Ajker Patrika

খুলনায় ভাড়াটে খুনি-আতঙ্ক

  • ছয় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর হয়ে টার্গেট কিলিংয়ে জড়াচ্ছে তারা।
  • আ.লীগ সরকারের পতনের পর এসব বাহিনীর উত্থান।
  • বিভিন্ন সময়ে অপরাধীরা জায়গা বদল করে, ধরা কঠিন হয়ে পড়ে: পুলিশ
কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
রনি চৌধুরী বাবু, আশিক, নূর আজিম ও হুমায়ুন কবীর। ছবি: সংগৃহীত
রনি চৌধুরী বাবু, আশিক, নূর আজিম ও হুমায়ুন কবীর। ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ছয় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর হয়ে টার্গেট কিলিংয়ে জড়াচ্ছে ভাড়াটে খুনিরা। তাদের অবস্থান শনাক্তে পুলিশ বেশ তৎপর। তবে এই মুহূর্তে পুলিশের হাতে কোনো তালিকা নেই। তারা বলছে, ভাড়াটে খুনির সংখ্যা ২০ থেকে ২৫। মাদক কারবার, ভূমি দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়াটে খুনে জড়াচ্ছে তারা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, পেশাদার খুনিদের টার্গেট কিলিংয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। শীর্ষ ছয়টি বাহিনীর প্রধানদের বিরুদ্ধে খুন, মাদকসংক্রান্ত ৬৭টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। গতকালও দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব বাহিনীর উত্থান। এ প্রসঙ্গে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ত ম রোকনুজ্জামান বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভাড়াটে খুনিদের তালিকা আমাদের কাছে নেই। তবে গত অক্টোবর মাসের অপরাধ সভার পর খুনিদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসলে খুনিরা সব সময় শহরে চলাফেরা করে না। তাদের টার্গেট কিলিংয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।’

জানা গেছে, খুলনা নগরীতে এই মুহূর্তে ছয়টি সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধানেরা ৬৭ মামলা মাথায় নিয়ে অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের মধ্যে খুনোখুনিতে লিপ্ত রয়েছেন। গত জানুয়ারি মাসে কেএমপির কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার খুলনার শীর্ষ ১২ সন্ত্রাসীকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করার পর কিছু সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হলেও অধিকাংশ রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সক্রিয় সন্ত্রাসীরা

বর্তমানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় ওপরের দিকে রয়েছে রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুর নাম। নগরীর শামসুর রহমান রোডের বাসিন্দা গ্রেনেড বাবুর বিরুদ্ধে কেএমপির বিভিন্ন থানায় ১৭টি মামলা রয়েছে। পুলিশ ও একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০০১ সালে বোমা তৈরি করে চরমপন্থীদের কাছে সাপ্লাই দিয়ে এবং বোমা নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ-র‍্যাবের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় উঠে আসেন গ্রেনেড বাবু। এরপর মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি, জুয়ার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রেনেড বাবু নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন।

সক্রিয় আছে নূর আজিম গ্রুপ। নগরীর টুটপাড়া ইস্ট সার্কুলার রোডের বাসিন্দা শানু মুহুরীর ছেলে নূর আজিমের বিরুদ্ধে কেএমপির বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। কিশোর গ্যাং সৃষ্টির মাধ্যমে ২০১৬ সালে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। গত ১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী নূর আজিমসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সন্ত্রাসী নূর আজিমের সহযোগীরা এখন এলাকায়। তাঁরা রূপসা স্ট্যান্ড রোড, চাঁনমারী, রূপসা মাছবাজার, শেখপাড়া বাজার, গোবরচাকা, টুটপাড়া, জিন্নাহপাড়া, লবণচরা, চাঁনমারী বাজার, বানিয়াখামারসহ আশপাশ এলাকায় প্রতিদিনই সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছেন।

নগরীর চানমারি দ্বিতীয় লেনের আশিকের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে। খুলনা শহরের বর্তমানে সব থেকে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে আশিক গ্রুপ। ২০১৮ সালে ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম হত্যা মামলায় জড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত হন। বর্তমানে তিনি পলাতক। তাঁর দলে সদস্য রয়েছেন ২৩ জন। তাঁদের নামে মোট মামলা রয়েছে ১১০টি।

নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের বাসিন্দা পলাশ শেখের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৯টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। গত আওয়ামী লীগ আমলে দাপুটে ছিল পলাশ চক্র। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ফের সক্রিয় হয়েছেন পলাশ। সর্বশেষ ১৮ অক্টোবর কারাগারে গ্রেনেড বাবুর সহযোগী কালা তুহিন ও পলাশ চক্রের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার হুমায়ুন কবীর ওরফে হুমার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। হুমা ছিলেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান গাজী কামরুলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের উপস্থিতি জানান দেয়। নগরীর দৌলতপুর দেয়ানা বাউন্ডারি রোডের বাসিন্দা কবির হোসেনের ছেলে আরমিন ওরফে আলামিনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। তিনিও বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য।

সার্বিক বিষয়ে পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানোসহ অপরাধীদের তথ্য জানতে তথ্য বাক্স বসানো হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অপরাধীরা জায়গা বদল করে। ফলে অনেক সময় তাদের ধরা কঠিন হয়ে পড়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেট্রোতে উঠে কারওয়ানবাজার থেকে আগারগাঁও গিয়ে ট্রেন বদলায় শিশুটি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সচিবালয় স্টেশন এলাকায় মেট্রোরেলের ওপর ব্যক্তি উঠে পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
সচিবালয় স্টেশন এলাকায় মেট্রোরেলের ওপর ব্যক্তি উঠে পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, গতকাল মেট্রোর ছাদে ওঠার ঘটনার পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে ডিএমটিসিএলের ফেসবুকের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তবে অত অল্প সময়ের মধ্যে সঠিক তথ্য দেওয়ার মতো আমাদের যোগ্যতা নেই। শিশুটি কোন স্টেশন থেকে উঠছে এটা ধরতে আমাদের ১৫ থেকে ২০ মিনিট লেগেছে।

আজ সোমবার দুপুরে উত্তরা মেট্রোরেলের ডিপোতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গতকালের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এমডি জানান, শনিবার রাতে মেট্রোরেলের ছাদে এক শিশুকে পাওয়া যায়। ভিডিও ফুটেজে প্রাথমিক ভাবে দেখা যায়, ছেলেটি সম্ভবত কারওয়ান বাজার এলাকার কোনো স্থান থেকে ট্রেনে উঠে আগারগাঁও পর্যন্ত আসে। আগারগাঁও স্টেশনে সে ট্রেন বদলায়। স্বাভাবিক প্রবেশপথ ব্যবহার না করে দুটি কোচের মাঝের ফাঁক দিয়ে সে ওপরে উঠে পড়ে। সচিবালয় স্টেশনে পৌঁছানোর পর তাকে ছাদে দেখা গেলে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি জানান। বৈদ্যুতিক লাইনে সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত। এই জন্য সবাইকে সচেতন ভাবে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

ফারুক আহমেদ বলেন, শিশুটি ঠিক কোথা থেকে উঠেছে সেটি ভিডিওগুলো আরও বিশ্লেষণ করে আরও সঠিক তথ্য দেওয়া যাবে। এটা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।

বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারী মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রসঙ্গে এমডি বলেন, ‘ধীরে ধীরে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিয়ারিং পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য সেটি বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আসার অপেক্ষায় তদন্ত কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের বিষয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ভূমিকম্পের পরে পুরোটাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কোথাও কোনো ফিজিক্যাল ডিসপ্লেস (কাঠামোগত বিচ্যুতি) হয়নি। তবে মেট্রোর ওয়াল কেন ফেটেছে সেটা আমি বলতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুবি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে তনয়-আব্দুল্লাহ

কুবি প্রতিনিধি 
সভাপতি তনয় ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
সভাপতি তনয় ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রেসক্লাবের ৯ সদস্যের ষষ্ঠ কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন দৈনিক আজকের পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. আতিকুর রহমান তনয় এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বার্তা বাজারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সংগঠনের উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক শতাব্দী জুবায়ের, উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যসচিব নাহিদ ইকবাল, সদ্য সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রিফাত এবং সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাভেদ রায়হান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। নবগঠিত এই কার্যনির্বাহী কমিটি আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবে।

এ ছাড়া নতুন কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন দৈনিক বর্তমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারিয়াম আক্তার শিল্পী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন দৈনিক আমার শহরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. সাজিদুর রহমান। অর্থ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন দৈনিক সকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাফি হোসেন, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন দ্য ঢাকা ডায়েরির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুরুল হাকিম বাপ্পী, তথ্য ও পাঠাগার সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ফেস দ্য পিপলের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসিন আরমান। পাশাপাশি, কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা প্রকাশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আল শাহরিয়ার অন্তু ও সময় জার্নালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সুদীপ্ত সাহা।

সদ্য মনোনীত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘“সর্বদা সত্যের সন্ধানে” স্লোগান ধারণ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব সব সময় কাজ করে আসছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য সামনেও ক্লাবের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে স্বচ্ছ ও নৈতিক সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

সদ্য মনোনীত সভাপতি মো. আতিকুর রহমান তনয় বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের এই পদবি আমার কাছে শুধু পদ নয়, এটি আমার কাছে একটি দায়িত্ব। শুরু থেকে দেখে এসেছি কুবি প্রেসক্লাব শুধু সংবাদ সংগ্রহ বা প্রচারের কেন্দ্র নয়, বরং এটি সত্য, ন্যায় ও দায়িত্ববোধের চর্চার জায়গা। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতার মাধ্যমে, কমিটির সকলের সহযোগিতায় কুবি প্রেসক্লাবকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাঙ্গায় পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কমলাবোঝাই পিকআপটি দুমড়েমুচড়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কমলাবোঝাই পিকআপটি দুমড়েমুচড়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মধু উল্লাহ (৫২) নামের এক ফল ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই চালক। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের উপজেলার প্রাণিসম্পদ ইনস্টিটিউটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ফল ব্যবসায়ী মধু উল্লাহ চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার ধোপখালি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার এসআই মো. মামুন জানান, পঞ্চগড় থেকে ভাঙ্গাগামী কমলাবোঝাই পিকআপটি প্রাণিসম্পদ ইনস্টিটিউটের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ফরিদপুরগামী কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কমলাবোঝাই পিকআপটি দুমড়েমুচড়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা ফল ব্যবসায়ী মধু উল্লাহ ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত দুই চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তৃতীয় বিয়ে করায় স্বামীকে শিকলে বেঁধে রাখলেন স্ত্রী

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
শিকলে বাঁধা জামাই। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিকলে বাঁধা জামাই। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিকভাবে নিয়ম মেনে বিয়ে হয় তাঁদের। মেয়ের জামাইকে খুশি রাখতে গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী দেওয়া হয় টাকা-পয়সা ও আসবাব। ভালোভাবেই চলছিল তাঁদের সংসার। কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখা দেয় বিপত্তি। স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে লেগে যায় ঝগড়া। দুজনের মধ্যে বাড়তে থাকে দূরত্ব। একপর্যায়ে স্বামী করেন দ্বিতীয় বিয়ে। দুজনই পৃথকভাবে বসবাস শুরু করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী তৃতীয় বিয়েও করেন। এদিকে বহু চেষ্টা করেও স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাচ্ছিলেন না প্রথম স্ত্রী। হঠাৎ সুযোগ পেয়ে স্বামীকে ধরে এনে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখেন নিজের বাড়িতে। ফেরত চান বাবার পক্ষ থেকে দেওয়া টাকা-পয়সা।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন এসে ভিড় করে ভুক্তভোগীর শ্বশুরবাড়িতে। পায়ে শিকল পরা সেই ব্যক্তিকে দেখতে হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকেরা এসে হাসিঠাট্টায় মেতে ওঠেন। অনেকে আবার ক্ষোভ ঝাড়েন।

প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম জাহাজমারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাখালী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। স্বামী আব্দুর রহমান বুড়িরচর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, পারিবারিকভাবে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয় তাঁদের। শুরুতে সংসার ঠিকঠাক চললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে অশান্তি। স্বামীর বেপরোয়া চলাফেরার কারণে দূরত্ব বেড়ে যায় তাঁদের। কয়েকবার গ্রাম্য সালিস বসানো হলেও ভালো ফলাফল মেলেনি। ইতিমধ্যে আব্দুর রহমান একাধিক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রী বরণ-পোষণে তিনি উদাসীন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে পার্শ্ববর্তী বাজার থেকে ধরে আনা হয়েছে।

হাসিনা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করত। বহুবার সালিস বিচার করেও সমাধান হয়নি। এরপর আমাকে রেখে সে আরও দুইটা বিয়ে করেছে। আমি আমার অধিকার ফেরত পেতেই তাকে ধরে এনেছি। পালিয়ে যাওয়ার ভয়ে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।’

হাসিনার মা-বাবা বলেন, ‘ছেলের পরিবার কোনো দিনও তাকে শাসন করেনি। দুই বছর ধরে মেয়ের খোঁজও নেয়নি। এখন মেয়ে তাকে ধরে এনেছে। আমরা ছেলের পরিবারকে খবর দিয়েছি। তারা এলে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা হবে।’

শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় কথা হয় আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি তৃতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর উগ্র আচরণের কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। তাঁকে ধরে এনে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম বলেন, এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত