Ajker Patrika

একসঙ্গে সংসদ ও গণভোট: এক বুথে দুই গোপন কক্ষ করার পরিকল্পনা ইসির

  • ইসির সঙ্গে আন্তমন্ত্রণালয় সভা। সচেতনতামূলক প্রচারে জোর দেওয়ার তাগিদ।
  • ইসি চাইলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
  • ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রভাবশালীদের আতিথ্য গ্রহণ ঠেকাতে বাড়বে ভাতা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট করতে সব ধরনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক দিনে দুই ভোট আয়োজনে সময় বাঁচাতে ভোটকেন্দ্র বা বুথ না বাড়িয়ে গোপন কক্ষ বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এ জন্য একটি বুথে দুটি গোপন কক্ষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গতকাল রোববার আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে ইসি। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত, আগাম পোস্টার-ব্যানার অপসারণসহ অন্তত ২২টি ইস্যু নিয়ে সভায় সচিবদের সঙ্গে আলোচনা হয়।

সূত্র জানায়, সভায় অংশ নেওয়া সবাই ইসিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রায় সবাই সংসদ ও গণভোটের বিষয়ে জনগণকে অবহিত করতে প্রচার-প্রচারণায় জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, কোনো কর্মকর্তার প্রতি ইসির কোনো পর্যবেক্ষণ থাকলে তা আমলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঋণখেলাপিরা যাতে ভোটে অংশ নিতে না পারেন, এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অবহিত করেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। মাঠ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, একটি ভোটকক্ষে দুটি গোপন কক্ষ (স্ট্যাম্পিং বুথ) রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে ভোট দেওয়ার সময় কমে এবং ভোটারদের প্রবাহ বজায় থাকে। ভোটের মহড়ার প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে—ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে প্রতিটি বুথে গোপন কক্ষ বাড়ানো লাগতে পারে।

সাধারণত একটি ভোটকক্ষে ব্যালটে সিল মারার জন্য একটিই গোপন কক্ষ থাকে। দুটি কক্ষ করলে আইনের ব্যত্যয় হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এতে আইনগত কোনো বাধা দেখছি না।’

নির্বাচন, গণভোট ও বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার—এ তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই পুরো প্রস্তুতি-পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, যে বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে গণভোটের প্রচারণা, প্রবাসীদের ভোট দিতে নিবন্ধন, নির্বাচন পরিচালনাবিধি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধ এবং ভোটারদের সচেতন করতে সংবেদনশীলতা বাড়ানো।

ভোটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আতিথ্য গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা হবে; এ জন্য তাঁদের ভাতা ও আর্থিক সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ভূমিকা কী থাকবে এবং তাঁদের নিয়ন্ত্রণও করা হবে।

দেশের ব্যালট পেপার সরকারি প্রেসে এবং প্রবাসী ভোটের ব্যালট—সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা প্রেসে ছাপানোর প্রস্তুতি চলছে। মাঠপর্যায়ে মাইকিং, স্থানীয় প্রচারণা ও টিভি কভারেজ বাড়ানোর অনুরোধও করেন ইসি সচিব। তিনি জানান, চূড়ান্ত সময়-পর্যালোচনা ও ভোটের তারিখ ঘোষণার পরই মূল কাজ বেগবান হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ এলে পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।

নির্বাচন-সংক্রান্ত তথ্য বা কোনো অভিযোগ এলে তা সমন্বয় করতে ফোকাল পয়েন্ট করার কথা চিন্তা করা হয়েছে। সেখান থাকবে ইসি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে আইসিটি বা আরও কোনো মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ