Ajker Patrika

অ্যাস্ট্রাজেনেকার বদলে যুক্তরাষ্ট্র দেবে মডার্না ও জনসনের টিকা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
Thumbnail image

ঢাকা: অনিশ্চিত প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে সংকট কাটছেই না। নানা চেষ্টার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টিকা পাওয়ার সুবাতাস পেলেও দেশটি থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসছে না।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ৭০ লাখ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এতে কিছুটা আশায় বুক বাঁধে সরকার। সেই টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু জানা গেল অ্যাস্ট্রাজেনেকা নয়, দেশটি থেকে আসবে মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা কোভিশিল্ড দিয়ে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ। ১ কোটি ৩ লাখ টিকা দেওয়ার পর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি বন্ধ করলে থমকে যায় টিকাদান কার্যক্রম। এরপর বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠিয়ে দেশগুলোতে থাকা অক্সফোর্ডের অতিরিক্ত টিকা পাওয়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টিকা পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি চেষ্টা চালায় ঢাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বর্তমানে ৬ কোটির ওপর অক্সফোর্ডের টিকা মজুত রয়েছে। শুরুতে কোটি টিকা চাইলেও পরে ২০ লাখ ও সর্বশেষ ১৬ লাখ টিকা চায় বাংলাদেশ। সেই টিকা পাওয়ার আশায় কূটনৈতিক মাধ্যমে দীর্ঘ তদবির চালানো হয়। আর বাংলাদেশের তদবিরে টিকা দিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে দেশটি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সম্প্রতি বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্যের কারণে চাহিদার অগ্রাধিকার তালিকায় রাখেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে অনেক চেষ্টার ফলে তারা বাংলাদেশকে টিকা দিতে রাজি হয়েছে। শিগগিরই এ টিকা আসবে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা আসবে। তবে সেটি আসবে জনসন অ্যান্ড জনসন এবং মডার্নার। অক্সফোর্ডের টিকা আসছে না। কারণ দেশটির ড্রাগ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকায় এ টিকা কাউকে দিচ্ছে না তারা।

তবে এখনো অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা পাওয়ার আশা জিইয়ে রাখছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আশা করছি যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসননের (এফডিএ) অনুমোদন নিয়ে আমাদের অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকা পাঠাবে মার্কিন সরকার। পাশাপাশি দ্বিতীয় ডোজ পূরণ করার জন্য আমরা জাপানের কাছে অব্যবহৃত টিকা চেয়েছি। তারা সম্প্রতি তাইওয়ানকে অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দিয়েছে।

মডার্নার টিকা দিয়ে না হলেও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দিয়েই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনসন ও মডার্না আমার জানামতে দুই ধরনের ভ্যাকসিন। তবে জনসন এক ডোজের টিকা হলেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সঙ্গে এটির মিল রয়েছে। তাই, এটি দিয়েই হয়তো দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, মিক্স ডোজের জন্য আমরা এখনো কাজ করছি। টেকনিক্যাল কমিটি যদি অনুমোদন দেয় তাহলে আমরা শুরু করব। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণে এখনো এক মাস সময় পাওয়া যাবে। এর মধ্যে যদি কোনোভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া যায় ভাল, না হলে মিক্স ডোজেই দিতে হবে। এ ছাড়া তো কোনো উপায় নেই। এখন অনেক জায়গা থেকে বার্তা আসছে, কিন্তু টিকা না পাওয়া পর্যন্ত আসলে কোনো কথায় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

এসব টিকার সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে রোবেদ আমিন বলেন, মডার্নার টিকা সংরক্ষণে তাপমাত্রা প্রয়োজন হয় মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ঢাকার বাইরেও কয়েকটি জেলায় আছে। ফাইজারের মতো এটি ব্যবহারের আগে কয়েক ঘণ্টা বিশেষ উপায়ে রাখতে হবে এমন কিছু নেই, তাই এটি ব্যবহারে খুব বেশি বেগ হতে হবে না আমাদের। তবে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কতটুকু দিচ্ছে, টিকা আসার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত