Ajker Patrika

গুম-নির্যাতনের দুই মামলা

১৩ সেনা কর্মকর্তার ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন নাকচ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাবাহিনীর ১৩ কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে করা দুটি পৃথক মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি হবে আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল রোববার এই দিন ধার্য করেন।

এই মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তার ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন নাকচ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে জেড আই খান পান্নাকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ পলাতক অন্য আসামিদের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন এই ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালে গতকাল প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। এর আগে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষের প্রিজন ভ্যানে করে এই দুই মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনে (টিএফআই) রেখে গুমের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ডিজিএফআইয়ের জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) রেখে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের অপর মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৭ ডিসেম্বর।

১৩ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন জানানো হলে ট্রাইব্যুনাল তা নামঞ্জুর করেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তাই গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের সশরীরেই হাজির হতে হবে। পলাতকদের আত্মসমর্পণের জন্য বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম চলছে।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও মন্ত্রীরা হাজির হতে পারলে সেনা কর্মকর্তারা কেন পারবেন না?’

এই ১৩ সেনা কর্মকর্তা হলেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।

শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সাত আসামি পলাতক রয়েছেন।

ট্রাইব্যুনাল সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণের নির্দেশ দেন।

শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জেড আই খান পান্না পরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, তাঁকে (শেখ হাসিনা) আরও প্রোপার ওয়েতে ডিফেন্স দেওয়া দরকার; যে কারণে আমি তাঁর আইনজীবী হতে আবেদন করেছি। তখন তাঁরা বলেছেন, এটা তো আপনি পারেন না, তিনি তো পলাতক। প্রসিকিউশন বলেছে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে থাকতে, তখন আমি বলেছি, আমার কোনো আপত্তি নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...