Ajker Patrika

ঘুম নয় ব্যায়াম, বিয়ার নয় স্মুদি: স্বাস্থ্যকর জীবনে ঝুঁকছে জেন-জি প্রজন্ম

ফিচার ডেস্ক
জেন-জি প্রজন্ম এখন বিমানবন্দরে বিয়ারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিচ্ছে। ছবি: পেক্সেলস
জেন-জি প্রজন্ম এখন বিমানবন্দরে বিয়ারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিচ্ছে। ছবি: পেক্সেলস

কি প্রেমে, কি আন্দোলনে, জেন-জি প্রজন্মের উপস্থিতি সবখানে। ফলে ‘জেন-জি’ শব্দটি শুনলেই এখন এক দ্রোহী প্রজন্মের তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি চোখে ভাসে। কয়েক বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই প্রজন্মের তরুণদের কর্মকাণ্ড এমন ছবিই তৈরি করেছে আমাদের মনে। বাংলাদেশ-নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা যেমন আন্দোলন সংগ্রামের একেবারে সামনের সারিতে ছিল, তেমনি সম্প্রতি তারা ‘ডিলিট ডে’ নামে ডাক দিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমমুক্ত জীবনের।

প্রেম থেকে আন্দোলন, উদ্ভাবন থেকে প্রযুক্তি—সবখানে থাকলে স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে তারা কেন পিছিয়ে পড়বে? না, সেখানেও তারা আছে, ভালোভাবেই আছে। জেন-জি প্রজন্মের একটি ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত অ্যাভান্তি ট্রাভেল ইনস্যুরেন্সের একটি সমীক্ষায়।

বিমানবন্দরে বিয়ার পান করা অনেকের কাছে ভ্রমণের একটি অপরিহার্য অংশ; বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় এই সংস্কৃতি অনেক পুরোনো। সেসব জায়গায় ফ্লাইট যখনই হোক না কেন, তার আগে অনেকে বিমানবন্দরের পানশালায় পান করতে আগ্রহী হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে, জেন-জি প্রজন্ম এখন বিমানবন্দরে বিয়ারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিচ্ছে। নতুন এই তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০ জন জেন-জি ভ্রমণকারীর মধ্যে ৪ জন এখন অ্যালকোহলের বদলে জুস ও স্মুদি পান পছন্দ করছে।

জেন-জি প্রজন্মের ১০ শতাংশ পুরোপুরি অ্যালকোহল এড়িয়ে চলেন। ছবি: পেক্সেলস
জেন-জি প্রজন্মের ১০ শতাংশ পুরোপুরি অ্যালকোহল এড়িয়ে চলেন। ছবি: পেক্সেলস

পানীয় নির্বাচনে প্রজন্মগত বিভাজন

অ্যাভান্তি ট্রাভেল ইনস্যুরেন্সের সমীক্ষাটি চালানো হয়েছিল ১ হাজার ৭৩ জন ব্রিটিশ ভ্রমণকারীর ওপর। সে সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিমানবন্দরে খাবার ও পানীয় পছন্দের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে তীব্র বিভাজন রয়েছে। কম বয়সী ভ্রমণকারীরা সুস্থতা ও নমনীয়তাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। ট্রাভেল বিশেষজ্ঞ সারাহ রদ্রিগেজ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘জেন-জি বিমানবন্দরকে ২৪/৭ ওয়েলনেস হাব হিসেবে দেখবে। তারা যেকোনো সময় স্মুদি বা ভারী খাবার খায়। অন্যদিকে বয়স্ক ভ্রমণকারীরা এখনো কফি এবং আরও ঐতিহ্যবাহী খাবার পছন্দ করে।’

এদিকে মিলেনিয়ালরা এখনো বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি মদ্যপানকারী হিসেবে পরিচিত। তাঁরা যেকোনো সময় বিয়ার পানের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। জরিপের পরিসংখ্যান বলছে, মিলেনিয়ালসের ৩৬ শতাংশ বিমানবন্দরে বিয়ার পান করে। যেখানে মাত্র ২৭ শতাংশ জেন-জি বিয়ার পান করে বিমানবন্দরে। বুমার্স অর্থাৎ যাঁদের বয়স ষাটের ওপর, তাঁদের ২৫ শতাংশ বিমানবন্দরে বিয়ার পান করেন।

২৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী দেরি করে ঘুমানোর পরিবর্তে ফিটনেস সেশন করতে পছন্দ করেন। ছবি: পেক্সেলস
২৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী দেরি করে ঘুমানোর পরিবর্তে ফিটনেস সেশন করতে পছন্দ করেন। ছবি: পেক্সেলস

কারা কোন সময় বেছে নিচ্ছেন

মিলেনিয়ালরা অ্যালকোহল পানের সময় নিয়ে সবচেয়ে বেশি রিল্যাক্সড। তাঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশ জানিয়েছেন, বিমানবন্দর যেকোনো সময় বিয়ার পানের জন্য সঠিক জায়গা। জেন-জির ১৭ শতাংশ তরুণ সকাল ১০টার আগে পান করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করলেও ১০ শতাংশ আবার পুরোপুরি অ্যালকোহল এড়িয়ে চলেন। অন্যদিকে, বুমাররা অ্যালকোহল থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে থাকেন। তাঁদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বিমানবন্দরে পানীয় এড়িয়ে যান।

স্বাস্থ্যকর পানীয়ের জনপ্রিয়তা

পানীয়র ধরনজেন-জি (%) মিলেনিয়ালস (%)বুমারস (%)
স্মুদি বা জুস৩৬
পানি৬৮৩৫
এনার্জি ড্রিংকস৩২২৯
কফি এবং চা৪৪-৬৪

জেন-জি স্বাস্থ্যসচেতন পানীয়ের দিকে ঝুঁকছে। তাদের কাছে জুস ও স্মুদির চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

নাইটক্লাব নয়, জিমই নতুন ঠিকানা

১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সীদের ওপর করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তরুণদের জীবনধারা একটি বড়সড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। স্যামসাংয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ভোরে ওঠা এখন নতুন ট্রেন্ড। কারণ, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রায় ৩৯ শতাংশ জেন-জি জানিয়েছে, তারা রাতে বাইরে হইচই করার চেয়ে বাড়িতে থাকা বেশি পছন্দ করে। ২৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী দেরি করে ঘুমানোর পরিবর্তে ফিটনেস সেশন করতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, মাত্র ২০ শতাংশ তরুণ আগের রাতের আউটিংয়ের কারণে সকালে ঘুমাতে পছন্দ করে। প্রায় তিন-চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৭৪ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তাঁরা পরের দিন সকালে সতেজ হয়ে ওয়ার্কআউট করার জন্য রাতে বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

আরও জানা গেছে, ৭৩ শতাংশ তরুণ বলেছেন, গত বছর তাঁদের সামাজিক পরিকল্পনাগুলো স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক ছিল। তাঁদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো কেবল জিমে যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ৩০ শতাংশ তরুণ সপ্তাহে অন্তত একবার জুস বার বা স্মুদি ক্যাফেতে যান। ৩৪ শতাংশ তরুণ নিয়মিতভাবে জিঞ্জার শট, কমবুচা বা মাচার মতো ওয়েলনেস ড্রিংকস পান করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত