Ajker Patrika

তৃতীয় বিয়ে করায় স্বামীকে শিকলে বেঁধে রাখলেন স্ত্রী

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
শিকলে বাঁধা জামাই। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিকলে বাঁধা জামাই। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিকভাবে নিয়ম মেনে বিয়ে হয় তাঁদের। মেয়ের জামাইকে খুশি রাখতে গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী দেওয়া হয় টাকা-পয়সা ও আসবাব। ভালোভাবেই চলছিল তাঁদের সংসার। কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখা দেয় বিপত্তি। স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে লেগে যায় ঝগড়া। দুজনের মধ্যে বাড়তে থাকে দূরত্ব। একপর্যায়ে স্বামী করেন দ্বিতীয় বিয়ে। দুজনই পৃথকভাবে বসবাস শুরু করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী তৃতীয় বিয়েও করেন। এদিকে বহু চেষ্টা করেও স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাচ্ছিলেন না প্রথম স্ত্রী। হঠাৎ সুযোগ পেয়ে স্বামীকে ধরে এনে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখেন নিজের বাড়িতে। ফেরত চান বাবার পক্ষ থেকে দেওয়া টাকা-পয়সা।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন এসে ভিড় করে ভুক্তভোগীর শ্বশুরবাড়িতে। পায়ে শিকল পরা সেই ব্যক্তিকে দেখতে হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকেরা এসে হাসিঠাট্টায় মেতে ওঠেন। অনেকে আবার ক্ষোভ ঝাড়েন।

প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম জাহাজমারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাখালী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। স্বামী আব্দুর রহমান বুড়িরচর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, পারিবারিকভাবে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয় তাঁদের। শুরুতে সংসার ঠিকঠাক চললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে অশান্তি। স্বামীর বেপরোয়া চলাফেরার কারণে দূরত্ব বেড়ে যায় তাঁদের। কয়েকবার গ্রাম্য সালিস বসানো হলেও ভালো ফলাফল মেলেনি। ইতিমধ্যে আব্দুর রহমান একাধিক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রী বরণ-পোষণে তিনি উদাসীন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে পার্শ্ববর্তী বাজার থেকে ধরে আনা হয়েছে।

হাসিনা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করত। বহুবার সালিস বিচার করেও সমাধান হয়নি। এরপর আমাকে রেখে সে আরও দুইটা বিয়ে করেছে। আমি আমার অধিকার ফেরত পেতেই তাকে ধরে এনেছি। পালিয়ে যাওয়ার ভয়ে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।’

হাসিনার মা-বাবা বলেন, ‘ছেলের পরিবার কোনো দিনও তাকে শাসন করেনি। দুই বছর ধরে মেয়ের খোঁজও নেয়নি। এখন মেয়ে তাকে ধরে এনেছে। আমরা ছেলের পরিবারকে খবর দিয়েছি। তারা এলে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা হবে।’

শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় কথা হয় আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি তৃতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর উগ্র আচরণের কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। তাঁকে ধরে এনে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম বলেন, এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ