Ajker Patrika

ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যমে সঠিক প্রচার গুরুত্বপূর্ণ: ইস্তাম্বুলে তথ্যমন্ত্রী

ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যমে সঠিক প্রচার গুরুত্বপূর্ণ: ইস্তাম্বুলে তথ্যমন্ত্রী

ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সঠিক প্রচারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘ইসলামের মূলমন্ত্র যে শান্তি এবং ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসবাদ যে ইসলাম সমর্থন করে না তা বিশ্বজনের কাছে তুলে ধরতে ওআইসি ও তার সদস্য দেশগুলো বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে পারে।’

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আজ শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে ওআইসি ভুক্ত দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের দ্বাদশ সম্মেলনে মন্ত্রী এ মত ব্যক্ত করেন।

তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের প্রেসিডেন্ট ফাহরেতিন আলতুনের সভাপতিত্বে ওআইসি মহাসচিব হুসেইন ব্রাহিম তাহা এবং সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীরা ‘তথ্যবিকৃতি ও ইসলামভীতি প্রশমন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

ওআইসির সামনে বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা ও জঙ্গিবাদ দমনের উদাহরণ তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে যেমন শান্তিপূর্ণভাবে সবার নিজ নিজ ধর্মপালনের পরিবেশ বজায় রয়েছে তেমনি ধর্মকে কেউ যাতে জঙ্গিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি নিয়েছে সরকার।’

ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও মানবতার খাতিরে ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দার ভেতরেও রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। এটি নিয়ে অনেক সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়ে থাকে। কিন্তু আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে তাদের নিজের দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান এবং তা যত দ্রুত হয়, ততই সকলের জন্য মঙ্গল।’

সম্মেলনে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গেও দেশের সুস্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। ফিলিস্তিনিদের প্রতি দেশের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

সম্মেলন শেষে আগামীকাল রোববার দেশের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রীর ইস্তাম্বুল ত্যাগ করার কথা। সম্মেলনের সিনিয়র অফিশিয়ালস সভায় যোগদানকারী মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং
যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ওসমান হাদির ভাই আবু বকর সিদ্দীক, বোন মাসুমা এবং ইনকিলাব মঞ্চের তিন নেতা আব্দুল্লাহ আল জাবের, ফাতিমা তাসনিম জুমা ও মো. বোরহান উদ্দিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ওসমান হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সারা দেশ তাঁর জন্য দোয়া করছে। তাঁর সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সবাই চেষ্টা করছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি দেশের বাইরে পাঠাতে হয়, যেখানে পাঠানোর প্রয়োজন হবে সরকার সেখানেই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’

যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং
যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং

ওসমান হাদির বোন বলেন, ‘সে ছোটবেলা থেকেই দেশকে মনেপ্রাণে ভালোবাসত। ছোটবেলা থেকেই সে বিপ্লবী। বিদ্রোহী কবিতা তার প্রিয়, সে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসত। তার একটি ১০ মাসের সন্তান আছে। হাদি আমাদের মেরুদণ্ড।’

তিনি বলেন, ‘ওর অনেক কাজ, ওকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনারা বিপ্লবী সরকার, যে করেই হোক জুলাই বিপ্লবীদের বাঁচিয়ে রাখবে হবে। তা না হলে এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে।’

যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং
যমুনায় শরিফ ওসমান হাদির পরিবার। ছবি: প্রেস উইং

অপরাধীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা জাবের বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেকে বাসায় ফিরে গিয়েছিল ওসমান হাদি বাসায় ফিরে যায়নি। সে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করত এবং জুলাই বিপ্লবের জন্য দিনরাত কাজ করত। যে ছেলেটা গুলি করেছে, শুনতে পাচ্ছি সে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল কোন প্রক্রিয়ায় সে জামিন পেয়েছে সেটা তদন্ত করুন।’

এ সময় জুলাই যোদ্ধাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ফাতেমা তাসনিম জুমা।

এমন নৃশংস হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পুরো চক্রকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ ঘটনার আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণ করে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে যমুনায় বৈঠক শুরু হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বৈঠকে উপস্থিত আছেন।

অপর দিকে এনসিপির প্রতিনিধি হিসেবে আছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।

বৈঠকের আলোচ্যসূচি বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই আলোচনায় স্থান পেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: তফসিলের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এখন বড় চ্যালেঞ্জ

  • নির্বাচনের বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য তৎপরতা
  • অন্য দলগুলোর অভ্যন্তরীণ ও পারস্পরিক কোন্দল
  • লুট হওয়া অস্ত্র এবং জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী
  • পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আশাবাদ পুলিশপ্রধানের
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই অভ্যুত্থানের জেরে বিপর্যস্ত পুলিশ বাহিনীকে ধীরে ধীরে গুছিয়ে এনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে এ নিয়ে পর্যবেক্ষক মহল বা জনমনে স্বস্তি এখনো ফেরেনি। এমন অবস্থায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সম্ভাব্য নেতিবাচক তৎপরতা, জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর মতবিরোধ, লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার না হওয়া—এ সব মিলিয়ে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে উত্তেজনা ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ওপরের চিত্র পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) শুরু থেকেই কঠোর অবস্থান নিতে পারলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অন্যথায় তা অবনতির দিকে যেতে পারে।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত গণভোটও নেওয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ভোটের তফসিল ঘোষণা করার পর তরুণদের দল এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী একে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি এ সময় অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর উদাসীনতা রয়েছে এবং অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে। এর ২৪ ঘণ্টা না যেতেই গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়েছেন নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদী। মাথায় গুলি লাগার পর বাঁচা-মরার সন্ধিক্ষণে রয়েছেন এই জুলাই যোদ্ধা।

নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সক্রিয় আছে। তারা যেকোনোভাবে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করতে পারে—এমন আশঙ্কা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট মহলে রয়েছে। ইতিমধ্যে দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক বিদেশি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হলে তা ‘প্রতিহত করা হবে’। এই ‘প্রতিহত করার’ জন্য দলটি তফসিল ঘোষণার পর বড় ধরনের কর্মসূচি বা সহিংস কার্যক্রমের পথেও যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। নির্বাচন চলাকালেও বড় ধরনের নাশকতা বা সংঘর্ষের ঝুঁকি রয়েছে। তবে ইসি এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসি। তিনি সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেন, কেউ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ নয়, অন্যান্য দলসংশ্লিষ্ট বিষয়ও পরিস্থিতি অস্থির করতে পারে। বিএনপি ও জামায়াতের ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব, অন্যান্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নতুন জোট গঠন ও মতবিরোধও জটিলতা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম মনে করছেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যাপ্ত নয়; তাই তফসিলের পর ইসিকে আরও কঠোর ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের দিনে দেশের বিভিন্ন থানা ও কারাগার থেকে বিপুল অস্ত্র লুট হয়। এসব অস্ত্রের সব এখনো উদ্ধার করা যায়নি। প্রায় ১ হাজার অস্ত্র এখনো বেহাত রয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে ঘটেছে খুন-খারাবিসহ বিভিন্ন অপরাধ। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে বেহাত অস্ত্রকে। বিষয়টি আমলে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এ পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠক করেছে ইসি।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ্য করে নিরাপত্তা প্রস্তুতি চার ধাপে ভাগ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর আজ থেকে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে, যা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার পর্যন্ত চলবে। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর পরস্পরের বিরোধ বিবেচনায় নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা, মিটিং-মিছিল থেকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ বাহিনী সব সময় প্রস্তুত থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে এ নিয়ে আগেই সতর্ক করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে অবস্থিত মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভোটের বাইরে থাকায় তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মাঝেও মতবিরোধ রয়েছে। তাই এবারের নির্বাচন আগের তুলনায় আলাদা ও বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। ইসিকে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নিতে হবে।’

তবে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা মনে করেন, আওয়ামী লীগ চেষ্টা চালালেও নির্বাচন বানচালে সফল হতে পারবে না। তাঁর ভাষায়, ‘দেশে বিপুল মানুষ ভোট দিতে চাস। তাই একটি পক্ষ চাইলেই বড় প্রভাব ফেলতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।’

পুলিশপ্রধান, মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে। দেশে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ সর্বদা তৎপর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুলেট হাদির বাঁ কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

মাথায় গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, বাঁ কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেনস্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত। তাঁর মতে, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ সময়ে কোনো নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না।

আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সায়েদুর রহমান এসব তথ্য জানান।

সায়েদুর রহমান বলেন, হাদি এখন খুবই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছেন এবং আগামী ৭২ ঘণ্টাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাঁকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে রাখা হয়েছে, যদিও চিকিৎসকেরা এখনো আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

সায়েদুর রহমান আরও জানান, গুলি বাঁ কানের ঠিক ওপর দিয়ে মাথায় ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এই পথ বরাবর মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্রেনস্টেমেও ইনজুরি হয়েছে, যা জীবনরক্ষাকারী কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি বলেন, ‘এটা আমরা ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি হিসেবে বিবেচনা করছি। এখন কোনো ধরনের ইন্টারভেনশন সম্ভব নয়। রোগীকে কেবল লাইফ সাপোর্টে ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।’

সায়েদুর রহমানের ভাষায়, রোগীকে এখন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তবু একটুখানি আশার জায়গা আছে, ‘রোগীর শরীরে এখনো সাইন অব লাইফ আছে। অপারেশনের সময় তাঁর নিজের শ্বাস নেওয়ার কিছু প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিল।’

তবে পথটা সহজ নয় বলেও জানান ডা. সায়েদুর। তাঁর মতে, হাদি অস্ত্রোপচারের আগেই একবার শকে চলে গিয়েছিলেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে স্থানান্তরের সময় তাঁর নাক ও গলা দিয়ে প্রবল রক্তক্ষরণ শুরু হয়। যদিও আপাতত সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

বিশেষ সহকারী আরও জানান, এখনই আশার কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, দুপুরে পল্টনের বিজয়নগর এলাকায় ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত