Ajker Patrika

জার্মানিতে আটক ৮০০ ‘বাংলাদেশি’, ফেরাতে ঢাকাকে চাপ

তাসনিম মহসিন
আপডেট : ১৩ জুন ২০২১, ২১: ৩৮
জার্মানিতে আটক ৮০০ ‘বাংলাদেশি’, ফেরাতে ঢাকাকে চাপ

ঢাকা: জার্মানিতে অবৈধভাবে অবস্থানের কারণে ৮০০ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে ঢাকাকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে জার্মান সরকার। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর আটককৃতদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশও। তবে ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আটক সবাই বাংলাদেশি নন, রোহিঙ্গা ও অন্য দেশের নাগরিকও রয়েছেন। এ কারণে ফেরত আনার প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের (সিডিএ) সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ইউরোপ ও ইইউ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীর বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে জার্মানিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করা হয়। গত বছর থেকে আটককৃতদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বলা হচ্ছে বারবার। কিন্তু এখনো এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দ্রুততম সময়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলা হয় বাংলাদেশকে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) রয়েছে, সেটির আওতায় এর আগেও নিজেদের নাগরিক নিশ্চিত হওয়ার পর অনেককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আবারও আনা হবে। আটককৃতদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি নন। যে ক’জন বাংলাদেশি শনাক্ত হয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে।

এর আগে অবৈধভাবে গিয়ে আটকা পড়া ৫০০ জনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বলেছিল জার্মানি। পর্যায়ক্রমে যাচাই–বাছাইয়ের পর তাঁদের মধ্য থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

পশ্চিম ইউরোপ ও ইইউ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ইইউতে যাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি নন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা। আবার অন্য দেশের নাগরিকদেরও বাংলাদেশি বলে দাবি করা হয়। তাই পূর্ণাঙ্গ যাচাই–বাছাই না করে কাউকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান সংস্থা–ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ইইউভুক্ত বিভিন্ন দেশে এক লাখের বেশি অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন। বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে আনতে নীতিগতভাবে সম্মত হওয়ায় অনেককেই এরই মধ্যে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এসব বাংলাদেশির মধ্যে কেউ অবৈধ অভিবাসী, কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন, কেউ দিন কাটাচ্ছেন শরণার্থীশিবিরে।

ইইউয়ের একজন কূটনীতিক নাম গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, এখন পর্যন্ত যাঁরা আটক হয়েছেন কিংবা বৈধতার জন্য আবেদন করেছেন এমন বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবস্থানই নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা আরও বেশি। রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশি পাসপোর্ট জোগাড় করে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন বলেও জানান এই কূটনীতিক।

তাঁর মতে, যেসব অনুপ্রবেশকারীর কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়া যাবে তাঁদের বাংলাদেশি হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। তাই অন্য দেশের নাগরিক যেন অবৈধভাবে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৪ সাল থেকে অভিবাসীদের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অনুপ্রবেশ করা অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে বেশির ভাগই মানব পাচারের শিকার। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সমুদ্রপথে ইতালি হয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশ ও আফ্রিকার নাগরিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরাই ছিল ৩৭ বছরের মাসুকার ‘সংসার’, যুদ্ধবিমান তছনছ করে দিল

চোখের জলে পাইলট তৌকিরের বিদায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত