Ajker Patrika

ভাত দিতে পারি না বলে আমি নিজেও ভাত খাই না

তানিম আহমেদ, ঢাকা
ভাত দিতে পারি না বলে আমি নিজেও ভাত খাই না

দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেকোনো দুর্যোগে তিনি ছুটে যেতেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। বাংলাদেশ স্বাধীনের পরে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়তে মনোযোগী ছিলেন। সেই সময় বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বলেছিলেন, ‘তোদের যেদিন ভাত দিতে পারব, সেদিনই আমি ভাত খাব।’ আজকের পত্রিকাকে সেই কথাটি বললেন, তৎকালীন ফজলুল হক মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আইয়ুব খান।

ওই সময়ের এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের রান্না হতো রেশনের চালে। 

কিন্তু দুর্ভিক্ষের কারণে চাল দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে রুটি খাওয়ানো হতো। সঙ্গে ডাল, মাছ বা মাংস। কিন্তু ৫০০ থেকে ৬০০ ছাত্রের জন্য রুটি বানানোর লোকবল ছিল না। এতে বেশির ভাগ রুটি খাওয়া যেত না। এ নিয়ে ছাত্রদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

বঙ্গবন্ধু নির্দেশনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রেশনের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান আইয়ুব খান। তিনি বলেন, সেই সময় একদিন হলের প্রভোস্ট মহব্বত আলী স্যার আমাকে ডেকে ভিসি আবদুল মতিন স্যারের রুমে নিয়ে যান। ভিসি স্যার আমাকে বললেন, ‘আগামীকাল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একটা সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারণ করা আছে। তুই, তোর কিছু বন্ধুবান্ধব নিয়ে ওনার কাছে যাবি। বঙ্গবন্ধুকে বলবি, সামনে অনার্স পরীক্ষা। এই রুটি খাওয়াতে হলের ছাত্রদের মধ্যে অসন্তোষের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।’

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতের ঘটনা বর্ণনা করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, আমি ছাত্রলীগের কয়েকজনকে নিয়ে গেলাম। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোরা কেন আসছস?’ বললাম, ভিসি স্যার একটা চেকটা পাঠিয়েছেন।

আমরা দাঁড়িয়ে আছি। তখন বঙ্গবন্ধু আমাদের বললেন, ‘আর কিছু বলবি।’ আমি বললাম, বঙ্গবন্ধু; হলে আমাদের রুটি খেতে হয়। সামনে অনার্স পরীক্ষা আর পারছি না। রেশনের চালটা দিলে আবার ভাত খেতে পারব। বঙ্গবন্ধু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তোদের ভাত দিতে পারি না বলে আমি নিজেও ভাত খাই না। যেদিন তোদের ভাত দিতে পারব, সেদিনই আমি ভাত খাব।’

জাতির পিতার মুখে এই কথা শোনার পরে থ হয়ে যান ছাত্রনেতারা। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্টাফকে বললেন, ‘এই ছাত্রদের কিছু খাইয়ে দে। না হলে তো আমার চাকরি থাকবে না।’ এই ঘটনার পর ভয়ে আর ভিসি স্যারের রুমে যাইনি। পরে একদিন তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করলাম। তিনি (ভিসি) আমাকে বললেন, ‘চিন্তা করিস না, কাজ হবে।’ দুই সপ্তাহ পর আমাদের জন্য রেশনের চাল এল, আর রুটি খেতে হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত