Ajker Patrika

চীনের পর ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা ভারতের, বাংলাদেশের বিপদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৩
চীনের পর ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা ভারতের, বাংলাদেশের বিপদ

বাংলাদেশের উজানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণে মহাপরিকল্পনা হচ্ছে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ৭৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ২০৮টি বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে প্রতিবেশী দেশটির বিদ্যুৎ পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ (সিইএ)। আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।

সিইএর এক প্রতিবেদনের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার আওতায় ২০৪৭ সালের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকা থেকে ৭৬ গিগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এই মহাপরিকল্পনায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ১২টি অববাহিকায় ২০৮টি বৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত। এসব প্রকল্প থেকে ৬৪ দশমিক ৯ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এ ছাড়া পাম্পড স্টোরেজ প্ল্যান্ট থেকে আরও ১১ দশমিক ১ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সিইএ।

চীনের তিব্বতে উৎপত্তি হওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ ভারতের মেঘালয় ও আসামের পর কুড়িগ্রাম হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত। ভারতের অংশে, বিশেষ করে চীন সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশে, এই নদ থেকে বিপুল জলবিদ্যুৎ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নদীটির আন্তসীমান্তের ধরন ও চীনসংশ্লিষ্টতার কারণে পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো পরিকল্পনা ভারতের জন্য কৌশলগত উদ্বেগেরও বিষয়।

চলতি বছরের ১৯ জুলাই ইয়ারলুং সাংপো নদীতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। প্রায় ১৬৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য বাঁধটি আকারে চীনেই অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ ‘থ্রি গর্জেস’কে ছাড়িয়ে যাবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হবে তিন গুণের বেশি।

তবে চীন এই বাঁধ ব্যবহার করে উজান থেকে পানির নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ভারত ও বাংলাদেশের আশঙ্কা। এটি ঘটলে ভাটির দেশগুলোর জন্য তা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার লোই ইনস্টিটিউশনের ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিব্বতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর নিয়ন্ত্রণের কারণে কার্যত চীনের হাতে ভারতের অর্থনীতির শ্বাসনালি ধরা রয়েছে, যেটি যেকোনো মুহূর্তে চেপে ধরতে পারে চিরবৈরী দেশটি। চীনের বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে ভারতের দিকে পানির প্রবাহ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এসব কারণে অনেকে বলছেন, চীনকে ঠেকাতে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, সিকিম, মিজোরাম, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও পশ্চিমবঙ্গ এবং কোথাও কোথাও বাংলাদেশের অংশজুড়ে বিস্তৃত। চীনের পর এবার ভারতও যদি ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দেয়, তবে ভাটির বাস্তুতন্ত্র চরম সংকটে পড়বে। বাংলাদেশের ওপর যে এর বড় প্রভাব পড়বে, তা অনেক বিশেষজ্ঞই আশঙ্কা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এরদোয়ানের বাধায় নেতানিয়াহুকে মিসরের সম্মেলনে নিতে পারলেন না ট্রাম্প

ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেলেও ফিলিস্তিনে ফিরছেন না ১৫৪ জন, যেতে হবে ‘অমানবিক’ নির্বাসনে

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

গাজা শান্তি সম্মেলনে ‘সুন্দরী’ মেলোনিকে নিয়ে মাতলেন বিশ্বনেতারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত