Ajker Patrika

এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই: ঈদের ১০-১৫ দিনের মধ্যে উদ্ধারের আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর ২৬ দিন পেরিয়ে গেছে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিকের। ঈদের আগে প্রিয়জনকে ফিরে পেতে পথ চেয়ে বসে আছে তাঁদের পরিবার। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। তবে ঈদের আগে ২৩ নাবিককে তাঁদের পরিবারের কাছে ফেরাতে না পারলেও সুসংবাদ দিয়েছে সরকার ও মালিকপক্ষ। আভাস পাওয়া গেছে, ঈদের ১০-১৫ দিনের মধ্যেই হয়তো নাবিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশি জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করতে সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি নানামুখী চাপও অব্যাহত রাখা হয়েছে। জলদস্যুদের সঙ্গে যেহেতু আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে, আমরা আশা করছি, সহসা তাদের (জিম্মি নাবিক) মুক্ত করা সম্ভব হবে।’

আর বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেছেন, ‘ঈদের পর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই জিম্মি জাহাজ ও ২৩ নাবিককে উদ্ধার করা হবে।’

কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিমও বলেছেন, খুব শিগগির সুখবর আসছে। দস্যুদের সঙ্গে চূড়ান্ত সমঝোতার ক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয় বাকি রয়েছে। তবে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। চূড়ান্ত ধাপের আলোচনা চলছে। এর বাইরে আর কিছু জানাতে চাননি মেহেরুল করিম।  

নাবিকদের স্বার্থরক্ষাকারী সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, জলদস্যুদের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনা দুই ধাপে হয়। প্রথম ধাপে মুক্তিপণ ও তা নিয়ে দর-কষাকষি হয়। কখন, কোন মাধ্যমে মুক্তিপণ পরিশোধ করা হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। দ্বিতীয় পর্বে উভয় পক্ষের বিশ্বাসযোগ্য জায়গায় ও নির্ধারিত পন্থায় মুক্তিপণ পরিশোধের মাধ্যমে জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করে আনার কাজ হবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনাম চৌধুরী বলেন, ‘জিম্মি মুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ঈদের পরই আসল কাজটা সম্পন্ন হবে। ঈদের আগে নয়।’

ভারত মহাসাগরে গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করে সোমালীয় দস্যুরা। এরপর জলদস্যুরা জাহাজ মালিকপক্ষের সঙ্গে প্রথমবারের মতো যোগাযোগ করে ২০ মার্চ। এর আগে ১৬ মার্চ রাত ৮টায় ওই জাহাজের এক নাবিকের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলাপ হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, জলদস্যুরা এখন পরিবার ও মালিকপক্ষের সঙ্গে জিম্মি নাবিকদের আলাপ করতে দিচ্ছে।

এর আগে ২০১০ সালে একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ এমভি জাহান মণি ও এর ২৬ নাবিক সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে পড়ে। সেবার প্রায় চার মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দিয়ে নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার করা হয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তবে মালিকপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করেনি।

এমভি জাহান মণির জিম্মি নাবিকদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিসও। তিনি বলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার পর হেলিকপ্টার থেকে দুটি পানিরোধী কার্টনে মুক্তিপণের অর্থ সাগরে ফেলা হয়েছিল। দস্যুরা নৌযান নিয়ে প্যাকেট দুটি জাহাজে নিয়ে আসে। এরপর গুনে দেখে মুক্তিপণের ডলার ঠিকঠাক আছে কি না। পরদিনই ভোরে দস্যুরা জাহাজটি থেকে নেমে যায়। এরপর জাহাজ আবার চলতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত