Ajker Patrika

শিশুসন্তানকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ১৩ বছর পর সাজা কমে হলো ১০ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে চার বছরের সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন বাবা মো. জসিম। ২০০৭ সালের মার্চে ঘটা এই ঘটনায় জসিমের মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালতে। পরে হাইকোর্টও এ রায় বহাল রাখেন। কিন্তু এত দিন পর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিলেন।

আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন। আসামির ১০ বছরের সাজা খাটা এরই মধ্যে সম্পন্ন হওয়ায় অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে কারাগারে আছেন জসিম।

আদালতে আসামি জসিমের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, আপিল বিভাগ জসিমকে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (হত্যা) শাস্তি বহাল না রেখে দণ্ডবিধির ধারা ৩০৪-এর পার্ট-২-তে (অপরাধজনক নরহত্যা) ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। ২০০৭ সাল থেকে জসিম কারাগারে। সে হিসাবে তাঁর সাজাভোগ শেষ হয়ে গেছে। অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার না থাকলে তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৩১ মার্চ রাতের খাবার খাওয়ার সময় জসিম তাঁর শাশুড়ির কাছে দুই হাজার টাকা চান। এর জন্য শাশুড়ি তাঁকে ঝাড়ুপেটা করেন। শিশুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে জসিম তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পরে শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। 

ওই ঘটনায় ২০০৭ সালের ২ এপ্রিল শিশুটির মা ফাতেমা বেগম তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মেহেন্দীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এই মামলায় ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই বিচারক আদালত রায় দেন। রায়ে জসিমের মৃত্যুদণ্ড হয়। জসিমের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে জসিমের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। এর বিরুদ্ধে একই বছর জসিম জেল আপিল করেন। এই আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়। 

আসামিপক্ষের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা শুনানির সময় আদালতকে বলেন, ঘটনার দিন আসামির শাশুড়ি যে আচরণ করেছিলেন সেই আচরণে জামাতার মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না। তাঁর নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল না। নিজের সন্তানকে হত্যার কোনো উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। কোনো পূর্ব পরিকল্পনা না থাকায় এই ঘটনাটি কোনো খুনের অপরাধ হতে পারে না।

আইনজীবী হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সর্বোচ্চ আদালত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। এই কারণে অপরাধজনক নরহত্যা দোষে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে দশ বছরের শাস্তি দিয়েছেন। এরই মধ্যে ১০ বছর সাজা ভোগ করা শেষ হওয়ায় তিনি এখন মুক্তি পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত