Ajker Patrika

যাদের গলায় বড়শি আছে, তারা কথা বলবে না, আমিও ৬০ বছর বলিনি: সংসদে লতিফ সিদ্দিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যাদের গলায় বড়শি আছে, তারা কথা বলবে না, আমিও ৬০ বছর বলিনি: সংসদে লতিফ সিদ্দিকী

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে দলটির বহিষ্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘যাদের গলায় বড়শি লাগানো আছে, তারা কথা বলবে না। আমিও ৬০ বছর বলিনি। আজকে আমার গলা থেকে আপনারাই বড়শিটা খুলে নিয়েছেন। তাই আমি যতক্ষণ আছি, আপনি যতই বাধা দেন, আমি কথা বলতে চেষ্টা করব।’ 

আজ রোববার জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধনী বিল-২০২৪ উত্থাপনের বিরোধিতা করে এসব কথা বলেন তিনি। 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর (বহিষ্কৃত) সদস্য ও সরকারের মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ‘হজ’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের ধরে ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে বহিষ্কার হন। পরে তাঁর সংসদ সদস্য পদও বাতিল হয়। এরপর রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বেশ কিছুদিন। পরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী। চলতি সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় ১০ মিনিট সময় দেওয়ার কারণে, ক্ষুব্ধ হয়ে সংসদ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ওয়াক আউট করেছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। 

আজ লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের একপর্যায়ে সংসদে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বিষয়ের ওপর (বিলের) আলোচনা করতে বলেন। জবাবে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে এই সংসদের সময়ের অভাব হয়। কিন্তু হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপিতে অর্থের অপচয় হয় না। কিন্তু কোনো সদস্য একটু সময় বেশি চাইলেই অভাব হয়।’ 

স্পিকারকে সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘এই সংসদে জাতির চেতনার কথা, জাতির স্বার্থের কথা, জাতির ভবিষ্যতের কথা আলোচনা হবে। সেখানে যে বলতে পারে, তাকে বলতে দিন। যাদের গলায় বড়শি লাগানো আছে, তারা কথা বলবে না। আমিও বলিনি। ৬০ বছর আমি বলিনি। আজকে আমার গলার থেকে আপনারাই বড়শিটা খুলে নিয়েছেন। তাই আমি যতক্ষণ আছি, আপনি যতই বাধা দেন, আমি কথা বলতে চেষ্টা করব।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আবার আপনার আদেশ...আপনি যখন বন্ধ করে দেবেন। আমি বসে পড়ব। কিন্তু বিনীতভাবে বলব, আমাকে বলতে দিন। সময় নষ্ট হচ্ছে না। জাতির কত সময় নষ্ট হয়েছে। সময়ের কথা বলছেন। আমার জীবনের ১৪ বছর এ জাতির জন্য কারাগারে কেটেছে। আমার জীবন এবং যৌবন। সুন্দরী সহধর্মিণীকে সঙ্গে নিয়ে ৭ বছর প্রবাসে কাটিয়েছি।’ 

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, আপনার আজকে সময়ের সংকট দেখা দিয়েছে। জাতি এখন সংকটে রয়েছে। এখানে বিদ্যুতের কথা বলা হয়েছে। আমি কাউকে বলব না, আপনি আমার এলাকায় আসুন। মন্ত্রী যে কোনো এলাকায় যাবেন, সেখানে বিদ্যুৎ যাবে না, এটা ভালো করেই বোঝেন। আমার বক্তৃতায় যদি ফিরে আসতে দেন, না হলে বসে পড়ি।’ 

তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার বসে পড়ব?’ 

এ সময় স্পিকার কোনো প্রত্যুত্তর না দিলে লতিফ সিদ্দিকী আবার বলে ওঠেন, ‘আপনি নীরব হয়ে গেলেন, আমিও নীরব হয়ে যাই। আমি কিন্তু ওই চেয়ারটিকে (স্পিকার) সম্মান করি।’ 

এ সময় ডেপুটি স্পিকার তাঁকে বসতে বললে, সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকী ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে বসে পড়েন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত