Ajker Patrika

বিমানবন্দরে আগুন: তদন্ত প্রতিবেদন

আগুন নেভাতে বেবিচকের পর্যাপ্ত সক্ষমতা ছিল না

  • আগুনের ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
  • কার্গো ভিলেজের কুরিয়ার অংশে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।
  • বেবিচক, বিমান, কুরিয়ার এজেন্সি ও কাস্টমস দায়ী।
  • বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণে স্বতন্ত্র একটি কর্তৃপক্ষ গঠনসহ ১০ সুপারিশ।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ১১
আগুন নেভাতে বেবিচকের পর্যাপ্ত সক্ষমতা ছিল না

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) গত ১৮ অক্টোবরের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেখানে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের অংশে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।

ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগুন নেভাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পর্যাপ্ত সক্ষমতা ছিল না। তদন্ত কমিটি বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বতন্ত্র একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনটি গতকাল মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন কোর কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। পরে বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৮ অক্টোবর বেলা ২টা ৯ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের কুরিয়ার শেডের বর্ধিত অংশের উত্তর-পশ্চিম পাশে ৪৮টি লোহার খাঁচার মধ্যবর্তী স্থানে আগুন লাগে। ২টা ১৫ মিনিটে ধোঁয়া দেখা যায়। সিভিল এভিয়েশনের প্রথম অগ্নিনির্বাপক গাড়ি যায় ২টা ২২ মিনিটে; দ্বিতীয়টি যায় ২টা ২৫ মিনিটে। উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক দল পৌঁছায় ২টা ৫০ মিনিটে। কুরিয়ার এলাকায় কোনো ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টর বা স্প্রিংকলার ছিল না। পলিথিনে মোড়ানো কাপড়, পারফিউম, রাসায়নিক, ব্যাটারি, ওষুধের কাঁচামালসহ বিপুল দাহ্য পণ্য এলোপাতাড়ি স্তূপ করে রাখা ছিল। তুরস্ক থেকে আসা বিশেষজ্ঞ দল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ, অগ্নিনির্বাপণ বিশেষজ্ঞ এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক প্রতিবেদনে আগুনের উল্লেখিত কারণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

আগুন নেভাতে বিলম্ব হওয়ার কারণ সম্পর্কে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে দ্রুত যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়ে। অ্যাপ্রোন এলাকায় (যেখানে উড়োজাহাজ পার্ক করা, জ্বালানি ভরা, লোড-আনলোড করা, যাত্রী ওঠানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়) রাখা স্তূপ করা পণ্যের ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কুরিয়ার শেডে অগ্নিকাণ্ডস্থলে যেতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। এ ছাড়া ১৫০০ ডিগ্রি তাপমাত্রা, গ্রিলে তালা, হাইড্রেন্ট না থাকা, অজানা রাসায়নিক, পানি-ফোমের ঘাটতি এবং কাঠামো ধসে পড়ার কারণে আগুন নেভাতে বিলম্ব হয়।

এ ছাড়া আমদানি পণ্য সংরক্ষণের কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকি ছিল না। এমনকি দাহ্য এবং বিপজ্জনক পণ্যের জন্য কোনো বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। বেবিচকের অবকাঠামোর সুরক্ষার জন্য কোনো স্থায়ী ফায়ার স্টেশনও নেই।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্গো ভিলেজের ভবন নির্মাণে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। অ্যাপ্রোনে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ টন আমদানি পণ্য ফেলে রাখা হয়। বিপজ্জনক পণ্যের জন্য আলাদা গুদাম নেই। বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন নেই, সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ অপ্রতুল। গত এক যুগে একই এলাকায় সাতবার আগুন লাগে। কিছু ঘটনা গোপন রাখা হয়েছে। ৯ বছর ধরে বেবিচক ও ফায়ার সার্ভিসের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়নি। ৭৫ শতাংশ নিলামযোগ্য পণ্য সময়মতো সরানো হয়নি।

প্রতিবেদনে চার পক্ষকে দায়ভার দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো—বেবিচক কুরিয়ার শেড ও কার্গো শেডের ইজারাদাতা হিসেবে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী স্থাপনা ও পরিচালনায় যথাযথ সুরক্ষা অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ, কুরিয়ার এজেন্সিগুলো অগ্নিনিরাপত্তা মানেনি এবং কাস্টম হাউস নিলামযোগ্য পণ্য অন্যত্র সরায়নি।

তদন্ত কমিটির ১০ সুপারিশ

প্রতিবেদনে কমিটি ১০টি সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো—বেবিচককে নিয়ন্ত্রক রেখে বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ বা অপারেটর নিয়োগ। আইকাও ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিমান বাংলাদেশকে শুধু ফ্লাইট পরিচালনায় সীমিত রাখা। বিশেষ শ্রেণির ফায়ার স্টেশন নির্মাণ। জরুরি ভিত্তিতে ফায়ার সেফটি প্ল্যান ও সনদ গ্রহণ। বিপজ্জনক পণ্যের গুদাম স্থানান্তর। নিলামযোগ্য পণ্যের আলাদা গুদাম তৈরি করা। বিমানবন্দরে কাজ করা সব বিভাগের কর্মীদের ১৮ শতাংশকে অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ দেওয়া। নিয়মিত ফায়ার ড্রিল। অ্যাপ্রোনে মালামাল মজুদ নিষিদ্ধ ও ডিজিটাল কার্গো ইনভেন্টরি চালু করা।

কমিটি সতর্ক করেছে, ত্রুটিগুলো দ্রুত সংশোধন না হলে একই ধরনের বড় দুর্ঘটনা আবারও ঘটতে পারে।

কার্গো ভিলেজের ওই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের কারণে ওই সময় বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টা উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছর কারাদণ্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার নামে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনাকে ৫ বছর, শেখ রেহানাকে ৭ বছর ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে (টিউলিপ সিদ্দিক) ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

এ ছাড়া এই মামলায় সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে।

এক মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং গৃহায়ন ও গণতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের যারা প্লট বরাদ্দে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাদের ১২ জনকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি টিউলিপ সিদ্দিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও শেখ রেহানাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

খালাস দেওয়া হয়েছে যাদের তাঁরা হলেন—গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন-২) মো. অলিউল্লাহ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যানের মো. আনিছুর রহমান মিঞা পিএএ, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক উপ-পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) নায়েব আলী শরীফ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৫ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়। আজ বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে রায় ঘোষণা শুরু হয়। আদালত রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান। রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়।

শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য সব আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ৩১ জুলাই আদালত এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

গত ১২,১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুর্নীতির দমন কমিশন দুদক শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে তিনটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে গত ২৭ নভেম্বর। তিন মামলায় শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই মামলায় পৃথকভাবে শেখ হাসিনার ছেলে জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও মেয়ে পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা অন্যান্যদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ মার্চ ছয় মামলায় আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে দুদক।

শেখ রেহানার প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার একটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থেকে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণ কর্মচারিদের বা রাজউক কর্মচারিদের প্রভাবিত করে শেখ রেহানাকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর মাকে প্লট বরাদ্দে বিশেষ ক্ষমতা বলে প্রত্যক্ষ প্রভাব খাটিয়েছেন। অন্যদিকে রাজউকের প্রকল্প বরাদ্দ বিষয়ক কর্মচারিরা নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপের মামলার রায় আজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ সোমবার। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করবেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৫ যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।

এ মামলায় অন্য যাঁরা আসামি তাঁরা হলেন—সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন-২) মো. অলিউল্লাহ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যানের মো. আনিছুর রহমান মিঞা পিএএ, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মাজহারুল ইসলাম, সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) নায়েব আলী শরীফ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

গত ৩১ জুলাই আদালত এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুর্নীতির দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে তিনটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে গত ২৭ নভেম্বর। তিন মামলায় শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য দুই মামলায় পৃথকভাবে শেখ হাসিনার ছেলে জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং মেয়ে পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের প্লট বরাদ্দ-সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ মার্চ ছয় মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

এ মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার একটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থেকে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ-বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের বা রাজউক কর্মচারীদের প্রভাবিত করে শেখ রেহানাকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর মাকে প্লট বরাদ্দে বিশেষ ক্ষমতা বলে প্রত্যক্ষ প্রভাব খাটিয়েছেন। অন্যদিকে রাজউকের প্রকল্প বরাদ্দ-বিষয়ক কর্মচারীরা নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন।

হাসিনার সঙ্গে আজমির ও রাদওয়ানের মামলা

একই আদালতে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অন্য দুটি মামলা বিচারাধীন। আজ সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এর একটি হচ্ছে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের প্লট বরাদ্দ-সংক্রান্ত এবং অন্যটি হচ্ছে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের প্লট বরাদ্দ-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজ ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। আর আজমির মুজিবের মামলা সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিএসের জরিপ: দেশের মানুষের বড় রোগ উচ্চ রক্তচাপ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ০১
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

দেশের মানুষ যেসব রোগে ভুগছে সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে উচ্চ রক্তচাপ। প্রতি ১ হাজার মানুষের মধ্যে ৭৮ দশমিক ২৮ জন এই রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে গতকাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। বিবিএস জানায়, ‘হেলথ অ্যান্ড মরবিডিটি স্ট্যাটাস সার্ভে’ নামের এই জরিপ চালানো হয় গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে। সারা দেশে ৪৭ হাজার ৪০টি খানা (পরিবার) এবং ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৮৬ মানুষের ওপর জরিপ চালানো হয়।

ফলাফলে দেখা যায়, জরিপের আগের ৯০ দিনে প্রতি ১ হাজার মানুষের মধ্যে ৩৩২ জন বা ৩৩ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো রোগে ভুগেছেন। ১০টি রোগের তালিকার শীর্ষে ছিল উচ্চ রক্তচাপ। এরপর যথাক্রমে ১ হাজার মানুষের মধ্যে পেপটিক আলসার (৬৩ দশমিক ৭৯ জন), ডায়াবেটিস (৪৩ দশমিক ১৫ জন ), বাত বা আর্থ্রাইটিস (৩৯ দশমিক ৭৫ জন), চর্মরোগ (৩৭ দশমিক ২৩ জন), হৃদ্‌রোগ (৩১ দশমিক ৩২ জন), হাঁপানি (৩০ দশমিক ৯৪ জন), অস্টিওপরোসিস (২২ দশমিক ৩০ জন), হেপাটাইটিস (২২ দশমিক ৩০ জন) এবং ডায়রিয়ায় (১৫ দশমিক ৮৯ জন) ভোগেন।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, দেশে সন্তান জন্মদানে অস্ত্রোপচারের (সিজারিয়ান) হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এখন মোট প্রসবের ৪৯ শতাংশই হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। এতে খরচের পরিমাণ স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় পাঁচ গুণের বেশি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হজুর আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

দেশের পরিবারকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ, রোগব্যাধি ও দৈনন্দিন জীবনযাপনের অভ্যাসে বড় পরিবর্তনের একটি চিত্র উঠে এসেছে সর্বশেষ জাতীয় জরিপে। পরিবারে সদস্যসংখ্যা কমছে, তবু গড় পরিবারপ্রধান এখনো পুরুষই।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, দেশে গড়ে একটি পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৪ দশমিক ০৩ জন। গ্রামে পরিবার তুলনামূলক বড়, শহরে ছোট। ৮৯ শতাংশ মানুষ নিজের বাড়িতে থাকে, ভাড়াটিয়া মাত্র ৯ শতাংশ। পরিবারপ্রধানের ৮৩ শতাংশই পুরুষ, নারীপ্রধান পরিবারের হার ১৭ শতাংশ এবং গ্রামেই নারীপ্রধান পরিবারের হার তুলনামূলক বেশি।

জরিপে দেখা যায়, মশা প্রতিরোধে ৯৭ শতাংশ মানুষ এখনো মশারি ব্যবহার করে। মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট বা ম্যাট শহরে গ্রামের তুলনায় ছয়গুণ বেশি ব্যবহৃত হয়। রিফিলার ব্যবহার করেন প্রতি ১০০ জনে ৭৩ জন।

জরিপ মতে, সবচেয়ে বেশি চিকিৎসা নেওয়া হয় ওষুধের দোকান বা ডিসপেনসারি থেকে–৫১ শতাংশ। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে যায় মাত্র ১১ শতাংশ মানুষ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ২০ শতাংশ। চিকিৎসা নিতে গড়ে খরচ ২ হাজার ৪৮৭ টাকা, শহরে এ ব্যয় বেশি।

স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া নিয়েও ভোগান্তি রয়েছে; প্রতি পাঁচজনে একজনকে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে যেতে ১০ কিলোমিটার বা তার বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়। মাত্র ০.৫ শতাংশ পরিবার জেলা হাসপাতালের এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করে।

জরিপে দেখা যায়, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর ২৬.৭ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে। পুরুষের হার ৩৭.৯ শতাংশ, নারীর ১৬.৫ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে এ হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। দেশে টয়লেট ব্যবহারের পর হাতে সাবান ব্যবহার করেন মাত্র ৬৫ শতাংশ মানুষ। তবে শহরে এ হার তুলনামূলক বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

একসঙ্গে সংসদ ও গণভোট: এক বুথে দুই গোপন কক্ষ করার পরিকল্পনা ইসির

  • ইসির সঙ্গে আন্তমন্ত্রণালয় সভা। সচেতনতামূলক প্রচারে জোর দেওয়ার তাগিদ।
  • ইসি চাইলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
  • ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রভাবশালীদের আতিথ্য গ্রহণ ঠেকাতে বাড়বে ভাতা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট করতে সব ধরনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক দিনে দুই ভোট আয়োজনে সময় বাঁচাতে ভোটকেন্দ্র বা বুথ না বাড়িয়ে গোপন কক্ষ বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এ জন্য একটি বুথে দুটি গোপন কক্ষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গতকাল রোববার আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে ইসি। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত, আগাম পোস্টার-ব্যানার অপসারণসহ অন্তত ২২টি ইস্যু নিয়ে সভায় সচিবদের সঙ্গে আলোচনা হয়।

সূত্র জানায়, সভায় অংশ নেওয়া সবাই ইসিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রায় সবাই সংসদ ও গণভোটের বিষয়ে জনগণকে অবহিত করতে প্রচার-প্রচারণায় জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, কোনো কর্মকর্তার প্রতি ইসির কোনো পর্যবেক্ষণ থাকলে তা আমলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঋণখেলাপিরা যাতে ভোটে অংশ নিতে না পারেন, এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অবহিত করেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। মাঠ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, একটি ভোটকক্ষে দুটি গোপন কক্ষ (স্ট্যাম্পিং বুথ) রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে ভোট দেওয়ার সময় কমে এবং ভোটারদের প্রবাহ বজায় থাকে। ভোটের মহড়ার প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে—ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে প্রতিটি বুথে গোপন কক্ষ বাড়ানো লাগতে পারে।

সাধারণত একটি ভোটকক্ষে ব্যালটে সিল মারার জন্য একটিই গোপন কক্ষ থাকে। দুটি কক্ষ করলে আইনের ব্যত্যয় হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এতে আইনগত কোনো বাধা দেখছি না।’

নির্বাচন, গণভোট ও বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার—এ তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই পুরো প্রস্তুতি-পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, যে বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে গণভোটের প্রচারণা, প্রবাসীদের ভোট দিতে নিবন্ধন, নির্বাচন পরিচালনাবিধি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধ এবং ভোটারদের সচেতন করতে সংবেদনশীলতা বাড়ানো।

ভোটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আতিথ্য গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা হবে; এ জন্য তাঁদের ভাতা ও আর্থিক সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ভূমিকা কী থাকবে এবং তাঁদের নিয়ন্ত্রণও করা হবে।

দেশের ব্যালট পেপার সরকারি প্রেসে এবং প্রবাসী ভোটের ব্যালট—সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা প্রেসে ছাপানোর প্রস্তুতি চলছে। মাঠপর্যায়ে মাইকিং, স্থানীয় প্রচারণা ও টিভি কভারেজ বাড়ানোর অনুরোধও করেন ইসি সচিব। তিনি জানান, চূড়ান্ত সময়-পর্যালোচনা ও ভোটের তারিখ ঘোষণার পরই মূল কাজ বেগবান হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ এলে পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।

নির্বাচন-সংক্রান্ত তথ্য বা কোনো অভিযোগ এলে তা সমন্বয় করতে ফোকাল পয়েন্ট করার কথা চিন্তা করা হয়েছে। সেখান থাকবে ইসি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে আইসিটি বা আরও কোনো মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত