললেন। এর বেশ তাৎপর্য আছে।

বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রশ্নে জাতিসংঘসহ অন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বানসাল।

অবশ্য ভারতের দিল্লির কাছে ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের যে ঘটনা ঘটেছিল, ভারতীয় গণমাধ্যম তা অতিরঞ্জিতভাবে প্রচার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত