Ajker Patrika

বসবাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকা কততম

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, ১৯: ১০
ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

সেরা বসবাসের উপযোগী শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। টানা তিন বছর শীর্ষে থাকার পর তালিকা থেকে ভিয়েনাকে হটিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে শহরটি। এই তালিকা প্রকাশ করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। গত জুনে এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে ভালো এবং বসবাসের অনুপযোগী শহরগুলোর বার্ষিক তালিকা প্রকাশ করেছে ইআইইউ। এই তালিকায় বিশ্বের ১৭৩টি শহরকে বিভিন্ন মানদণ্ডে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও পরিবেশ। বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ খারাপ শহরগুলোর বেশির ভাগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, গুরুতর সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এবং নিরাপত্তাহীনতা। তালিকায় আছ ঢাকাও। জানতে চান কত নম্বরে?

দামেস্ক, সিরিয়া

খারাপ বা বসবাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় প্রথমেই আছে সিরিয়ার দামেস্ক। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন একটি রাজধানী শহর দামেস্ক। এটি একসময় আরব বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। কিন্তু গৃহযুদ্ধ এ শহরকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ খারাপ শহরে পরিণত করেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে সহিংসতা চলছে। বর্তমান দামেস্ক শহরে সবচেয়ে বড় আক্রমণাত্মক হুমকি এসেছে ইসলামিক স্টেটের সক্রিয় স্লিপার সেল ও আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা থেকে। পাশাপাশি সারায়া আনসার আল‑সূন্নাহর সম্প্রদায়বিরোধী ও জিহাদি কার্যক্রম ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে শহরটিতে বসবাসের ক্ষেত্রে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

ত্রিপলি, লিবিয়া

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলি। গৃহযুদ্ধের কারণে এই শহরও আছে বাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায়। যদিও যুদ্ধ ২০২০ সালে শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো সেখানে বিভিন্ন মাত্রার সহিংসতা রয়েই গেছে। নতুন করে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে দেশটিতে কোনো ব্যবস্থাই চলছে না ঠিকমতো। বর্তমানে ত্রিপলিতে ভয়াবহ আতঙ্ক হচ্ছে মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

ঢাকা, বাংলাদেশ

সম্প্রতি একটি নতুন ব্যবস্থায় চলছে বাংলাদেশ। নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা বেশ প্রবল ঢাকা শহরে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বের দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর একটি এবং জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। বাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও পরিবেশ—এসব সূচকে ঢাকা পিছিয়েছে বলে গত বছরের তুলনায় তিন ধাপ ওপরে উঠেছে এর র‍্যাংকিং।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

করাচি, পাকিস্তান

পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র করাচি। সেখানে জাতিগত, রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী সহিংসতা ব্যাপক। বছরের শুরু থেকে পুলিশ বা সিটিডি ক্যাম্প লক্ষ্য করে একাধিক গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে শহরটিতে। এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ১৭ হাজার প্রতারণা, মারামারি, ছিনতাই ইত্যাদি সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৩২ জন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমাধানে ঐকমত্যের অভাব পুরো দেশের স্থিতিশীলতা হুমকিতে ফেলেছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আলজিয়ার্স, আলজেরিয়া

আলজেরিয়ার রাজধানী শহরটিতে সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে। সেই সঙ্গে মৌলিক সেবার অভাব ও উচ্চ বেকারত্ব শহরটিকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে। এখন আলজিয়ার্সের ভয়াবহ আতঙ্ক হচ্ছে, যেকোনো সময়ে সংঘটিত হওয়া সন্ত্রাসী হামলা ও অপহরণ। এ ছাড়া চুরি ও ছিনতাইয়ের মাত্রা বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

লাগোস, নাইজেরিয়া

নাইজেরিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী লাগোস। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শহরটি অপরাধ, সন্ত্রাস, অপহরণ ও সামাজিক অস্থিরতার জন্য কুখ্যাত। এ ছাড়া এখানে আছে সমুদ্রপথে অপরাধের ঝুঁকি। নগরে ছিনতাই ও ছোট সন্ত্রাস এখানে মানুষদের প্রতিদিনের জীবনে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলছে। রাস্তায় বা ব্যক্তিগত জীবনে অপহরণের ভয় আছে সেখানে। পোর্ট-সীমান্ত অপরাধ একপ্রকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

হারারে, জিম্বাবুয়ে

রাজনৈতিক সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, পানি ও স্যানিটেশন সংকট, জোর করে উচ্ছেদ এবং বাল্যবিবাহ হারারেকে বসবাসের অনুপযোগী শহর করে তুলেছে। বর্তমান হারারে শহরে ভয়ংকর আতঙ্ক হচ্ছে সশস্ত্র ডাকাতি ও ছিনতাই। শহরটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ প্রায় প্রতিদিনই এসবের শিকার হচ্ছে। এসব ঘটনা মানসিক চাপ, আর্থিক ক্ষতি ও নাগরিক নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকারি প্রতিক্রিয়াও সীমিত। ফলে মানুষের নিরাপত্তা সংকট চরমে রয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

পোর্ট মোরেসবি, পাপুয়া নিউগিনি

হারারের সঙ্গে সমান অবস্থানে রয়েছে পোর্ট মোরেসবি। পাপুয়া নিউগিনিতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ফলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। সেখানে শিক্ষা ও মৌলিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

কিয়েভ, ইউক্রেন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় কিয়েভ বিশ্বের অন্যতম খারাপ শহরের তালিকায় স্থান পেয়েছে। যুদ্ধের কারণে এটি এখন অনিরাপদ ও বসবাসের অনুপযুক্ত শহর। বর্তমানে কিয়েভে ভয়ংকর আতঙ্ক হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন, বড় মাত্রার রাশিয়ান ড্রোন ও মিসাইল হামলা। এসব হামলার ঘটনা শহরটির নাগরিকদের ওপর শারীরিক, মানসিক ও অবকাঠামোগত বিস্তৃত প্রভাব ফেলছে। এটি কিয়েভের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

কারাকাস, ভেনেজুয়েলা

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস বসবাসের জন্য অত্যন্ত প্রতিকূল শহর। সেখানে রয়েছে অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতি, অপরাধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিদ্যুৎ ও পানির মতো মৌলিক সেবার ঘাটতি। এগুলো জীবনযাত্রার মানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

সূত্র: এম এস এন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউনেসকোর স্বীকৃতি পাওয়া সুস্বাদু খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ইউক্রেনীয় খাবার বোরশ এর মতো অসংখ্য খাদ্য ও রন্ধন ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। ছবি: ফ্রিপিক
ইউক্রেনীয় খাবার বোরশ এর মতো অসংখ্য খাদ্য ও রন্ধন ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। ছবি: ফ্রিপিক

ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের কথা শুনলে প্রথমে মনে ভেসে ওঠে প্রাচীন স্থাপনা বা ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদির কথা। কিন্তু জানেন কি, জাতিসংঘের এই সংস্থা অসংখ্য খাদ্য ও রন্ধন ঐতিহ্যকেও স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতি পাওয়া খাবারগুলো ‘রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট অব দ্য ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটিজ’র তালিকায় জায়গা পেয়েছে। সংস্কৃতি উদ্‌যাপন ও সুরক্ষার একটি অংশ হিসেবে ইউনেসকো উৎসব, সামাজিক আচার, লোকায়ত জ্ঞান, উৎপাদন ও ফসল তোলার পদ্ধতি এবং উদ্ভাবনী রন্ধনশৈলীকে গুরুত্বসহকারে দেখে।

ইউনেসকোর এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, খাবার কেবল পেট ভরানোর উপকরণ নয়; এটি একটি জাতির ইতিহাস, পরিচয়, সামাজিক বন্ধন এবং পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ। বিশ্বজুড়ে এই ঐতিহ্যবাহী রন্ধন সংস্কৃতিগুলো কেবল সংরক্ষণের যোগ্য নয়, বরং উদ্‌যাপনেরও দাবি রাখে।

এস্তোনিয়ার মুলগিমা অঞ্চলের প্রতিদিনের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার মুলগি পুডের। ছবি: ইউনেসকো
এস্তোনিয়ার মুলগিমা অঞ্চলের প্রতিদিনের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার মুলগি পুডের। ছবি: ইউনেসকো

২০২৪ সালের সংযোজন

২০২৪ সালে এস্তোনিয়ার মুলগিমা অঞ্চলের মুলগি পুডের নামে একটি খাবারকে এই তালিকায় স্থান দেওয়া হয়। এই ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্না করা হয় শূকরের ভাজা মাংসের সঙ্গে আলু ও বার্লি সহযোগে। এটি মূলত একটি ভাজা খাবার।

আমরা জানি, কফি ক্লান্তি দূর করে। কিন্তু অ্যারাবিকা কফিকে উদারতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয় ওমান, কাতার, জর্ডান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এ কফি পরিবেশন ও পান করা সেসব দেশে দৈনন্দিন আচার। এটি নির্দিষ্ট সামাজিক প্রথা ও শিষ্টাচারের সঙ্গে জড়িত। এই ধারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনানুষ্ঠানিকভাবে স্থানান্তরিত হয়। এটি আতিথেয়তা ও উদারতার প্রতীক।

২০২২ সালের গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি

বিটরুট বা গাঁজানো বিটরুটের রস ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ইউক্রেনীয় খাবার বোরশ। এই টক ঝোল ঝোল খাবারটি শত শত বছরের পুরোনো। ২০২২ সালে ইউনেসকো এটিকে রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট অব দ্য ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটিজের তালিকায় যুক্ত করে। সামরিক সংঘাতের কারণে বর্তমানে এর রান্না ও উপভোগ সীমিত হয়ে পড়েছে।

পেরুভিয়ান রন্ধনশৈলীকে তুলে ধরে এমন একটি খাবার সেভিচে। ছবি: ইউনেসকো
পেরুভিয়ান রন্ধনশৈলীকে তুলে ধরে এমন একটি খাবার সেভিচে। ছবি: ইউনেসকো

২০২২ সালে ইউনেসকো ফ্রান্সের ব্যাগেত রুটি তৈরির ঐতিহ্যকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই আইকনিক পণ্যের সঙ্গে জড়িত ফরাসি জীবনধারা। ২০২২ সালে তালিকায় যুক্ত হওয়া ‘আল-মানসাফ’ জর্ডানের একটি উৎসবের খাবার। এটি সামাজিক সংহতি ও গভীর পরিচয়ের প্রতীক। কিউব করা ভেড়ার মাংস মসলা দিয়ে সেদ্ধ করা আল-মানসাফ নামের এই খাবার দইয়ের সস দিয়ে পরিবেশন করা হয় ভাতের সঙ্গে।

২০২২ সালে স্বীকৃতি দেওয়া হয় চীনের চা প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে। চা-বাগান ব্যবস্থাপনা, পাতা তোলা, হাতে চা তৈরির প্রক্রিয়া, পান করা এবং ভাগ করে নেওয়ার জ্ঞান ও পদ্ধতির ভিত্তিতে তালিকায় স্থান পায় চীনের চা। হাইতির স্থানীয় কুমড়ো স্কোয়াশ দিয়ে তৈরি হয় জুমু স্যুপ। এই স্যুপ ১৮০৪ সালে দেশটির স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ঐতিহ্যবাহী খাদ্যে পরিণত হয়েছে। এটি ২০২২ সালে তালিকায় যুক্ত করা হয়।

প্রাচীন ও বৈশ্বিক ঐতিহ্য

২০১৭ সালে স্বীকৃতি দেওয়া হয় মালয়েশিয়ার মালায়ির এনসিমা নামের খাবারকে। এটি ভুট্টার আটা দিয়ে তৈরি ঘন লাসসির মতো খাবার। মালয়বাসী এটি মাছের সঙ্গে খায়। নিওপলিটান পিৎজা ইউওলোর শিল্প মূলত ইতালির নেপলসের পিৎজা শেফদের একেবারে নিজস্ব। তাদের বিশেষভাবে ময়দা তৈরির কৌশলের জন্য খাবারটি ২০১৭ সালের ইউনেসকোর তালিকায় যুক্ত হয়। শৈল্পিক প্রদর্শনী এবং কাঠের চুলায় ঘূর্ণন গতির মাধ্যমে এই পিৎজা সেঁকার বিশেষ কৌশল চমকে দেবে আপনাকে।

বিটরুট বা গাঁজানো বিটরুটের রস ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ইউক্রেনীয় বোরশ। ছবি: ইউনেসকো
বিটরুট বা গাঁজানো বিটরুটের রস ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ইউক্রেনীয় বোরশ। ছবি: ইউনেসকো

২০১৬ সালে ইউনেসকো বেলজিয়ান বিয়ারকে অপরিহার্য জীবনযাপনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই পানীয় বেলজিয়ামের দৈনন্দিন জীবন এবং বেশির ভাগ উৎসব অনুষ্ঠান উদ্‌যাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উজবেকিস্তানের একটি বিশেষ খাবার প্লভ। ২০১৬ সালে ইউনেসকো হেরিটেজের তালিকায় জায়গা পাওয়া এই খাবার চাল, মাংস, মসলা ও সবজি দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী উজবেক খাবার, যা আতিথেয়তার প্রতীক হিসেবে পরিবেশন করা হয়।

২০১০ সালে ইউনেসকো পুরো মেক্সিকান রন্ধনপ্রণালিকে মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বা ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটিজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মেক্সিকান খাবারগুলো ভুট্টা, মরিচ, টমেটো, অ্যাভোকাডো ও বিভিন্ন মসলার ব্যবহার এবং ঐতিহ্যবাহী রান্না পদ্ধতির এক মিশ্রণ। অ্যাজটেক, মায়া এবং স্প্যানিশ রন্ধন ঐতিহ্যের সুস্বাদু মিশ্রণ মেক্সিকান খাবার। মেক্সিকোর রন্ধনপ্রণালি কৃষি পদ্ধতি, আচারিক অনুশীলন, পূর্বপুরুষদের রান্নার দক্ষতা এবং সামাজিক প্রথাসংবলিত একটি সংস্কৃতি মডেল হিসেবে স্বীকৃত।

তালিকায় যুক্ত হওয়া উল্লেখযোগ্য আরও কিছু খাবার

তালিকায় অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য অন্য রন্ধন ঐতিহ্যগুলো হলো—

২০২১: ইতালির ট্রাফল হান্টিং, সেনেগালের চিবু জেন।

২০২০: সিঙ্গাপুরের হকার ফুড সেন্টার সংস্কৃতি, উত্তর আফ্রিকার কুসকুস রন্ধনপ্রণালি, মাল্টার ফটিরা রুটি এবং প্যারাগুয়ের ঐতিহ্যবাহী পানীয় তেরেরে।

২০১৯: মঙ্গোলিয়ায় এরাগ তৈরির ঐতিহ্যবাহী কৌশল।

২০১৩: জাপানের ওয়াশোকু, ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস, জর্জিয়ার কুয়েভরি ওয়াইন তৈরি এবং কোরিয়ান উপদ্বীপের কিমজাং।

২০১১: তুরস্কের আনুষ্ঠানিক কেশ কেক ঐতিহ্য।

সূত্র: ইউনেসকো ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিয়ের খরচ কমানোর ৮ উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে। ছবি: ফ্রিপিক
কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে। ছবি: ফ্রিপিক

বিয়ে জীবনের অন্যতম সুন্দর মুহূর্ত হলেও এর ব্যয় অনেক সময় দম্পতিদের জন্য বড় চাপ হয়ে দাঁড়ায়। ভেন্যু, সাজসজ্জা, খাবার, বিনোদন, পোশাক—সব মিলিয়ে বাজেট বেশ বেড়ে যায়। অবশ্য বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাওয়াকে খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবে দেখা হয় আমাদের দেশে। কিন্তু কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে।

অফ সিজন বেছে নিন

সাধারণত ঈদের মতো বড় ছুটি এবং শীতকালে বিয়ের চাপ বেশি থাকে। এই মৌসুমে ভেন্যু, ক্যাটারিং, সাজসজ্জা, মেকআপ, এমনকি ফটোগ্রাফির চাহিদাও বেড়ে যায়। চাহিদা বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবে খরচও বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে পুরো বাজেটে। তাই পরিকল্পনা করার সময় অফ সিজন বেছে নেওয়া ভালো কৌশল। এ সময়ে ভেন্যু বুকিং থেকে শুরু করে খাবার, সাজসজ্জা, মেকআপ, গাড়িভাড়া ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছাড় পাওয়া যায়। অনেকে তখন বিশেষ অফার ও বান্ডেল প্যাকেজও দেয়।

একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন

সম্ভব হলে বিয়ে ও রিসেপশন একই ভেন্যুতে আয়োজন করুন। তা না হলে অন্তত হাঁটা দূরত্বের মধ্যে রাখুন। এতে অতিথিদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হয় না। ফলে গাড়িভাড়া, জ্বালানি, চালক—এসব খরচ কমে যায়। একই সঙ্গে ক্যাটারিং, সাজসজ্জা, ফটোগ্রাফি বা সাউন্ড-লাইট টিমকে বারবার সরঞ্জাম সরাতে হয় না বলে সময় ও শ্রম —দুটোই সাশ্রয় হয়।

একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক
একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক

অতিথির সংখ্যা কমিয়ে আনুন

অতিথির সংখ্যা যত বাড়ে, বাজেটও তত বেড়ে যায়। কারণ, বেশির ভাগ ক্যাটারিং মাথাপিছু হিসেবে খাবারের খরচ নির্ধারণ করে। এর মধ্যে খাবার, পানীয়, সার্ভিস স্টাফসহ নানান খরচ যুক্ত থাকে। তাই আশপাশের পরিচিত সবাইকে নিমন্ত্রণ না করে চেষ্টা করুন পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করার।

ফুল পুনরায় ব্যবহার করুন

অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। বিয়ের মঞ্চ বা ফুলের আর্চে ব্যবহার করা ফুলগুলোকে পরে রিসেপশনের ফটো কর্নারে সাজানো যেতে পারে। এর ফলে অতিথিরা আরও সুন্দর ছবি তুলতে পারবে। এ ছাড়া চারপাশের পথে রাখা ফুলগুলোও পরে ওয়েলকাম টেবিলে ব্যবহার করা যায়। এতে শুধু অর্থ সাশ্রয় হয় না, ফুলগুলোকে আরও দীর্ঘ সময় ধরে প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করা যায়।

বিয়ের অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক
বিয়ের অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক

নিজে কিছু বানিয়ে নিন

যদি হাতের কাজ করার দক্ষতা থাকে, তাহলে বিয়ের অনেক জিনিস নিজেই তৈরি করা সম্ভব। টেবিলের সেন্টারপিস, নিমন্ত্রণপত্র বা অতিথিদের নামের কার্ড নিজে বানালে খরচ অনেকটা কমানো যায়। এতে শুধু অর্থই সাশ্রয় হয় না, আয়োজনটি আরও বিশেষ হয়ে ওঠে। বন্ধু বা পরিবারের সহায়তাও নিতে পারেন। এতে কাজের পরিমাণ ও চাপ কমে যায়। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের এ কাজে যুক্ত করুন। তাতে তারাও আনন্দে থাকবে। ছোট ছোট এই উদ্যোগগুলো মিলিয়ে পুরো বিয়ের বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

স্টেশনারি ডিজাইন অনলাইনে করুন

অনেক ফ্রি ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি নিজে দৃষ্টিনন্দন নিমন্ত্রণপত্র, মেনু বা অন্যান্য সজ্জার জিনিস তৈরি করতে পারবেন। এতে প্রফেশনাল ডিজাইনার ভাড়া করার প্রয়োজন পড়ে না বলে খরচ অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়া ডিজাইন সম্পূর্ণ নিজের পছন্দ অনুযায়ী করা যায়। ক্যানভা বা অ্যাডোবি এক্সপ্রেসের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো শুরুতে ফ্রি অপশন দেয়, যেখানে বিভিন্ন টেমপ্লেট ব্যবহার করে খুব সহজে আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি করা সম্ভব।

অপ্রয়োজনীয় ডেকর বাদ দিন

যদি অনুষ্ঠানটি প্রকৃতির মাঝে বা কোনো সুন্দর আউটডোর ভেন্যুতে হয়, তবে অতিরিক্ত সাজসজ্জার প্রয়োজন অনেক কমে যায়। চারপাশের সবুজ, ফুল-পাতা, নদী, সমুদ্র বা পাহাড়ের দৃশ্য নিজেই সজ্জায় মনোরম সৌন্দর্য এনে দেয়। এমন পরিবেশে ছোট ছোট ডিটেইলস; যেমন লাইটিং বা কয়েকটি ফুলের ব্যবস্থাপনা দিয়েই পুরো ভেন্যুতে রোমান্টিক ও দৃষ্টিনন্দন আবহ তৈরি করা যায়। এতে খরচও কমে এবং অতিথিরা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি করুন

ডিজে, ফটোগ্রাফার বা ক্যাটারারের মতো পেশাদার সেবার ক্ষেত্রে সব সময় প্রয়োজন অনুযায়ী প্যাকেজ বেছে নেওয়া জরুরি। অতিরিক্ত সেবা বা সময় নেওয়ার দরকার না হলে প্যাকেজ কমিয়ে খরচ অনেকটা কমানো সম্ভব। সরাসরি সরবরাহকারীর সঙ্গে আলোচনা করলে অতিরিক্ত চার্জ কমানো বা কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, যা বাজেট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ করুন, কিন্তু অপচয় নয়। অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা দিন। অনুষ্ঠানের অনেক ত্রুটি চোখে পড়বে না।

সূত্র: টিডি স্টোরিজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্রমণের ভিন্ন ঠিকানা ক্রিসমাস মেলা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ফিনল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। ডিসেম্বরে এখানে বসে এক দারুণ মেলা। ছবি: অ্যাডভেঞ্চভার ওয়ার্ল্ড
ফিনল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। ডিসেম্বরে এখানে বসে এক দারুণ মেলা। ছবি: অ্যাডভেঞ্চভার ওয়ার্ল্ড

ইউরোপে ডিসেম্বরের ভ্রমণ মানে বড়দিনের আমেজ। আলোকিত রাজধানী থেকে শুরু করে বরফে ঢাকা গ্রাম পর্যন্ত পুরো ইউরোপ যেন এক স্বপ্নিল ক্রিসমাস ওয়ান্ডারল্যান্ডে পরিণত হয় ডিসেম্বরের এ সময়। স্থানীয় কারুশিল্প, শীতকালীন মুখরোচক খাবার এবং রূপকথার পরিবেশ—সব মিলিয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইউরোপ সেজে ওঠে ক্রিসমাসের আনন্দে। এ সময় ভ্রমণের বাড়তি আকর্ষণে পরিণত হয় ক্রিসমাস মেলাগুলো। স্থায়ী পুরোনো বাজার কিংবা বিভিন্ন পার্কে বসা এই মেলাগুলো উৎসবের নিজস্ব মেজাজ ফুটিয়ে তোলে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসা এমন আটটি মেলার কথা।

বরফের জাদু ও নকশায় মোড়ানো জুরিখ

জুরিখ শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বড় ইনডোর ক্রিসমাস মেলা, পোলারজাউবার। ছবি: লাইফ জার্নি ফর টু
জুরিখ শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বড় ইনডোর ক্রিসমাস মেলা, পোলারজাউবার। ছবি: লাইফ জার্নি ফর টু

সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ক্রিসমাস যেন এক অভিজ্ঞতা অর্জনের খনি। এখানে আলপাইন ঐতিহ্য, আধুনিক শিল্প স্থাপনা এবং চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা একত্র হয়। শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ইনডোর ক্রিসমাস মেলা—পোলারজাউবার। এখানে সবকিছুর ওপরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে লিন্ডর ট্রাফলস দিয়ে সজ্জিত বিশাল আকারের ক্রিসমাস ট্রি। এই গাছ ঘিরে থাকে একটি চমৎকারভাবে তৈরি মিনি-উইন্টার ওয়ার্ল্ড। এ বছর এখানে প্রায় ১২০টি ব্র্যান্ড ও ডিজাইনার স্টল বসবে। ২০ নভেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্টলগুলো সেখানে খোলা থাকবে। এখানে উৎসবমুখর স্টেশন হল জুড়ে হাঁটা এবং ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস খাবার উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা। তিব্বতীয় ডাম্পলিং বা থাই খাবার থেকে শুরু করে হাতে তৈরি নুডলসসহ এমপানাদাস পর্যন্ত সবই পাওয়া যায় এখানে। যাঁরা উপহার খুঁজছেন, তাঁরা হাতে তৈরি সুগন্ধি মোমবাতি, স্থানীয় নকশার গয়না, সিরামিকসহ অনেক কিছুর সন্ধান এখানে পেয়ে যাবেন।

লা ভিলেতে জুরিখের আগমনী

প্যারিসের তৃতীয় বৃহত্তম পার্ক লা ভিলেতের ক্রিসমাস মেলায় প্রথমবারের মতো এসেছে জুরিখের ক্রিসমাস মেলা। সেখানে সুইস সৃজনশীলতার পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে দুটি আয়োজন রাখা হয়েছে বিশেষভাবে। একটি হলো, জুরিখ ফন্ডু শ্যালেট, অন্যটি আতেলিয়ার জুরিখ। জুরিখ ফন্ডু শ্যালেট হলো জুরিখের একটি শীতকালীন রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে; যেখানে সুস্বাদু ফন্ডু ও আরামদায়ক পরিবেশে সুইস আতিথেয়তার অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। আতেলিয়ার জুরিখ মূলত একটি বার। এখানে জুরিখের সেরা ১০টি ব্র্যান্ডের জিনিস পাওয়া যায়, যা ক্রিসমাসের সেরা উপহার হিসেবে বিবেচিত। এই আয়োজন চলবে ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ডের থিম পার্ক

লন্ডনের হাইড পার্কের ‘উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ড’ মেলা একটি উল্লেখযোগ্য জায়গা। এই মেলা লন্ডন শহরকে শীতকালীন থিম পার্কে পরিণত করে। এখানে রয়েছে বিশাল আইস স্কেটিং রিঙ্ক, সার্কাস, নাগরদোলা, রোলারকোস্টার এবং ম্যাজিক্যাল আইস কিংডম। কেবিনের স্টলগুলোতে গরম চকলেট এবং হাতে তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি হয়। এটি একটি জমজমাট উৎসবের অভিজ্ঞতা দেয়। ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন।

ভিয়েনায় মার্কেটের সমাহার

ভিয়েনায় ক্রিসমাস মার্কেটের প্রাচুর্য চোখে পড়ার মতো। টাউন হল স্কয়ার জুড়ে বসা রাথাউসপ্লাজ নামের এই মেলায় রয়েছে ১ হাজার ৮৫০ বর্গমিটারের একটি বরফের রিঙ্ক। সেখানে ছোট-বড় সবাই স্লাইড করতে পারে। এ ছাড়া মারিয়া-তেরেসিয়েন-প্লাজে কার্লিং খেলায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে দর্শনার্থীদের। আর যাঁরা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট এক স্বর্গ। গত ১৪ নভেম্বর শুরু হওয়া এই আয়োজন চলবে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

যারা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট যেন এক স্বর্গ। ছবি: ভিজিট ভিয়েনা
যারা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট যেন এক স্বর্গ। ছবি: ভিজিট ভিয়েনা

তাল্লিনে মধ্যযুগীয় পরিবেশ

উত্তর ইউরোপের বাল্টিক সাগরের পাড়ে যে দেশ, তার নাম এস্তোনিয়া। এর রাজধানী তাল্লিনে পনেরো শতকের টাউন হলের পাশে বসে একটি মেলা। এটি এর মধ্যযুগীয় পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। সেখানে প্রায় ৫০টি স্টলে উলে বোনা পোশাক থেকে শুরু করে জিঞ্জারব্রেড এবং বেইলিস স্বাদযুক্ত বিস্কুট ডোর মতো বিশেষ খাবার বিক্রি হয়। মার্কেটের কেন্দ্রে থাকে ১৬ মিটার উঁচু ক্রিসমাস ট্রি। ধারণা করা হয়, এটি ইউরোপের প্রথম ক্রিসমাস ট্রিগুলোর মধ্যে অন্যতম। আয়োজনটি চলবে ২১ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

কোপেনহেগেনের টিভোলি পার্কের রূপকথা

কোপেনহেগেনের কেন্দ্রে অবস্থিত ১৬০ বছরের পুরোনো টিভোলি পার্ক। ক্রিসমাসে এই পার্কের আয়োজন দর্শকদের রূপকথার জগতে নিয়ে যায়। এখানকার প্রধান আকর্ষণ রাইড, আইস রিঙ্ক, বিনোদনমূলক শো। এই মেলায় আছে ৬০টি স্টল। এই মেলাকে কেন্দ্র করে পুরো ডেনিশ রাজধানী কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোকিত থাকে। এই উৎসব আমেজ শুরু হয়েছে ১৪ নভেম্বর থেকে। এটি চলবে আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।

লিসবার্গ অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ঝলক

গোটেবর্গের লিসবার্গ অ্যামিউজমেন্ট পার্ক উত্তর ইউরোপের বৃহত্তম পার্ক। পাঁচ মিলিয়ন লন্ঠন, ৮০টি কেবিন স্টল এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ মিলিয়ে এক জাঁকালো ক্রিসমাস মেলায় পরিণত হয় এটি। এর মূল আকর্ষণ হলো আইস বার, রোলারকোস্টার, বিভিন্ন শো এবং গলগ বা সুইডিশ গরমমসলাযুক্ত ওয়াইন চেখে দেখার সুযোগ। এ বছর এই আয়োজন শুরু হয়েছে ১৬ নভেম্বর থেকে। চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সান্তা ক্লজ ভিলেজ

চলুন যাই ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে। ফিনল্যান্ডের এই জায়গায় আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। তাই এটি সারা বিশ্বে অনন্য। এখানে পর্যটকেরা দেশটির জাদুকরি ক্রিসমাস অভিজ্ঞতা নিতে যায়। এখানে গেলে পাওয়া যাবে রূপকথার অভিজ্ঞতা। এখানে ফাদার ক্রিসমাসের সঙ্গে দেখা করা, স্লেজ রাইড করা এবং এল্ফদের কর্মশালা ঘুরে দেখার মতো অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। স্থানীয় হস্তশিল্প ও ল্যাপল্যান্ডের বিশেষত্ব এখানে পাওয়া যায়, যার প্রেক্ষাপটে থাকে বরফ এবং আরোরা।

সূত্র: ইএনভোলস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যে উপায়ে পাকা কলা সতেজ থাকবে মাসজুড়ে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। ছবি: ফ্রিপিক
সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। ছবি: ফ্রিপিক

পাকা কলা দ্রুত নরম হয়ে যায় এবং এর খোসা কালো হতে শুরু করে। এই দৃশ্য সবার পরিচিত। এমন কলা বেশির ভাগ মানুষ খেতে চান না। শিশুরাও মুখ ফিরিয়ে নেয়। তাহলে উপায় কী? একটা একটা করে কলা কিনে এনে একজন একজন করে খাওয়া? এটা যে সম্ভব নয়, সেটা বোঝা যাচ্ছে সহজে। ফলে যা সম্ভব তাই করুন। অর্থাৎ জেনে রাখুন, পাকা কলা সংরক্ষণের কিছু সহজ ও ঘরোয়া কৌশল। এভাবে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত কলা ভালো রাখা যাবে। সে সময় এগুলো থাকবে সতেজ ও শক্ত।

সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতটুকুই! হ্যাঁ, এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। খাদ্য অপচয় রোধ করা যেখানে আজকের দিনের একটি বড় উদ্বেগ, সেখানে সাধারণ লবণ ব্যবহার করে কীভাবে কলা সংরক্ষণের সময় বাড়ানো, আসলেই একটি সাশ্রয়ী উপায়।

কলা কিনে এভাবে ঝুলিয়ে রাখুন। ছবি: ফ্রিপিক
কলা কিনে এভাবে ঝুলিয়ে রাখুন। ছবি: ফ্রিপিক

লবণ-পানির সহজ প্রক্রিয়া

কলাগুলো সংরক্ষণ করার আগে এই সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

লবণ মিশ্রণ তৈরি: এক টেবিল চামচ লবণ পরিষ্কার পানির সঙ্গে গুলিয়ে নিন।

ধোয়ার প্রক্রিয়া: কলার পুরো ঝুঁকি বা ফানা লবণ মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে দিন। খোসা আলতো করে ধুয়ে নিন এবং বিশেষ করে কলার ডাঁটির অংশটি ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

সম্পূর্ণ শুকানো: কলাগুলো পানি থেকে তুলে একটি তোয়ালে দিয়ে মুছে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে কলায় ছাঁটা বা ফাঙ্গাস দেখা দিতে পারে, তাই শুকানো খুব জরুরি।

পুরোপুরি শুকানোর পর কলা ঠান্ডা ও বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখুন।

কেন কাজ করে এই কৌশল

লবণ-পানি দিয়ে ধোয়ার এই পদ্ধতির কার্যকারিতা তিনটি মূল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।

জীবাণু ও ছাঁটা দমন: কলার খোসায় বিভিন্ন অণুজীব ও ফাঙ্গাল স্পোর থাকে, যা পচনের প্রক্রিয়া শুরু করে। লবণের জীবাণুনাশক গুণ থাকার কারণে এটি সেই পচন সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে দূর করতে সাহায্য করে।

কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। ছবি: ফ্রিপিক
কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। ছবি: ফ্রিপিক

এনজাইম এবং ইথিলিন নিয়ন্ত্রণ: লবণ সেই এনজাইমগুলোর গতি কমিয়ে দেয়, যা কলাকে দ্রুত পাকাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটি ইথিলিন গ্যাস নিঃসরণ ধীর করে দেয়। ইথিলিন গ্যাস ফলকে দ্রুত পরিপক্ব করে তোলে।

আর্দ্রতা বজায় রাখা: লবণ-পানি দিয়ে কলার ডাঁটির অংশ ধোয়ার ফলে খোসা তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। এতে খোসায় দ্রুত বলিরেখা পড়া বা বাদামি হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ হয়।

অতিরিক্ত সংরক্ষণের টিপস

লবণ-পানির কৌশলের সঙ্গে আরও কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে কলার সতেজতা আরও বাড়াতে পারেন।

ডাঁটি মোড়ানো: কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। এতে ইথিলিন গ্যাস ফলে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হয় এবং পাকার প্রক্রিয়া ধীর হয়।

ঝুলিয়ে রাখা: কলা টেবিলে বা বাটিতে রাখার চেয়ে পুরো ফানা ঝুলিয়ে রাখুন। এতে ওজনের কারণে নিচের কলাগুলো থেঁতলে যাবে না। ঝুলিয়ে রাখলে বাতাস চলাচল করতে পারে এবং কলা তার আকৃতি ধরে রাখতে পারে।

অন্যান্য ফল থেকে দূরে রাখুন: কলাকে আপেল, অ্যাভোকাডো এবং টমেটোর মতো ফল ও সবজি থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ, এই ফলগুলো প্রচুর পরিমাণে ইথিলিন গ্যাস নিঃসরণ করে, যা কলাকে খুব দ্রুত অতিরিক্ত পাকিয়ে ফেলে।

সূত্র: ইভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত