সানজিদা সামরিন, ঢাকা
শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ কেতকী, মানে কেটি মিত্রকে নিয়ে বলেছেন, ‘জীবনের আদ্যলীলায় কেটির কালো চোখের ভাবটি ছিল স্নিগ্ধ, প্রথম বয়সে ঠোঁট দুটিতে সরল মাধুর্য ছিল।’ আর পরবর্তী বয়সে? সেই সরল ঠোঁটকে খানিকটা অতিরঞ্জিত করতেই বাড়তি প্রসাধন ব্যবহার করত সে। কোমর ছাড়িয়ে যাওয়া চুলে সে চালিয়ে দিয়েছিল কাঁচি। অষ্টাদশী কেতকীর সঙ্গে ২৫ বছর বয়সী কেটির মিল না পাওয়ার যে যুক্তি অমিত লাবণ্যকে দিয়েছিল, সেটাকেই লাবণ্য খণ্ডন করে বলছিল, অমিতের অনাদরেই সেদিনকার সরল কেতকী মিত্র পরিণত হয়েছে সাত বছর পরের মেকি প্রসাধনের নিচে চাপা পড়া প্রদর্শনবাদী কেটি মিট্রায়।
আবার ‘মানভঞ্জন’ গল্পে গিরিবালাকেই দেখুন না। তাঁর মধ্যেও কি সরল মাধুর্য ছিল না? এক প্যাঁচে মাখন-মসৃণ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে, যত্নে সুগন্ধি মেখে রোজ তিনি যাঁর অপেক্ষায় থাকতেন, সেই স্বামী অর্থাৎ গোপীনাথের সঙ্গেও তাঁর প্রেম ফিকে হয়ে যায় বিয়ের অল্পদিনের মাঝে। শুধু কি তাই, অমিত যেমন লাবণ্যর প্রেমে মনে মনে ডুব দিয়েছিল, তেমনি একসময় গোপীনাথের মনে গিরিবালাকে ছাড়িয়ে স্থান করে নিতে থাকে নাট্য অভিনেত্রী লবঙ্গ। গিরিবালার তারুণ্যদীপ্ত রূপ, লাবণ্য আর গুণ—সবই বিফলে যায় গোপীনাথের মন গৃহমুখী করতে।
একসময় গোপীনাথ লবঙ্গের সঙ্গে নতুন করে ঘর বাঁধবে বলে গিরিবালাকে ছেড়ে চলে যায়। এই হতাশায় গিরিবালাও বেরিয়ে আসে পতিগৃহ ছেড়ে। নতুন করে বাঁচবে বলেই গিরিবালা নিজেকে পরিণত করে আরও সাহসী, উদ্যমী আর দুর্বার এক নারীশক্তিতে। তারপর? যেসবের মোহে গোপীনাথ একসময় ঘর ছেড়েছিল, সেই রূপেই নিজেকে রূপান্তর করতে থাকে সরল মেয়ে গিরিবালা। কিন্তু সেই সাহসী, প্রতিবাদী রূপও কি আদৌ গোপীনাথ গ্রহণ করতে পেরেছিল? সাধারণ ঢঙে শাড়ি পরা ঘরকুনো মেয়েটি যখন নাট্যমঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে, তখন গোপীনাথ হয়তো মনে মনে একবার বলেছিলেন, ‘কী হারালাম, কাকে হারিয়ে ফেললাম!’
রবীন্দ্রসাহিত্য থেকে বেরিয়ে প্রসঙ্গত বলতে হচ্ছে প্রিন্সেস ডায়ানার কথাও। ১৯৯৪ সালে ডায়ানার সাবেক স্বামী প্রিন্স চার্লস টিভিতে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি ডায়ানার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং অবিশ্বাসের কথা খুলে বলেন। চার্লস বলেন, শুরুতে সম্পর্কে বিশ্বাস ও আস্থা থাকলেও পরে তিনি ক্যামেলিয়ার প্রেমে পড়েন। ১৯৯৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। যেদিন এই সাক্ষাৎকার টিভিতে প্রচার করা হয়, সেদিন বিখ্যাত রিভেঞ্জ ড্রেস পরে লন্ডনের সারপেন্টাইন গ্যালারিতে উপস্থিত হন ডায়ানা। বেশির ভাগ মানুষ হয়তো সঙ্গীর প্রতারণার কথা শুনে কুঁকড়ে যেতে পারেন। কিন্তু ডায়ানা দমে যাননি। ইভেন্টটিতে পরার জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার ক্রিস্টিনা স্ট্যাম্বোলিয়ানের রিভেঞ্জ ড্রেস। পোশাকটি ছিল ছোট ও কালো রঙের। কাঁধের বাইরের দিকে ছিল ককটেল খাপ। তাঁর বেশভূষাই যেন চার্লসকে বলে দিচ্ছিল, ‘দেখো, কী হারালে!’
পোশাক প্রতিবাদের অন্যতম মাধ্য়ম, তা যে এই সময়ে এসে মানুষ জেনেছে, ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। শুধু যে ট্রেন্ড অনুসরণ করেই মানুষ একেক ঘরানার পোশাক গায়ে জড়ান, এমনটা না-ও হতে পারে। কর্মোপযোগী পোশাক তো রয়েছেই। কিন্তু কেউ ভেতরের আমিকে বের করে আনতে, আবার কেউ অন্য়ের মনমতো হয়ে উঠতেও বেশভূষা পাল্টে নেন। যেন পুরোনো খোলস ছেড়ে নতুন আদলে ফিরে আসা। আবার পোশাকই হয়ে উঠতে পারে ‘না’ বলার মাধ্য়ম, হতে পারে নতুন করে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। পরিধেয় পোশাকটি কখনো হতে পারে ‘ফিরব না’ বলার ভাষাও। কেতকী, গিরিবালাদের বেলায় তো এমনটাই ঘটেছিল।
শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ কেতকী, মানে কেটি মিত্রকে নিয়ে বলেছেন, ‘জীবনের আদ্যলীলায় কেটির কালো চোখের ভাবটি ছিল স্নিগ্ধ, প্রথম বয়সে ঠোঁট দুটিতে সরল মাধুর্য ছিল।’ আর পরবর্তী বয়সে? সেই সরল ঠোঁটকে খানিকটা অতিরঞ্জিত করতেই বাড়তি প্রসাধন ব্যবহার করত সে। কোমর ছাড়িয়ে যাওয়া চুলে সে চালিয়ে দিয়েছিল কাঁচি। অষ্টাদশী কেতকীর সঙ্গে ২৫ বছর বয়সী কেটির মিল না পাওয়ার যে যুক্তি অমিত লাবণ্যকে দিয়েছিল, সেটাকেই লাবণ্য খণ্ডন করে বলছিল, অমিতের অনাদরেই সেদিনকার সরল কেতকী মিত্র পরিণত হয়েছে সাত বছর পরের মেকি প্রসাধনের নিচে চাপা পড়া প্রদর্শনবাদী কেটি মিট্রায়।
আবার ‘মানভঞ্জন’ গল্পে গিরিবালাকেই দেখুন না। তাঁর মধ্যেও কি সরল মাধুর্য ছিল না? এক প্যাঁচে মাখন-মসৃণ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে, যত্নে সুগন্ধি মেখে রোজ তিনি যাঁর অপেক্ষায় থাকতেন, সেই স্বামী অর্থাৎ গোপীনাথের সঙ্গেও তাঁর প্রেম ফিকে হয়ে যায় বিয়ের অল্পদিনের মাঝে। শুধু কি তাই, অমিত যেমন লাবণ্যর প্রেমে মনে মনে ডুব দিয়েছিল, তেমনি একসময় গোপীনাথের মনে গিরিবালাকে ছাড়িয়ে স্থান করে নিতে থাকে নাট্য অভিনেত্রী লবঙ্গ। গিরিবালার তারুণ্যদীপ্ত রূপ, লাবণ্য আর গুণ—সবই বিফলে যায় গোপীনাথের মন গৃহমুখী করতে।
একসময় গোপীনাথ লবঙ্গের সঙ্গে নতুন করে ঘর বাঁধবে বলে গিরিবালাকে ছেড়ে চলে যায়। এই হতাশায় গিরিবালাও বেরিয়ে আসে পতিগৃহ ছেড়ে। নতুন করে বাঁচবে বলেই গিরিবালা নিজেকে পরিণত করে আরও সাহসী, উদ্যমী আর দুর্বার এক নারীশক্তিতে। তারপর? যেসবের মোহে গোপীনাথ একসময় ঘর ছেড়েছিল, সেই রূপেই নিজেকে রূপান্তর করতে থাকে সরল মেয়ে গিরিবালা। কিন্তু সেই সাহসী, প্রতিবাদী রূপও কি আদৌ গোপীনাথ গ্রহণ করতে পেরেছিল? সাধারণ ঢঙে শাড়ি পরা ঘরকুনো মেয়েটি যখন নাট্যমঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে, তখন গোপীনাথ হয়তো মনে মনে একবার বলেছিলেন, ‘কী হারালাম, কাকে হারিয়ে ফেললাম!’
রবীন্দ্রসাহিত্য থেকে বেরিয়ে প্রসঙ্গত বলতে হচ্ছে প্রিন্সেস ডায়ানার কথাও। ১৯৯৪ সালে ডায়ানার সাবেক স্বামী প্রিন্স চার্লস টিভিতে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি ডায়ানার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং অবিশ্বাসের কথা খুলে বলেন। চার্লস বলেন, শুরুতে সম্পর্কে বিশ্বাস ও আস্থা থাকলেও পরে তিনি ক্যামেলিয়ার প্রেমে পড়েন। ১৯৯৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। যেদিন এই সাক্ষাৎকার টিভিতে প্রচার করা হয়, সেদিন বিখ্যাত রিভেঞ্জ ড্রেস পরে লন্ডনের সারপেন্টাইন গ্যালারিতে উপস্থিত হন ডায়ানা। বেশির ভাগ মানুষ হয়তো সঙ্গীর প্রতারণার কথা শুনে কুঁকড়ে যেতে পারেন। কিন্তু ডায়ানা দমে যাননি। ইভেন্টটিতে পরার জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার ক্রিস্টিনা স্ট্যাম্বোলিয়ানের রিভেঞ্জ ড্রেস। পোশাকটি ছিল ছোট ও কালো রঙের। কাঁধের বাইরের দিকে ছিল ককটেল খাপ। তাঁর বেশভূষাই যেন চার্লসকে বলে দিচ্ছিল, ‘দেখো, কী হারালে!’
পোশাক প্রতিবাদের অন্যতম মাধ্য়ম, তা যে এই সময়ে এসে মানুষ জেনেছে, ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। শুধু যে ট্রেন্ড অনুসরণ করেই মানুষ একেক ঘরানার পোশাক গায়ে জড়ান, এমনটা না-ও হতে পারে। কর্মোপযোগী পোশাক তো রয়েছেই। কিন্তু কেউ ভেতরের আমিকে বের করে আনতে, আবার কেউ অন্য়ের মনমতো হয়ে উঠতেও বেশভূষা পাল্টে নেন। যেন পুরোনো খোলস ছেড়ে নতুন আদলে ফিরে আসা। আবার পোশাকই হয়ে উঠতে পারে ‘না’ বলার মাধ্য়ম, হতে পারে নতুন করে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। পরিধেয় পোশাকটি কখনো হতে পারে ‘ফিরব না’ বলার ভাষাও। কেতকী, গিরিবালাদের বেলায় তো এমনটাই ঘটেছিল।
একদিন খেলে কিছু হয় না– এই মনোভাব সঠিক নয়। জন্মদিন, বিয়ে ও অন্যান্য দাওয়াতে গিয়েও পরিমিত খাওয়া যায়। একটু বুঝে খেলে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তবে এ ক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে কয়েকটি বিষয়।
১ ঘণ্টা আগেকুকুরের সঙ্গে সময় কাটিয়ে অনেকেই মানসিক শান্তি পান। এবার এক গবেষণায় উঠে এসেছে, কুকুরের ভিডিও দেখলেও মেলে প্রশান্তি, কমে মানসিক চাপ। গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র পাঁচ মিনিটের একটি কুকুরের ভিডিও দেখে প্রায় একই মাত্রায় মানসিক চাপ কমতে পারে, যেটা একটি কুকুরের সংস্পর্শে গেলে হয়।
১৮ ঘণ্টা আগেথাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গড়ে উঠেছে এক ভিন্ন ধরনের ক্যাফে। নাম কিড মাই ডেথ অ্যাওয়ারনেস ক্যাফে। এর মূল উদ্দেশ্য মানুষকে মৃত্যু চিন্তার মাধ্যমে জীবন উপলব্ধি করানো। ক্যাফেটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ভীরানুত রোজানাপ্রাপা একজন ধর্মতত্ত্ব গবেষক। এই ক্যাফেতে রয়েছে একটি সাদা কফিন।
১ দিন আগেপ্রথম পছন্দ দুর্গম অঞ্চল। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার পাতাল কালী তেমনই দুর্গম। এর পাশে রয়েছে পরিচিত চন্দ্রনাথ পাহাড়। আমার মতো রোমাঞ্চপ্রিয়দের জন্য সেটা আগ্রহের জায়গা নয়। তাই চন্দ্রনাথে ওঠার আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশাস্ট্যান্ডের ঠিক বাঁ পাশ দিয়ে ঢুকে যাই বন পথে। যাচ্ছি তো যাচ্ছি।
১ দিন আগে