Ajker Patrika

অস্বাভাবিক ব্যয়: ২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প আটকে দিল পিইসি

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ২৬
অস্বাভাবিক ব্যয়: ২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প আটকে দিল পিইসি

দেশে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একটি প্রকল্প নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রকল্পের নাম ‘জেলা শহরে বিদ্যমান মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রকে ৩০ শয্যাবিশিষ্ট (৫০ শয্যায় উন্নীতকরণযোগ্য) মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও উন্নীতকরণ।’ এর জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। বিপুল ব্যয়ের একই প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পের মধ্যে লুটপাটের ছক দেখছে কমিশন, পেয়েছে অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ উদ্যোগ ও অস্বাভাবিক ব্যয়ের তথ্য। এ কারণে নতুন করে পরিকল্পনা দিতে বলা হয়েছে।

প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুলাই পর্যন্ত। এটি বাস্তবায়ন করবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। প্রকল্পের নির্বাহক হিসেবে কাজ করবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। নির্ধারিত ২ হাজার ৭৭৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার পুরোটাই অর্থায়ন করবে সরকার (জিওবি)। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে দেশের ৫১টি জেলা সদর পৌরসভা, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা এবং ১১টি সিটি করপোরেশনে।

প্রকল্পের বিষয়ে বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা ডাকে পরিকল্পনা কমিশন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় নয়তলা ফাউন্ডেশনে ৬২টি আটতলাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র (চিকিৎসক, নার্স ও ডরমিটরিসহ) নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ভবনের আকার ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৬৩৫ বর্গফুট। এতে ব্যয় হবে ২ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। এর সঙ্গে পাসেঞ্জার, বেড ও লিফটের খরচ যোগ করে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৮৪ শতাংশ।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, ‘এসব ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফার্নিচার ও লিফট বাদে প্রতি বর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৪ টাকা, যা অত্যধিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’ 
প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় বিদ্যমান মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের সম্প্রসারণ কাজেও অসংগতি তুলে ধরে পিইসি। এ নিয়ে সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়, ‘গাজীপুর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের দোতলাবিশিষ্ট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন নির্মাণে প্রতি বর্গফুটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৯৬ টাকা। গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে একই সমান খরচ দেখানো হয়েছে, যা অত্যন্ত বেশি বলে প্রতীয়মান হয়।’

গাজীপুরের বিদ্যমান ক্লিনিক বিল্ডিংয়ের তিনতলা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। প্রতি বর্গফুটের ব্যয় ৪ হাজার ২৫৬ টাকা। পিইসি বলছে, এই ভবনের ক্ষেত্রে নতুন ফাউন্ডেশনের দরকার নেই। ফলে ব্যয় অনেক বেশি।

মেডিকেল অফিসারদের জন্য বিদ্যমান আবাসিক ভবনের চারতলা পর্যন্ত (তিন ও চারতলা) ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টাকা, প্রতি বর্গফুটে খরচ ৪ হাজার ৮৮ টাকা। নতুনভাবে ফাউন্ডেশন ব্যয় নেই। তার পরও প্রতি ফ্লোরে যে ব্যয় ধরা হয়েছে, তা অনেক বেশি।

নার্স কোয়ার্টারের চতুর্থ তলা (তৃতীয় ও চতুর্থ তলা) পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪ লাখ টাকা, প্রতি বর্গফুটে ব্যয় ৪ হাজার ১১১ টাকা। এটাকেও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এদিকে, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে বিভিন্ন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবনের সংস্কার বা পুনর্নির্মাণে ব্যয় ৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে অনেক উপকরণে বরাদ্দ থোক হিসেবে রাখা হয়েছে। ব্যয়ও অনেক বেশি বলে মনে করে পিইসি।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের রেট শিডিউল ২০২৩ অনুযায়ী প্রকল্পের আসবাব কেনার প্রাথমিক ব্যয় ৪৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২৫ হাজার ৫৩৬টি আসবাব কেনা হবে। তবে আসবাবের সংখ্যা ও ব্যয় প্রাক্কলন অসামঞ্জস্য বলে মনে করছে পিইসি। এ ক্ষেত্রে একজন বাইরের সদস্য নিয়ে কমপক্ষে তিন সদস্যের একটি বাজারদর কমিটির মাধ্যমে ক্রয় ও ব্যয় নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

পিইসি বলছে, প্রকল্পে ৪ দশমিক ৪০ একর ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ১৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে লিখিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পাওয়া যায়নি। পরিপত্র অনুসারে, প্রস্তাবিত জমির স্থিরচিত্র ডিপিপিতে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি।

প্রকল্প চলাকালীন হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর জন্য ভবনভাড়া ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছে পিইসি।

এ ছাড়া প্রকল্পে মোট ১৩৬টি প্যাকেজ রয়েছে এবং ১ লাখ ৬১ হাজার ৮৮টি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ২৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্যাকেজের সংখ্যা অত্যধিক বলে মনে করছে পিইসি। আর প্যাকেজ ও যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে সংখ্যা ও মূল্য পুনরায় নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের স্বাস্থ্য অনুবিভাগের যুগ্মপ্রধান মানস মিত্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত, পুরো প্রকল্পই পুনরায় করতে বলা হয়েছে। প্রতি ইউনিটে যে খরচ দেখানো হয়েছে, সেটা খুবই বেশি। আর প্রকল্প খরচও বেশি।’

প্রকল্পের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় উদ্যোগ দেখেন মানস মিত্র। তিনি বলেন, সব জায়গায় একই পরিমাণ ভবন নির্মাণ, শয্যা বাড়ানো ও লজিস্টিক ব্যয় তুলে ধরা হয়েছে। তবে চাহিদার ভিত্তিতে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নির্মাণ ও ব্যয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনা অভিমুখী চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের পদযাত্রায় আবারও পুলিশের বাধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’

আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’

‎‎এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।

‎‎ ২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

‎ ৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।

৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।

‎৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

‎‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণা স্থগিত

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।

আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।

বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ২৭
পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।

তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।

২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন এজেন্সির প্রতারণার শিকার ১৭ ওমরাহযাত্রী

আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রতারণার শিকার ওমরাহযাত্রীরা প্রতিকার চেয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। আর একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ত্রুটিগুলো লিখিতভাবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগ ওঠা তিন এজেন্সির একটি হলো দেশ ও বিদেশ হজ এজেন্সি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওমরাহ যাত্রীরা হলেন আজহারুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, নূর মোহাম্মদ, মো. খোরশেদ আলম, খোদেজা আলম, কোহিনুর আক্তার, রহিমা আক্তার, সারোয়ার আলম চৌধুরী ফরিদা ইয়াসমিন লাভলী, শফিকুল আলম ও শাহেনা আকতার। এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ওমরাহ পালনকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সুনির্দিষ্ট হোটেল বুকিং না থাকা, নিজ উদ্যোগে হোটেলে লাগেজ বহন, হোটেল ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি, সংকীর্ণ আবাসস্থল, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, হজের পাঁচ দিন বাস সার্ভিসে চরম অব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন।

জানতে চাইলে দেশ ও বিদেশ এজেন্সির মালিক এহসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। কয়েকজন টাকা বকেয়া রেখেই ওমরাহ পালনে যান। এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।

মো. শামীম হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সির কাছে। তিনজনে ওমরা পালনের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা জমা দেন। অফিসে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় নোটিশ পাঠায়। এতে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে ধরে নেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নয়। পরে জমা দেওয়া টাকার মধ্যে২ লাখ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শাহনেওয়াজ নামের অন্য একটি ব্যক্তি লাইম স্টোন রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার করে তিনজনের জন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওমরাহ পালনে যান তাঁরা। মদিনায় ৪ দিন ও মক্কায় ১০ দিন রাখার শর্তে টাকা দেওয়া হয়। এজেন্সি মদিনায় ফ্লাইট না দিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট দেয়। এরপর জেদ্দা-মদিনায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ রিয়াল করে আদায় করে। মদিনায় হোটেল নিম্নমানের দেওয়া হয়। একই কক্ষে নারী-পুরুষকে রাখা হয়। মক্কায়ও নিম্নমানের হোটেল দেওয়া হয়। সেখানেও নারী-পুরুষকে একত্রে রাখা হয়। মক্কা থেকে ফ্লাইট না দিয়ে মদিনা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত