Ajker Patrika

৭ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি

পানিবন্দী হাজারো পরিবার, মিলছে না ত্রাণ, দুর্ভোগ

  • পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকে কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছে।
  • শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।
  • রাজশাহীর বাঘায় তলিয়েছে ফসলি জমি।
  • ভাঙন-আতঙ্কে গাইবান্ধার নদীর তীরের মানুষ।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০১
পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বাধ্য হয়ে অপরিপক্ব ধান কাটছেন এক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বাধ্য হয়ে অপরিপক্ব ধান কাটছেন এক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দফায় দফায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে ছয় জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েকটি স্থানে ইতিমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে পানি। এতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলের খেত। বাধ্য হয়ে অনেকে কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছে। অনেকেই পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে নিরাপদ স্থানে। এর মধ্যে খবর পাওয়া গেছে, কোথাও কোথাও শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। মিলছে না ত্রাণও।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ এবং দক্ষিণ ওডিশা উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। মৌসুমি বায়ু ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে ভারতের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে।

পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে বাঘার ফসলি জমি

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে পদ্মার আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০০ পরিবার। বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বহু বাড়িঘর। ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষক এখন কাঁচা ধান গরুর খাবার হিসেবে কেটে নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের মাঠগুলোয় এখন শুধু পানি আর পানি। নিচ পলাশী ফতেপুর মাঠে সবচেয়ে বেশি ফসলহানি হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া এবং দিয়াড় কাদিরপুরের প্রায় ৬০০ বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়সহ প্রায় ৫০টি পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, প্রাথমিকভাবে ২২০টি পরিবারের পানিবন্দী হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

শুকনা খাবারের সংকট, মিলছে না ত্রাণও

চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১১ হাজার পরিবার অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলে বেশ কিছুদিন ধরেই পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তেমন কিছুই পাচ্ছে না বন্যাকবলিত এসব এলাকার বাসিন্দারা। তবে প্রশাসন বলছে, বরাদ্দ কম। তাই যতটা সম্ভব বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের কানছিড়া জ্যাটপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুলিয়া বেগম বলেন, ‘হামার বাড়িতে এক সপ্তাহ থেকে পানি ঢুকে গেছে। খাবারদাবার কিছুই নাই। পরের কাছে চেয়েচিন্তে খাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কেহু হামাকে খাবার দিতে আসেনি। হামাদের এখানকার কেহু খাবার পায়নি।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলায় ২৮ টন চাল ও ২৩০ পরিবারকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চার পরিবারকে আট বান্ডিল টিন ও ২৪ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় শিবগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলের। সরেজমিনে দেখা গেছে, আউশ ধান, আখ, হলুদ ও বিভিন্ন শাকসবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই তলিয়ে যাওয়া ধান গবাদিপশুকে খাওয়ার জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

লালমনিরহাটে পানিবন্দী ২০ হাজার পরিবার

টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা দুই দিন বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহে চরম অবনতি ঘটেছে লালমনিরহাটের বন্যার পরিস্থিতি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

গতকাল বেলা ৩টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৯ মিটার; যা বিপৎসীমার ৪ সেমি ওপরে।

ঘরে পানি, তলিয়ে গেছে ফসলের খেত

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তাবেষ্টিত চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক শ পরিবার। তলিয়ে গেছে আমন ধান ও সবজিখেত। উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, নোহালী, গজঘণ্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নে তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষজন।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলী গ্রামের কুমোবালা বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে বাড়িতে পানি ওঠে। পানি ওঠায় কষ্টে আছি। এর আগেও পানি উঠে দুদিন কষ্টে থাকলেও কোনো সহায়তা পাইনি।’

কুড়িগ্রামে বন্যার পদধ্বনি

কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গতকাল বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পাউবো।

ব্রহ্মপুত্রতীরবর্তী উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পানি বাড়তেছে। নদের মাঝের কিছু নিচু চরে পানি ঢুকতেছে। তবে এখনো বাড়িঘরে পানি ওঠে নাই। এমন করি বাড়তে থাকলে বন্যা হইতে পারে।’

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পানি বাড়ছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

দফায় দফায় বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ৪০ মিলিমিটার। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরের মানুষগুলো ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।

ফুলছড়ি উপজেলার গুপ্তমণি চরের বাসিন্দা ইমন মিয়া বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লেই আমরা আতঙ্কে থাকি ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে।’

দৌলতপুরে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি আরও ১০ সেমি বেড়েছে। এতে চিলমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের মোট ১৯টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামে আরও প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে।

এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বন্যাকবলিত দুই ইউনিয়নের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আজকের পত্রিকা'র প্রতিনিধিরা]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি: আসিফ

আজকের রাশিফল: অনলাইনে বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, অতি উত্তেজনা পেটে গ্যাস বাড়াবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ শিখতে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন সমন্বয়কসহ ১২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
১০ জন কর্মী ও সমন্বয়ক হিসেবে দুজন কর্মকর্তা আজ দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। ছবি: সংগৃহীত
১০ জন কর্মী ও সমন্বয়ক হিসেবে দুজন কর্মকর্তা আজ দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কর্মী পর্যায়ের লোকোমোটিভ রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরা বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিংস্টক ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। মোট ১০ জন কর্মী ও সমন্বয়ক হিসেবে আরও দুজন কর্মকর্তা এ প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। তাঁরা আজ দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অনুদানে পরিচালিত এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণটি ৯ থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোরিয়া রেল ওয়ার্কশপে অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে প্রকল্পের অংশ হিসেবে পাহাড়তলী ডিজেল ওয়ার্কশপে দুই দফায় ৬০ জন কর্মীকে কোরিয়ান বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে নেওয়া মূল্যায়নের ভিত্তিতেই বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য এই কর্মীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম প্রশিক্ষণার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে বলেন, প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে রেলওয়ের সক্ষমতা আরও বাড়বে।

রেলসংশ্লিষ্টদের মতে, কর্মী পর্যায়ে বিদেশে প্রশিক্ষণ কর্মীদের কাজে উৎসাহ জোগাবে এবং সামগ্রিকভাবে রেলওয়ের সেবা ও রক্ষণাবেক্ষণব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। তাঁরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি: আসিফ

আজকের রাশিফল: অনলাইনে বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, অতি উত্তেজনা পেটে গ্যাস বাড়াবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩ সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতে নিজেদের জন্য ফ্ল্যাট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সাবেক ১৩ সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মামলার অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ভোগদখলের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে দুদক দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ এনেছে।

অভিযোগ রয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য অধিগ্রহণ করা জমি প্রকৃত উদ্দেশ্যের বাইরে গিয়ে তাঁরা স্বল্পমূল্যে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১০৬ ও ১০৭তম বোর্ডসভায় বেআইনিভাবে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় ‘ফ্ল্যাট দীর্ঘমেয়াদি লিজ প্রদানের নীতিমালা-২০১৮’ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা ৪০ একর জমি পরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ৯৯ বছরের লিজে আবাসন বরাদ্দে ব্যবহার করা হয়, যা গেজেটের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

দুদক জানায়, স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭ অনুযায়ী ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়ার কথা থাকলেও সেতু কর্তৃপক্ষ তা নেয়নি। সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব আইনেও এ ধরনের আবাসন প্রকল্প গ্রহণের কোনো ক্ষমতা নেই। এমনকি সরকারি নীতিমালা গেজেটে প্রকাশ বাধ্যতামূলক হলেও ‘নীতিমালা, ২০১৮’ কোনো গেজেটে প্রকাশ করা হয়নি। সব মিলিয়ে এটি ছিল সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নেওয়া একটি প্রকল্প।

ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মামলায় অপর আসামিরা হলেন সেতু বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, সাবেক বিদ্যুৎ-সচিব ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আবদুল জলিল, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সাবেক অর্থসচিব ও সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন, ইআরডির সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আজম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও আইআরডির সাবেক সচিব ড. আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি: আসিফ

আজকের রাশিফল: অনলাইনে বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, অতি উত্তেজনা পেটে গ্যাস বাড়াবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৯
খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশের দুই উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সাত অতিরিক্ত ডিআইজি, ১৩ পুলিশ সুপারসহ (এসপি) মোট ২২ জন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনগুলোতে সই করেন উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. জুলফিকার আলী হায়দারকে বদলি করে শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও সম্প্রতি ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ জাহিদুল হাসানকে খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এ ছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে নিয়মিত রদবদলের অংশ হিসেবে সাত অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১৩ পুলিশ সুপারকে বিভিন্ন ইউনিটে বদলি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি: আসিফ

আজকের রাশিফল: অনলাইনে বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, অতি উত্তেজনা পেটে গ্যাস বাড়াবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের বেঞ্চ আজ সোমবার আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।

এর আগে ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কংগ্রেস নামের একটি দলের মহাসচিব ইয়ারুল ইসলাম রিটটি করেন। নির্বাহী বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনের সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা এবং ইলেকটোরাল সার্ভিস কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল রিটে।

আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালত বলেছেন—দেশে এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। এখন এই রিট করার উপযুক্ত সময় নয়। পরে আমি রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ চাইলে আদালত খারিজ করে দেন।’

রিটে বলা হয়, নির্বাহী বিভাগের লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচন পরিচালনা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিচার বিভাগের ন্যায় স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনেরও নিজস্ব লোকবল থাকতে হবে। এর জন্য রিটে ‘ইলেকটোরাল সার্ভিস কমিশন’ গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ কংগ্রেস দলের মহাসচিব ইয়ারুল ইসলাম রিট করার পর বলেন, সংবিধান অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সব প্রকার সহযোগিতা দেবে। কিন্তু সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রতিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগকে দেওয়া হয়। নির্বাহী বিভাগ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের চাহিদা মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনা করে। ফলে নির্বাচন নিয়ে নানামুখী বিতর্ক তৈরি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি: আসিফ

আজকের রাশিফল: অনলাইনে বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, অতি উত্তেজনা পেটে গ্যাস বাড়াবে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত