Ajker Patrika

বসবাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকা কততম

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, ১৯: ১০
ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

সেরা বসবাসের উপযোগী শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। টানা তিন বছর শীর্ষে থাকার পর তালিকা থেকে ভিয়েনাকে হটিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে শহরটি। এই তালিকা প্রকাশ করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। গত জুনে এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে ভালো এবং বসবাসের অনুপযোগী শহরগুলোর বার্ষিক তালিকা প্রকাশ করেছে ইআইইউ। এই তালিকায় বিশ্বের ১৭৩টি শহরকে বিভিন্ন মানদণ্ডে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও পরিবেশ। বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ খারাপ শহরগুলোর বেশির ভাগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, গুরুতর সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এবং নিরাপত্তাহীনতা। তালিকায় আছ ঢাকাও। জানতে চান কত নম্বরে?

দামেস্ক, সিরিয়া

খারাপ বা বসবাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় প্রথমেই আছে সিরিয়ার দামেস্ক। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন একটি রাজধানী শহর দামেস্ক। এটি একসময় আরব বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। কিন্তু গৃহযুদ্ধ এ শহরকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ খারাপ শহরে পরিণত করেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে সহিংসতা চলছে। বর্তমান দামেস্ক শহরে সবচেয়ে বড় আক্রমণাত্মক হুমকি এসেছে ইসলামিক স্টেটের সক্রিয় স্লিপার সেল ও আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা থেকে। পাশাপাশি সারায়া আনসার আল‑সূন্নাহর সম্প্রদায়বিরোধী ও জিহাদি কার্যক্রম ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে শহরটিতে বসবাসের ক্ষেত্রে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

ত্রিপলি, লিবিয়া

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলি। গৃহযুদ্ধের কারণে এই শহরও আছে বাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায়। যদিও যুদ্ধ ২০২০ সালে শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো সেখানে বিভিন্ন মাত্রার সহিংসতা রয়েই গেছে। নতুন করে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে দেশটিতে কোনো ব্যবস্থাই চলছে না ঠিকমতো। বর্তমানে ত্রিপলিতে ভয়াবহ আতঙ্ক হচ্ছে মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

ঢাকা, বাংলাদেশ

সম্প্রতি একটি নতুন ব্যবস্থায় চলছে বাংলাদেশ। নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা বেশ প্রবল ঢাকা শহরে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বের দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর একটি এবং জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। বাসের অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও পরিবেশ—এসব সূচকে ঢাকা পিছিয়েছে বলে গত বছরের তুলনায় তিন ধাপ ওপরে উঠেছে এর র‍্যাংকিং।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

করাচি, পাকিস্তান

পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র করাচি। সেখানে জাতিগত, রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী সহিংসতা ব্যাপক। বছরের শুরু থেকে পুলিশ বা সিটিডি ক্যাম্প লক্ষ্য করে একাধিক গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে শহরটিতে। এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ১৭ হাজার প্রতারণা, মারামারি, ছিনতাই ইত্যাদি সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৩২ জন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমাধানে ঐকমত্যের অভাব পুরো দেশের স্থিতিশীলতা হুমকিতে ফেলেছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আলজিয়ার্স, আলজেরিয়া

আলজেরিয়ার রাজধানী শহরটিতে সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে। সেই সঙ্গে মৌলিক সেবার অভাব ও উচ্চ বেকারত্ব শহরটিকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে। এখন আলজিয়ার্সের ভয়াবহ আতঙ্ক হচ্ছে, যেকোনো সময়ে সংঘটিত হওয়া সন্ত্রাসী হামলা ও অপহরণ। এ ছাড়া চুরি ও ছিনতাইয়ের মাত্রা বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

লাগোস, নাইজেরিয়া

নাইজেরিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী লাগোস। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শহরটি অপরাধ, সন্ত্রাস, অপহরণ ও সামাজিক অস্থিরতার জন্য কুখ্যাত। এ ছাড়া এখানে আছে সমুদ্রপথে অপরাধের ঝুঁকি। নগরে ছিনতাই ও ছোট সন্ত্রাস এখানে মানুষদের প্রতিদিনের জীবনে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলছে। রাস্তায় বা ব্যক্তিগত জীবনে অপহরণের ভয় আছে সেখানে। পোর্ট-সীমান্ত অপরাধ একপ্রকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

হারারে, জিম্বাবুয়ে

রাজনৈতিক সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, পানি ও স্যানিটেশন সংকট, জোর করে উচ্ছেদ এবং বাল্যবিবাহ হারারেকে বসবাসের অনুপযোগী শহর করে তুলেছে। বর্তমান হারারে শহরে ভয়ংকর আতঙ্ক হচ্ছে সশস্ত্র ডাকাতি ও ছিনতাই। শহরটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ প্রায় প্রতিদিনই এসবের শিকার হচ্ছে। এসব ঘটনা মানসিক চাপ, আর্থিক ক্ষতি ও নাগরিক নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকারি প্রতিক্রিয়াও সীমিত। ফলে মানুষের নিরাপত্তা সংকট চরমে রয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

পোর্ট মোরেসবি, পাপুয়া নিউগিনি

হারারের সঙ্গে সমান অবস্থানে রয়েছে পোর্ট মোরেসবি। পাপুয়া নিউগিনিতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ফলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। সেখানে শিক্ষা ও মৌলিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

কিয়েভ, ইউক্রেন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকায় কিয়েভ বিশ্বের অন্যতম খারাপ শহরের তালিকায় স্থান পেয়েছে। যুদ্ধের কারণে এটি এখন অনিরাপদ ও বসবাসের অনুপযুক্ত শহর। বর্তমানে কিয়েভে ভয়ংকর আতঙ্ক হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন, বড় মাত্রার রাশিয়ান ড্রোন ও মিসাইল হামলা। এসব হামলার ঘটনা শহরটির নাগরিকদের ওপর শারীরিক, মানসিক ও অবকাঠামোগত বিস্তৃত প্রভাব ফেলছে। এটি কিয়েভের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

কারাকাস, ভেনেজুয়েলা

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস বসবাসের জন্য অত্যন্ত প্রতিকূল শহর। সেখানে রয়েছে অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতি, অপরাধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিদ্যুৎ ও পানির মতো মৌলিক সেবার ঘাটতি। এগুলো জীবনযাত্রার মানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

সূত্র: এম এস এন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইলট ইচ্ছা করে বিধ্বস্ত করান এয়ার ইন্ডিয়ার সেই ড্রিমলাইনার: বিশেষজ্ঞ

তবে কি ধরে নেব, মবের পেছনে সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে: তারেক রহমান

৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি: পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা অবরোধ বৈষম্যবিরোধীদের

ইসরায়েল রাষ্ট্রের পতনের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করেছিলেন আইনস্টাইন

মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড: ‘আমি জড়িত না, ফাঁইসা গেছি’— অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা রবিনের দাবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত