Ajker Patrika

ঈদে অতিরিক্ত ভাড়ার নামে লুট হবে ৮ হাজার কোটি টাকা: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৪২
Thumbnail image

ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি রুটে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া নিয়ে পরিবহন মালিক ও চাঁদাবাজেরা অতিরিক্ত ৮ হাজার কোটি টাকা ভাড়া আদায় করবে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ জানান সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সড়কপথে ৪০ কোটি ট্রিপ যাত্রায় যাত্রীপ্রতি গড়ে ১০০ টাকা বাড়তি দিলেও প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা এবং নৌ, রেল ও আকাশপথে ২০ কোটি ট্রিপ যাত্রায় যাত্রীপ্রতি গড়ে ২০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় হলে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় হবে। এবারের ঈদে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ভাড়া নৈরাজ্যকারী সিন্ডিকেটের পকেটে যাবে।’ 

আকাশপথেও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল ৬১ অ্যারোনটিক্যাল মাইলের উড়োজাহাজের ভাড়া দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ঢাকা-ব্যাংককের ভাড়ার চেয়ে প্রায় দেড় গুণ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। এই রুটে একটি বেসরকারি বিমানের ৪ হাজার টাকার ভাড়া এখন ১০ হাজার ৮০০ টাকা। নভোএয়ারের ৪ হাজার ৮০০ টাকার ভাড়া এখন ৮ হাজার ৪০০ টাকা। বাংলাদেশ বিমানে ৩ হাজার টাকার ভাড়া ৭ হাজার ৪০০ টাকা। ঢাকা-সৈয়দপুর, ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ৪ হাজার ৫০০ টাকার নিয়মিত ভাড়া ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় ঠেকেছে।’ 

শুক্রবার থেকে বিভিন্ন রুটের বাস, লঞ্চ ও বিমানের ভাড়া আরও বাড়তে পারে এমন শঙ্কা জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘শুক্রবার থেকে এসব ভাড়া দ্বিগুণে পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। চট্টগ্রাম থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ইতিমধ্যে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় হচ্ছে। স্বল্প দূরত্বে যেতে চাইলেও টিকিট নেই বলে বেশি দূরত্বের টিকিট কিনতে যাত্রীদের বাধ্য করা হচ্ছে। রেলের ৩৫০ টাকার টিকিট কালোবাজারিদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় কেনার খবর ভাইরাল হয়েছে।’ 

ঈদে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি আদায়কৃত ৮ হাজার টাকা নৈরাজ্যকারী সিন্ডিকেট ও মালিক-শ্রমিক নেতারা ভাগ করে নেবেন অভিযোগ করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এই বাড়তি ভাড়ার ৪০ শতাংশ নৈরাজ্যকারী সিন্ডিকেট ও ৬০ শতাংশ মালিক-শ্রমিক নেতাদের পকেটে যাবে। এই নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হবে এবং এতে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়বে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন বিশেষজ্ঞ আবদুল হক বলেন, ‘গণপরিবহনে যে অব্যবস্থাপনা তাতে সরকারের অনেক অর্জন ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটি সিন্ডিকেট ইচ্ছাকৃতভাবে যানজট ও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।’ 

সংগঠনটির অন্যতম উপদেষ্টা শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘সরকার ঈদের মতো একটি উৎসব সামনে রেখে পরিবহন মালিক ও চাঁদাবাজদের পক্ষ নিচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করছে না। সরকার চাইলে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে পারে, কিন্তু তারা চায় না। কারণ এতে সরকারের ঘনিষ্ঠজনেরা ক্ষতির শিকার হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সহসভাপতি তাওহিদুল হক লিটন বলেন, ‘আগামী কয়েক দিন সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট অন্যরা তৎপর হলে মানুষের ঈদযাত্রা এবং ফিরে আসার ক্ষেত্রে দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত