Ajker Patrika

ফটকে আটকে যায় ফায়ারের গাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২: ৩০
Thumbnail image
আগুন পাঁচ ঘণ্টায় পর নিয়ন্ত্রণে। ছবি:আজকের পত্রিকা

সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে আগুন লাগে। ভবনের দুই জায়গায় আগুনের সূত্রপাত। পুড়ে ছাই হয়েছে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ সব। ফায়ার সার্ভিসের ২১১ জন কর্মী ও ২০টি ইউনিটের আগুন নেভাতে সময় লেগেছে প্রায় ১০ ঘণ্টা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, তাঁদের নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে সচিবালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে না পারার সমস্যা অন্যতম।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অপারেশনস মেজর (অব.) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, আগুন নেভানোর সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন নেভাতে এত সময় লাগা অযৌক্তিক ও অবিশ্বাস্য। ১০ মিনিটের আগুন নেভাতে ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানান, সচিবালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে গাড়ি প্রবেশে সমস্যা ছাড়াও টার্নটেবল ল্যাডার (টিটিএল) নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। দুটি টিটিএল ভেতরে নেওয়া গেছে। আরও টিটিএল নিতে পারলে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যেত।

বুধবার রাত ১টা ৫০ মিনিটে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কাজ শুরু করে। ৬ ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জানালার ভাঙা গ্লাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, ভবনের ছয় থেকে আটতলা পুরোপুরি পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সচিবালয়ের পাঁচটি ফটকের মধ্যে মাত্র দুটি দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি ঢুকতে পারে। এ দুটি ফটকের সংকীর্ণতা আগুন নেভানোর প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করেছে। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি ফটক পার হওয়ার সময় ভেঙে যায় এবং গাড়ি বের করতেও সমস্যা হয়েছে। ফটক সম্প্রসারণের প্রস্তাব আগেই দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির একটি বড় কারণ ছিল মন্ত্রণালয়গুলোয় কাঠের সৌন্দর্যবর্ধন। ফায়ার সার্ভিসের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি কক্ষ বন্ধ থাকায় তালা ও জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে হয়েছে।

আগুন দেরিতে নেভার বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে তাঁদের ২০ ইউনিট ও ২১১ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী কাজ করেছেন। তবে জায়গার সংকটের কারণে ১০ ইউনিট সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পেরেছে। বাকি ইউনিটগুলো বসে ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির সংকট ছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে পানির কোনো সংকট ছিল না। পাশেই ওসমানী মিলনায়তন থেকে পানি আনা হয়েছে। ওয়াসার গাড়ি এসে পানি দিয়ে যেত। কিন্তু সচিবালয়ের কক্ষগুলো আবদ্ধ ও গ্লাস লাগানো থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে। এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই।’

জানা গেছে, ৭ নম্বর ভবনে সড়ক পরিবহন, স্থানীয় সরকার, যুব ও ক্রীড়া এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দপ্তর রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত